বৃহস্পতিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত ‘একুশে পদক-২০২৫’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. ইউনূস বলেন, “আমাদের তরুণরা নতুন পৃথিবী গঠনের নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত। ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসছে। তারা প্রচলিত, আত্মবিনাশী সভ্যতার বন্ধনমুক্ত হয়ে নিজেদের স্বপ্নের নতুন সভ্যতা গড়তে চায়—একটি এমন সভ্যতা, যেখানে প্রতিটি মানুষের জন্য সমান অধিকার নিশ্চিত হবে। সকলের জন্য স্বপ্ন দেখার ও তা বাস্তবায়নের সমান সুযোগ থাকবে। পাশাপাশি, মানুষের জীবনযাত্রা এমনভাবে গড়ে তোলা হবে, যাতে পৃথিবীর অস্তিত্ব ও পরিবেশের ভারসাম্য বিঘ্নিত না হয়, এবং সকল প্রাণীর সুস্থ জীবনধারণ নিশ্চিত হয়।”
দেশের গুণীজনদের সম্মান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আজ যারা একুশে পদকে ভূষিত হয়েছেন, তাদের প্রতি দেশবাসীর পক্ষ থেকে আন্তরিক অভিনন্দন। জাতি আপনাদের অবদানের প্রতি গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। আপনারা আমাদের পথপ্রদর্শক, আপনাদের অনুপ্রেরণায় জাতি আরও এগিয়ে যাবে এবং বিশ্ব দরবারে নিজেদের উন্নত অবস্থানে প্রতিষ্ঠিত করবে।”
তিনি আরও বলেন, “৫ আগস্ট ছাত্র-শ্রমিক-জনতার ঐক্যবদ্ধ অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে নতুন বাংলাদেশ গঠনের দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। আজকের এই পদক প্রদান অনুষ্ঠানে আমি গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি দেশের স্বাধীনতার জন্য আত্মত্যাগীদের—বাহান্নর ভাষা আন্দোলন, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও ‘২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের সাহসী সৈনিকদের, যারা প্রাণ উৎসর্গ করেছেন কিংবা আহত হয়েছেন।”
একুশে ফেব্রুয়ারির তাৎপর্য তুলে ধরে তিনি বলেন, “এই দিনটি আমাদের আত্মপরিচয়ের অবিনাশী স্মারক, স্বাধিকার চেতনার প্রাণপ্রবাহ। ১৯৫২ সালের এই মাসেই পাকিস্তানি শাসকদের অন্যায় ভাষানীতি প্রত্যাখ্যান করে ছাত্রসমাজ বুকের তাজা রক্ত ঢেলে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিল। এই আন্দোলনের মধ্য দিয়েই আমাদের স্বাধিকার চেতনার এক নতুন অধ্যায় সূচিত হয়।”
তিনি আরও বলেন, “আজ এই মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে আমরা তরুণদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের প্রত্যাশা করি। দেশের ভবিষ্যৎ নির্মাণে যেসব বরেণ্য ব্যক্তি অবদান রেখে জাতির পক্ষ থেকে স্বীকৃতি পেলেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই এবং তাদের আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।”