একজন শফিকুর রহমান চৌধুরী: ১৮ আগস্ট ১৯৫৭ থেকে বর্তমান।

প্রকাশকালঃ ০১ জুলাই ২০২৪ ০৩:৫২ অপরাহ্ণ ৬৯৫ বার পঠিত
একজন শফিকুর রহমান চৌধুরী: ১৮ আগস্ট ১৯৫৭ থেকে বর্তমান।

ঢাকা প্রেস 
নিজস্ব প্রতিবেদক


শফিকুর রহমান চৌধুরী এমপি
মাননীয় প্রতিমন্ত্রী, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সংসদ সদস্য, ২৩০, সিলেট-২ (বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগর)

 



জনাব শফিকুর রহমান চৌধুরী এমপি ১৮ আগস্ট ১৯৫৭ সালে সিলেট জেলার বিশ্বনাথ উপজেলাধীন দশঘর ইউনিয়নের চান্দভরাং গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মরহুম আব্দুল মতলিব চৌধুরী এবং মাতা মরহুমা লতিফুন নেছা চৌধুরী। তিনি ১৯৭২ সালে চান্দভরাং উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, ১৯৭৫ সালে সিলেট এমসি কলেজ থেকে এইচএসসি ও ১৯৭৯ সালে বিএ ডিগ্রী লাভ করেন।

শফিকুর রহমান চৌধুরী এমপি গত ১১ জানুয়ারী ২০২৪ খ্রি: তারিখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ৫ম মন্ত্রীসভায় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন। তিনি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৩০, সিলেট-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ইতোপূর্বে তিনি ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। নবম জাতীয় সংসদে তিনি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য এবং প্রাইভেটাইজেশন কমিশন ও পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডস অব ইউকে-বাংলাদেশ এর সদস্য হিসেবে বিভিন্ন সময়ে দায়িত্ব পালন করেন। রাজনীতি ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সদস্য হিসেবে তিনি সমাজসেবায় সম্পৃক্ত রয়েছেন। এছাড়া নিজ এলাকায় প্রতিষ্ঠা করেছেন বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

 



জনাব শফিকুর রহমান চৌধুরী এমপি একজন সৎ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। ব্যক্তি জীবনের শুরু থেকে দরিদ্র, অসহায় মানুষের জন্য তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। রাজনৈতিক জীবনে ও শুরু থেকে অদ্যবধি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ও নীতিতে অটল থেকে রাজনীতি করে যাচ্ছেন। সিলেট-২ আসনের সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী এমপি দীর্ঘদিন রাজপথের আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। তিনি স্কুলজীবনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজনীতিতে পদার্পণ করেন। ছাত্রজীবনে তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এমসি কলেজ শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, সিলেট জেলা ছাত্রলীগের কার্যকরী পরিষদের সদস্য এবং ছাত্রলীগ জাতীয় পরিষদের সদস্যসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৯ সালের গণ অভ্যুত্থান, ১৯৭০ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচনে ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে সক্রিয় ছিলেন। ১৯৭০ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সিলেট সফরে এলে তাঁর হাত ধরে শফিকুর রহমান চৌধুরী আনুষ্ঠানিক রাজনীতির অঙ্গনে প্রবেশ করেন। তাঁর পিতা মরহুম আব্দুল মতলিব চৌধুরী বঙ্গবন্ধুর অত্যন্ত ঘনিষ্টজন ছিলেন। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশ ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি।

জনাব শফিকুর রহমান চৌধুরী ১৯৭৮ সালে যুক্তরাজ্যে যাওয়ার পর আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত হন এবং যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক এবং পরবর্তীতে যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। যুক্তরাজ্যে ৭১’এর ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ-সহ নানা সংগঠন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও তিনি ভূমিকা রাখেন। যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় জনমত গঠন ও প্রবাসীদের স্বার্থ সংরক্ষণে নিরলস কাজ করেন।

 



পাশাপাশি প্রবাসীদের উন্নয়ন ও দাবি আদায়ের বিভিন্ন আন্দোলনে সোচ্চার ও অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। তিনি যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশ ইয়ুথ এসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা, বাংলাদেশ ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এবং সভাপতি হিসেবে বিভিন্ন মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেন। লন্ডনে বৈশাখী মেলা, বাংলা টাউন, আলতাব আলী পার্কে শহীদ মিনার নির্মাণেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। বৃটেনের বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলন, দেশে প্রবাসীদের হয়রানি নির্যাতনের বিরুদ্ধে, প্রবাসীদের দ্বৈত নাগরিকত্ব ও ‘নো ভিসা রিকোয়ার্ড’ সার্টিফিকেট নিঃখরচা করা, বিমানবন্দরে প্রবাসীদের হয়রানি বন্ধ, প্রবাসী সুরত মিয়া হত্যার বিচার, প্রবাসে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন, সিলেট বিভাগ আন্দোলন, প্রবাসীদের ভোটাধিকার ইত্যাদি ইস্যুতে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্বে দেন।

শফিকুর রহমান চৌধুরীকে কারাভোগ করতে হয়েছে বারবার। ১৯৭৫ সালে স্বপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর তীব্র প্রতিবাদ আন্দোলনে নেতৃত্ব প্রদান করায় তাকে বিভিন্ন মামলায় হয়রানি-নির্যাতনের শিকার হতে হয়। ১৯৮০ সালে গণতান্ত্রিক সংগ্রামে অংশগ্রহণের কারণে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ২০০৬ সালে সেনা সমর্থিত অগণতান্ত্রিক ১/১১ সরকারের বিভিন্ন চাপ উপেক্ষা করে দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি অটল ছিলেন শফিকুর রহমান চৌধুরী। যুক্তরাজ্যে শফিকুর রহমান চৌধুরী’র পারিবারিক ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান ‘দিলশাদ রেস্টুরেন্টে’ ২০০৭ সালের মে মাসে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি দেশরত্ন শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মেলন করে ফখরুদ্দীন-মঈন উদ্দিন সরকারের অন্যায় অবিচারের চিত্র বিশ্ববাসীর নিকট তুলে ধরেন। ২০০৭ সালে দেশরত্ন শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী হিসেবে দেশে ফেরত এলে তিনি-সহ সিলেটের ৪০ জন প্রবাসী ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীকে তার সিলেট-এর বাড়ী থেকে গ্রেফতার করা হয় এবং পরবর্তীতে তাকে ৪ মাস ২২ দিন কারাগারে নির্মম নির্যাতন ভোগ করতে হয়। দেশরত্ন শেখ হাসিনার পরীক্ষিত সৈনিক হিসেবে ২০১১ সালের ২৩ নভেম্বর তিনি সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব লাভ করেন। পরবর্তীতে ২০১৯ সালে সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠিত হলে, পুর্ণাঙ্গ কমিটিতে সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং পরবর্তীতে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

জনাব শফিকুর রহমান চৌধুরী, এমপি’র সহধর্মিনী তাহমিনা আক্তার চৌধুরী একজন গৃহিনীর পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়ন কাজে সম্পৃক্ত রয়েছেন। তার তিন কন্যা সন্তান এর মধ্যে তানজীন সুলতানা চৌধুরী সেতু ও তাসনিম সুলতানা চৌধুরী সূচি যুক্তরাজ্যে এবং আইরিন সুলতানা চৌধুরী সুধী সংযুক্ত আরব আমিরাতে পরিবারসহ স্থায়ীভাবে বসবাস করেন।