ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের কাজের প্রতি আত্মবিশ্বাস আর চেষ্টাটাই চিত্রনায়ক সিয়ামকে আজ এ পর্যন্ত নিয়ে এসেছে। তাই কোনো ঘরানায় বন্দি থাকেননি তিনি। মডেলিং আর টিভি নাটকে যখন তুমুল ব্যস্ততায় সিয়ামের দিনরাত তখন সিনেমার জন্য নিজের মেধা-শ্রম ব্যয় করবেন বলেই এই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে আত্মনিয়োগ করার জন্য মনস্থির করলেন। ঐ সময়ের জন্য সিয়ামের এই সিদ্ধান্ত কিন্তু বেশ ঝুঁকিপূর্ণ ছিল।
কারণ মডেলিং ও নাটকে সিয়াম তখন প্রমাণিত ও ভীষণ জনপ্রিয়। সিনেমাকে ভালোবেসেই তার এই ফিল্ম অবগাহন। সিয়াম যখন ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে যাত্রা শুরু করেন তখন কিন্তু নব্বই দশকের ইন্ডাস্ট্রির মতো এত সুবিধা ছিল না। ছিল না অগণিত ছবির শুভমুক্তি। হাজারের ওপরে সিনেমা হল! যেখানে একটি বা দুটি মুভি ক্লিক করলেই নিজেকে টিকিয়ে রাখা যেত। তবুও অনেকেই বলার চেষ্টা করেন, জাজ মাল্টিমিডিয়ার সাপোর্ট সিয়ামের জন্য বড় এক সৌভাগ্যের দরজা খুলে দিয়েছে।
সিয়াম একাধিক ইন্টারভিউতে বলেছেন, ‘আমাকে আসলে প্রতিটি জায়গাতেই নিজেকে প্রমাণ করতে হয়েছে। জাজ মাল্টিমিডিয়া বড় প্লাটফর্ম এটা সত্য। তবে আমি, রায়হান রাফি, পূজা চেরী সকলেই আমাদের প্রথম ছবিতে একেবারেই নতুন ছিলাম। সেই জায়গায় আমি বলবো, পরিশ্রমের কোনো বিকল্প নেই। নিজের কাজের প্রতি সৎ ছিলাম বলেই দর্শকরাও ফেরায়নি আমাকে।’
এবারের ঈদে দীপংকর দীপনের ‘অন্তর্জাল’ ছবিতে আসছেন সিয়াম আহমেদ। পোড়ামন থেকে অন্তর্জাল খুব অল্প সময়ের ক্যারিয়ারে সিয়ামের ঘরে এখন দু-দুটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। চলচ্চিত্র বোদ্ধারা অনেকেই বলেন সিয়ামের ‘মৃধা বনাম মৃধা’ ছবিটি তার ক্যারিয়ারের সেরা অভিনয়। যে ছবির মাধ্যমে প্রথমবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান তিনি।
চলচ্চিত্রের বর্তমান চ্যালেঞ্জ মূলত সিনেমা হলে দর্শক ফেরানোর ক্রেজ তৈরি। বিনোদনের নানা খোরাকের সময় আজ সিয়ামদের জন্য তাই এটি কঠিন পরীক্ষা। কারণ এক সময়ের মান্না, জসিম বা সালমান শাহদের আজকের দুনিয়ার মতো এত এত বিনোদন মাধ্যমকে ফেস করতে হয়নি। এ প্রসঙ্গে সিয়াম বলেন, ‘আমি খুব আশাবাদী একজন মানুষ। আমাদের দেশের মানুষের মতো আন্তরিক ও কৌতুহলি কম রয়েছেন। তাদেরকে একটু ভালো গল্প আর প্রডাকশন দিলে তারাও দারুণ জবাব দেন। এটা অতীতেও দেখে আসছি। তাই সময়কে বা দর্শককে দোষ দিয়ে লাভ নেই। বরং আমাদের নিজেদেরকে আরো সুগঠিত হতে হবে। এই ইন্ডাস্ট্রিটা আমাদের সকলের। তাই সবাইকে এক হয়েই মোকাবেলা করতে হবে।’