ঢাকা প্রেস নিউজ
হজযাত্রাকে আরও সহজ, সুন্দর এবং নিরাপদ করতে 'হজ ম্যানেজমেন্ট সেন্টার' চালু করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। তাঁর এ উদ্যোগের মাধ্যমে হাজীদের ভোগান্তি কমবে। মঙ্গলবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় হজ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির সভায় তিনি এ নির্দেশনা প্রদান করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, "পবিত্র হজ পালন করার জন্য মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে একটি সুযোগ দিয়েছেন, আমরা যেন এ সুযোগটি সঠিকভাবে কাজে লাগাই। আমাদের লক্ষ্য হতে হবে, যেন একজন হজযাত্রীও কোনো ধরনের ভোগান্তিতে না পড়েন।"
বাংলাদেশে বর্তমানে লাইসেন্সপ্রাপ্ত হজ এজেন্সির সংখ্যা ১২৭৫টি, এর মধ্যে ৯৪১টি এজেন্সি হজ কার্যক্রমের জন্য যোগ্য, ৭৫৩টি হজযাত্রী নিবন্ধনকারী এবং ৭০টি লিড এজেন্সি রয়েছে। এই এজেন্সিগুলোর দায়িত্ব স্পষ্টভাবে লিপিবদ্ধ করে বুকলেট আকারে এবং অনলাইনে প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি আরও বলেন, "সরকারের দায়িত্ব হলো এজেন্সিগুলোর দায়িত্ব যথাযথভাবে পালিত হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করা। দায়িত্ব পালন না করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুরো হজ প্রক্রিয়া সহজ এবং স্পষ্ট হতে হবে, সরকারের দায়িত্ব কী এবং এজেন্সির দায়িত্ব কী তা পরিষ্কারভাবে লেখা থাকতে হবে।"
হজযাত্রীদের সমস্যা যেমন হারিয়ে যাওয়া, অসুস্থ হয়ে পড়া, লাগেজ হারানো বা অন্য কোনো ধরনের সমস্যার বিষয়ে একটি সুস্পষ্ট গাইডলাইন থাকা উচিত। এই গাইডলাইন প্রত্যেক হজযাত্রীর কাছে প্রদান করতে হবে। এছাড়া নারী ও শিশুদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়েও নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশে একটি 'হজ ম্যানেজমেন্ট সেন্টার' স্থাপন করা হবে যাতে সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ের মাধ্যমে সেবা নিশ্চিত করা যায়। একযোগে একটি ওয়েবসাইট চালু করা হবে যেখানে হজযাত্রীরা তাদের অভিযোগ জানাতে পারবেন এবং হারানো যাত্রীদের লোকেশন ট্র্যাক করা যাবে।
এছাড়া, কল সেন্টারে আসা অভিযোগগুলো মনিটরিং করার এবং পরবর্তীতে এ ধরনের অভিযোগ যাতে না আসে সে বিষয়ে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
হজযাত্রীদের অভিজ্ঞতা এবং এজেন্সির প্রশিক্ষণ পর্যবেক্ষণ করে তাদের ক্যাটাগরি নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। 'এ', 'বি', 'সি' এবং 'ডি' ক্যাটাগরি অনুযায়ী এজেন্সিগুলোর কার্যক্রম মূল্যায়ন করা হবে এবং যদি কোনো এজেন্সি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করে, তবে তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হবে।
হজযাত্রীদের জন্য প্রযোজ্য বিষয়ভিত্তিক ভিডিও তৈরি করারও নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা, যাতে যাত্রীরা যেকোনো পরিস্থিতিতে করণীয় সম্পর্কে অবগত থাকতে পারেন। আগামী বছর থেকে হজ ক্রেডিট কার্ড চালু এবং লাগেজ ব্যবস্থাপনার জন্য ট্যাগ কপি সংরক্ষণ করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
এ বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫,২০০ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮১,৯০০ জন হজের জন্য নিবন্ধন করেছেন। সরকার এ বছর সরকারি খরচে কাউকে হজে পাঠানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
সভায় ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেনসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।