প্রকাশকালঃ
০৩ এপ্রিল ২০২৩ ০১:০৩ অপরাহ্ণ ৩৫৫ বার পঠিত
ভারতে বেকারত্বের হার আবার বেড়েছে। মার্চে দেশটিতে বেকারত্ব আবার ৭ দশমিক ৮ শতাংশে উঠেছে, যা তিন মাসের মধ্যে সব থেকে বেশি। গ্রামেও বেকারত্বের হার তিন মাসে সর্বোচ্চ। আর শহরে বেকারত্ব আবার সাড়ে ৮ শতাংশ পেরিয়েছে।
গতকাল শনিবার ভারতের সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি (সিএমআইই) এ তথ্য প্রকাশ করেছে। খবর ইকোনমিকস টাইমসের।
সিএমআইইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহেশ ব্যাস বলেন, ভারতের শ্রমবাজারের অবস্থা গত মাসে খারাপ হয়েছে। আবার চাকরি খোঁজা মানুষের সংখ্যা কিছুটা হলেও কমেছে। ফেব্রুয়ারি মাসে কাজের বাজারে অংশগ্রহণ ছিল ৩৯ দশমিক ৯ শতাংশ; মার্চে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৩৯ দশমিক ৮ শতাংশ। ফলে কর্মসংস্থানও ৩৬ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে কমে ৩৬ দশমিক ৭ শতাংশে নেমেছে।
কর্মরত মানুষের সংখ্যা ৪০ কোটি ৯০ লাখ থেকে ৪০ কোটি ৭৬ লাখে নেমেছে।
এদিকে রাজ্যগুলোর মধ্যে হরিয়ানায় বেকারত্ব সবচেয়ে বেশি—২৬ দশমিক ৮ শতাংশ। তারপরে রাজস্থানে ২৬ দশমিক ৪ শতাংশ, জম্মু ও কাশ্মীরে ২৩ দশমিক ১ শতাংশ, সিকিমে ২০ দশমিক ৭ শতাংশ, বিহারে ১৭ দশমিক ৬ শতাংশ ও ঝাড়খন্ডে ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ।
উত্তরাখন্ড ও ছত্তিশগড়ে বেকারত্ব ছিল সর্বনিম্ন—শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ। তারপর পদুচেরিতে ১ দশমিক ৫ শতাংশ, গুজরাটে ১ দশমিক ৮ শতাংশ, কর্ণাটকে ২ দশমিক ৩ শতাংশ আর মেঘালয় ও ওডিশায় ২ দশমিক ৬ শতাংশ।
মানবসম্পদ সেবাদানকারী সংস্থা সিআইইএল এইচআর সার্ভিসেসের প্রধান নির্বাহী আদিত্য মিশ্র ইকোনমিক টাইমসকে বলেছেন, অক্টোবর-জানুয়ারির পরে খুচরা, সরবরাহব্যবস্থা, লজিস্টিক, আর্থিক পরিষেবা ও ই-কমার্স কর্মসংস্থান কমেছে।
কর্মসংস্থান হ্রাসের কারণ হিসেবে আদিত্য মিশ্র বলেন, ‘আমাদের আইটি, প্রযুক্তি ও স্টার্টআপ খাতে পরিবর্তন এসেছে। ফলে নতুন নিয়োগের গতি কমে গেছে। তৃতীয়ত, মার্চ মাস আর্থিক বছরের শেষ মাস এবং এটি ছিল পরীক্ষার মাস। তাই অবসর ভ্রমণ, পর্যটন, বিনোদন ও আতিথেয়তা খাতে খুব একটা চাহিদা ছিল না।’
টিমলিজ় সার্ভিসেসের সহপ্রতিষ্ঠাতা ঋতুপর্ণা চক্রবর্তীর বক্তব্য, কর্মসংস্থানের এ চিত্র বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগের প্রতিফলন। কোম্পানিগুলো সতর্ক হয়ে পা ফেলছে। তাই নিয়োগের গতি শ্লথ।
ভারতের সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের মতে, বিশ্ববাজারের সংকট না কাটা পর্যন্ত এই টানাপোড়েন চলবে। সেই সঙ্গে ভারতে মূল্যস্ফীতির হার এখনো বেশি।
কিন্তু মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায় যেভাবে লাগাতার নীতি সুদহার বৃদ্ধি করা হচ্ছে, তাতে শিল্প সংস্থাগুলোর ঋণের চাহিদা কমছে। ফলে অনেক কোম্পানি নিয়োগ স্থগিত রেখেছে। যদিও বিশেষজ্ঞদের অনেকে বলছেন, অর্থনীতি ঘুরিয়ে দাঁড় করাতে হলে বেকারত্বের হার কমানোর উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। কারণ, মানুষের আয় বাড়লে তবেই ব্যয় বাড়বে, ফিরবে চাহিদা।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতি মোকাবিলা করে কীভাবে চাহিদার গতি ফেরানো যায়, তা নিশ্চিত করাই নীতিপ্রণেতাদের মূল চ্যালেঞ্জ।