টাঙ্গাইলে নানা আয়োজনে পালিত হচ্ছে মওলানা ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকী

প্রকাশকালঃ ১৭ নভেম্বর ২০২৪ ০১:২৭ অপরাহ্ণ ৫১৬ বার পঠিত
টাঙ্গাইলে নানা আয়োজনে পালিত হচ্ছে মওলানা ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকী

ঢাকা প্রেস,টাঙ্গাইল প্রতিনিধি:-

 

মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে টাঙ্গাইলে নানা কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। দিবসটি ঘিরে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ভাসানী ফাউন্ডেশন এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি আয়োজন করেছে।
 

রোববার (১৭ নভেম্বর) সকালে মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলাউদ্দিন ভাসানীর মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর ভাসানীর পরিবারের পক্ষ থেকে এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও দোয়া করা হয়। দিনব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে ছিল কোরআন তেলাওয়াত, গরিব-দুঃখীদের মধ্যে খাবার বিতরণ এবং আলোকচিত্র প্রদর্শনী।


মওলানা ভাসানীর জীবনী ও অবদান

মওলানা ভাসানী, সাম্রাজ্যবাদ ও সামন্তবাদবিরোধী আন্দোলনের এক অবিসংবাদিত নেতা, ১৮৮০ সালের ১২ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জের ধানগড় গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ছিল শরাফত আলী খান।
 

শিক্ষা ও ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন:

১৯০৭-১৯০৯ সাল পর্যন্ত ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ মাদরাসায় পড়াশোনা করেন। এ সময় শায়খুল হিন্দ মাহমুদুল হাসানসহ অন্যান্য প্রগতিশীল ইসলামী চিন্তাবিদের প্রভাবে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে অনুপ্রাণিত হন।
 

কর্মজীবনের সূচনা:

১৯০৯ সালে টাঙ্গাইলের কাগমারীতে একটি স্কুলে যোগদান করেন। ১৯১৪ সালে নেত্রকোণা ও শেরপুরে খ্রিস্টান মিশনারিদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেন।
 

রাজনৈতিক পথচলা:

১৯১৭ সালে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের নেতৃত্বে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন।

১৯১৯ সালে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসে যোগদান এবং ১৯২০ সালে গ্রেপ্তার হন।

খিলাফত আন্দোলন ও অসহযোগ আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।

১৯৩০ সালে মুসলিম লীগে যোগ দিয়ে ১৯৩৭ সালে আসাম বিধানসভায় বিধায়ক নির্বাচিত হন।
 

নেতৃত্ব ও আন্দোলন:

১৯৪৯ সালে আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা করে এর প্রথম সভাপতি হন। পরবর্তীতে ১৯৫৩ সালে দলের নাম পরিবর্তন করে আওয়ামী লীগ করা হয়।

১৯৫৭ সালে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) গঠন করেন।

১৯৬৯ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন, যা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ অন্যান্য রাজবন্দীদের মুক্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

 

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর, ১৯৭৬ সালের ১৭ নভেম্বর ঢাকায় ৯৬ বছর বয়সে তার মৃত্যু হয়। তাকে টাঙ্গাইলের সন্তোষে সমাহিত করা হয়।
 

মওলানা ভাসানী আজও বাংলাদেশের মানুষের জন্য অনুপ্রেরণার এক অবিস্মরণীয় ব্যক্তিত্ব। তার নেতৃত্ব, সংগ্রাম এবং ত্যাগ আমাদের স্বাধীনতা ও সাম্য অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।