ঘর সাঁজাতে বনসাই

প্রকাশকালঃ ০৩ জুন ২০২৩ ০৪:০৩ অপরাহ্ণ ৮০ বার পঠিত
ঘর সাঁজাতে বনসাই

নসাইয়ের পারিভাষিক অর্থ জীবন্ত ভাস্কর্য। বনসাইয়ের ইতিহাস বহু পুরনো। ধারণা করা হয়, প্রায় দুই হাজার বছর পূর্বে চীনের যাত্রা শুরু হয় এবং পরবর্তীকালে অন্যান্য অঞ্চল জাপান, কোরিয়া ও ভিয়েতনামে বিস্তৃতি লাভ করে। 

বহু বছর আগে চীন দেশে এই শিল্পের সূচনা হলেও পরবর্তী সময়ে এটি জাপান, কোরিয়া, ভিয়েতনামসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিস্তৃত হয়। আজকাল শৌখিন সংগ্রহের পাশাপাশি ঘর সাজাতে এবং অন্যান্য ইন্টেরিয়র ডিজাইনের কাজে বনসাই ব্যবহার করা হয়। মূল গাছের সব বৈশিষ্ট্য অক্ষুণ্ণ রেখে, অগভীর ছোট পাত্রে বৃক্ষজাতীয় গাছের ক্ষুদ্র সংস্করণ গড়ে তোলার কাজকেই বনসাইশিল্প বলা হয়। ক্ষুদ্র এই সংস্করণটিই বনসাই হিসেবে পরিচিত। প্রাণের স্পন্দন আর শিল্পকর্মের নান্দনিকতা এক সুতোয় প্রকাশ পায় বলেই বনসাই জীবন্ত শিল্পকর্ম হিসেবে পরিচিত। 

নগরে ইটের স্থাপনার মধ্যে এক টুকরো সবুজের উপস্থিতি এবং স্বল্প পরিসরে সহজ যত্নে বনসাই সংগ্রহ করা যায় বলেই বৃক্ষ-প্রিয় মানুষের কাছে বনসাইয়ের কদর যেন একটু বেশিই। নিজস্ব পছন্দ করা গাছের পাশাপাশি দেশ থেকে বিলুপ্তপ্রায় অনেক গাছ সংগ্রহ করে রাখা যায় বনসাইয়ের মাধ্যমে। দেশীয় সব বৃক্ষের পাশাপাশি বাংলাদেশের তাপমাত্রায় সহনশীল যেকোনো বিদেশি গাছের বনসাই করা যায়। তবে সাধারণত শেওড়া, হিজল, তমাল, তেঁতুল, বিভিন্ন প্রজাতির বট, পাকুর, ঘূর্ণিবিচি, কামিনীসহ জেড, সাইকাস ও অন্যান্য বৃক্ষ থেকে বনসাই করা হয়ে থাকে।


পরিচর্যা করবেন যেভাবে
একটু আন্তরিকতাপূর্ণ দেখভাল আপনার বনসাইটিকে আরও সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। এ ক্ষেত্রে খুব বেশি ঝামেলার দরকার হয় না। বনসাইয়ের পরিচর্যার ব্যাপারে বাংলাদেশ বনসাই সোসাইটি থেকে জানা গেল—
*গাছকে নিয়মিত খাবার দিন। যেমন—কালো মাটি, বালু বা ইটের চূর্ণ, সরিষা বা নীলের খোসা ইত্যাদি।
*বনসাই অতিরিক্ত পানিবদ্ধতা এবং রোদ—কোনোটাই সহ্য করতে পারে না। তাই এ বিষয়ে খেয়াল রাখুন।
*বনসাই ধুলো-ময়লামুক্ত রাখতে পানি দিয়ে পাতা ও ডাল মুছে দিন।
*টবের মাটিতে পোকামাকড় কিংবা ছত্রাকের প্রাদুর্ভাব হলে সঠিক মাত্রায় ওষুধ প্রয়োগ করুন।
*এমন স্থানে রাখুন, যেখানে আলো-বাতাস চলাচল করে কিন্তু লোকজনের যাওয়া-আসা কম।
*নির্ধারিত আকৃতি ঠিক রাখতে নির্ধারিত ডালপালা বাদে ছাঁটাই করুন।
*বেশি ব্যস্ত থাকলে সঠিক মাত্রায় তরল সার প্রয়োগ করতে পারেন।
*অবশ্যই প্রতি এক বছর অন্তর টবের মাটি পরিবর্তন করুন।
*গাছের ছাঁটাইসহ অন্যান্য কাজে বনসাই পরিচর্যার জন্য নির্ধারিত যন্ত্রপাতি ব্যবহার করুন।