অবশেষে সাতপাকে বাঁধা পড়লেন অনন্ত-রাধিকা

প্রকাশকালঃ ১৩ জুলাই ২০২৪ ১১:৪০ পূর্বাহ্ণ ৪৪১ বার পঠিত
অবশেষে সাতপাকে বাঁধা পড়লেন অনন্ত-রাধিকা

আভিজাত্যের নতুন ইতিহাস গড়ে অবশেষে সাতপাকে বাঁধা পড়লেন অনন্ত-রাধিকা। পরিবার এবং বন্ধুবান্ধবের উপস্থিতিতে শুক্রবার (১২ জুলাই) মুম্বাইয়ে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলেন মুকেশ আম্বানির ছোট ছেলে অনন্ত আম্বানি এবং রাধিকা মার্চেন্ট। রোশনাইয়ে ঝলমল বিয়ের আসরে হাজির গোটা বিশ্বের ‘হেভিওয়েট’ ব্যক্তিত্বরা। উপচে পড়েছে গোটা বলিউড-হলিউড।


তিন দিনব্যাপী এই বিবাহ উৎসবের প্রথম দিন বিয়ে। ১৩ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে শুভ আশীর্বাদ (আশীর্বাদের অনুষ্ঠান), ১৪ জুলাই মঙ্গল উৎসব বা বিয়ের রিসেপশন। ২০২২ সালের ৩০ ডিসেম্বর রাজস্থানের নাথদ্বারার শ্রীনাথজি মন্দিরে অনুষ্ঠিত হয়েছিল অনন্ত-রাধিকার রোকা অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই আম্বানি পরিবারের হবু পুত্রবধূ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিলেন রাধিকা।


এই রোকার পরেই একটি জমকালো পার্টির আয়োজন হয়েছিল অ্যান্টিলিয়াতে। যোগ দিয়েছেন বলিউড-হলিউডের বহু তারকা। বিয়েতে রাধিকা পরেছেন ডিজাইনার আবু জানি সন্দীপ খোলসার নকশা করা পোশাক। আইভরি রঙের এই লেহেঙ্গা তৈরি হয়েছে চমৎকার কাট-ওয়ার্ক জারদৌসি কাজে।


রাধিকা বিয়েতে যত গয়না পরেছেন সবই তার নানী, মা ও বোনের। হালকা সাজের সাথে লাল লিপস্টিকে তাকে দেখাচ্ছিল মোহনীয়। অন্যদিকে কমলা রঙের শেরওয়ানি পরেছেন অনন্ত। বুকের বাঁ দিকে একটি হাতির ব্রোচ পরেছেন। মাথায় লাল পাগড়ি। বিয়ের থিমের সঙ্গে মিলিয়ে গোলাপি পোশাকে সেজেছে আম্বানি পরিবার।


বিয়ের মন্ডপে যাওয়ার আগে দাদা ধীরুভাই আম্বানির আশীর্বাদ নেন অনন্ত। রীতি-রেওয়াজ মেনে মা নীতা আম্বানি ছেলের ‘শেহেরাবন্দি’ অনুষ্ঠান পালন করেন। বারাণসীকে উৎসর্গ করে অনন্ত-রাধিকার বিয়ের থিম ছিল ‘অ্যান অড টু বারাণসী’। অতিথি আপ্যায়নেও বিশেষ মেন্যু। মা নীতা আম্বানির প্রিয় বারাণসী স্ট্রিট ফুড প্রাধান্য পেয়েছে এলাহি নৈশভোজের তালিকায়। বারাণসী স্পেশাল চাট, মিষ্টি, লাস্যি, চা, খারি, পান এবং মুখসুদ্ধির মতো রকমারি পদ ছিল।

 

২০২৩ সালের ১৯ জানুয়ারি অ্যান্টিলিয়াতে ঘনিষ্ঠদের উপস্থিতিতে আংটি বদল করেন অনন্ত এবং রাধিকা। এরপর চলতি বছর মার্চে জামনগরে অনন্ত এবং রাধিকার জন্য তিন দিনব্যাপী একটি জমকালো প্রি-ওয়েডিং অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল আম্বানি পরিবার। হাজির ছিলেন ভিভিআইপিরা। বিশেষ পারফরম্যান্স ছিল রিহানা এবং সির্ক দি সোলেইয়ের। এরপর জুনের শেষ দিকে ইতালিতে বিলাসবহুল এক যাত্রায় আয়োজিত হয় দ্বিতীয় প্রি-ওয়েডিং। যেখানে হাজির ছিলেন শাকিরার মতো পপতারকা।

 

গত ৮ জুলাই সংগীব সন্ধ্যার আয়োজনে মঞ্চ মাতিয়ে গেছেন জাস্টিন বিবার। অনন্ত-রাধিকার প্রি-ওয়েডিং উদযাপনের আরেকটি বড় অংশ ছিল গণবিবাহর আয়োজন। সমাজের জন্য কিছু করার লক্ষ্যে শিল্পপতি মুকেশ আম্বানি এবং তাঁর স্ত্রী নীতা আম্বানি নভি মুম্বাইয়ে একটি গণবিবাহের আয়োজন করেছিলেন। সমাজের প্রায় সমস্ত সুবিধা থেকে বঞ্চিত পরিবারগুলি থেকে আসা ৫০ জোড়া ছেলে-মেয়ের বিয়ে হয়েছে ওই অনুষ্ঠানে।

 

নবদম্পতিদের জন্য উপহারের তালিকায় ছিল সোনার গয়না যেমন নাকছাবি, বিয়ের আংটি, মঙ্গলসূত্র। সেই সঙ্গে ছিল রুপোর পায়ের আংটি এবং নূপুরও। এই গণবিবাহের সাক্ষী থাকতে উপস্থিত হয়েছিলেন প্রায় ৮০০ মানুষ। নতুন কনেদের প্রত্যেককে স্ত্রীধন হিসেবে দেওয়া হয়েছে ১.০১ লক্ষ টাকাও। এখানেই শেষ নয়, নবদম্পতিদের নতুন সংসারের জন্য মুদিখানার সামগ্রী এবং ঘরকন্নার সামগ্রীও উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছিল। উপহারের তালিকায় ছিল অ্যাপলায়েন্সও।

 

এই বিবাহের পরে অতিথিদের জন্য এলাহি খানাপিনার আয়োজন করা হয়েছিল। সেই সঙ্গে ছিল পশ্চিম ভারতের আদিবাসী ওয়ারলি উপজাতির ঐতিহ্যবাহী তরপা নাচের আয়োজনও। এছাড়া গত ৪০ দিন ধরে চলছে ভান্ডারা সেবা। যেখানে প্রতিদিন ৯ হাজার মানুষ বিনামুল্যে খাবার পাচ্ছেন। ১৫ জুলাই পর্যন্ত থাকবে এই সেবা।