মন্ত্রী-এমপির স্বজনকে প্রার্থী না হতে কড়া বার্তা দেওয়া হলেও তারা তা মানছেন না

প্রকাশকালঃ ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ০১:২৮ অপরাহ্ণ ১৭৩ বার পঠিত
মন্ত্রী-এমপির স্বজনকে প্রার্থী না হতে কড়া বার্তা দেওয়া হলেও তারা তা মানছেন না

ঢাক প্রেস; উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে ১৬০ উপজেলায় ২ হাজার ৫৫ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তবে দলীয়ভাবে এ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিলেও প্রথম ধাপের মতো দ্বিতীয় ধাপেও অনেক স্থানে বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায় থেকে মন্ত্রী-এমপির স্বজনকে প্রার্থী না হতে কড়া বার্তা দেওয়া হলেও তারা তা মানছেন না। গতকাল রোববার ছিল দ্বিতীয় পর্বে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। আর ভোট হবে আগামী ২১ মে। গতকাল বেশ কিছু উপজেলায় আওয়ামী লীগ এমপির স্বজন প্রার্থী হয়েছেন বলে খবর মিলেছে। উপজেলা ভোটে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধিত দলগুলোর তরফ থেকে দলীয় প্রতীক বরাদ্দের নিয়ম থাকলেও আওয়ামী লীগ থেকে কাউকেই মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে না।

অন্যদিকে বিএনপি-জামায়াত এই নির্বাচন বর্জন এবং দলীয় নেতারা প্রার্থী হলে বহিষ্কারের হুমকি দিয়েছে। তবু দ্বিতীয় ধাপে অনেক বিএনপি নেতা প্রার্থী হয়েছেন। ১৬০ উপজেলার মধ্যে ২১টিতে তাদের প্রার্থী রয়েছে। যদিও বেশির ভাগই উপজেলা শাখার সাবেক সভাপতি। প্রথম ধাপে ১৫০ উপজেলায় বিএনপির ৩৫ ও জামায়াতের ২৫ প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। এর মধ্যে জামায়াত নেতারা কেন্দ্রের নির্দেশ মেনে মনোনয়ন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেও বিএনপি নেতাদের অনেকেই নির্বাচনী লড়াইয়ে থাকছেন। আজ সোমবার প্রথম ধাপের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিএনপির কুমিল্লা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া বলেন, আমরা এ সরকার ও ইসির অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ নেব না– এটি দলীয় সিদ্ধান্ত। এ নির্দেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর মধ্যে গতকাল ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের অভিযোগে পটুয়াখালী সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনির রহমান ও কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলা

বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর তাজ জনিকে দলের প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পর্যায় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এদিকে গতকাল দ্বিতীয় ধাপে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় শেষ হওয়ার পর নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানান, ১৬০ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৭৩০ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭৬৩ জন ও মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫৬২ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। উপজেলা নির্বাচন প্রভাবমুক্ত রাখতে দলীয় প্রতীক বরাদ্দ না দেওয়ার পাশাপাশি মন্ত্রী ও এমপির স্বজনকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিয়েছিল আওয়ামী লীগ।

গতকাল দলীয় সভাপতির ধানমন্ডির কার্যালয়ে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ ব্যাপারে আবারও কড়া বার্তা দিয়েছেন। এ জন্য দলের সাংগঠনিক সম্পাদকদের সারাদেশ থেকে তথ্য নিয়ে তালিকা তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। গতকাল রোববার তালিকা তৈরির কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। আগামী ৮ মে প্রথম ধাপে দেশের ১৫০ উপজেলায় নির্বাচন হবে। মাঠ পর্যায় থেকে ইসিতে আসা তথ্য অনুযায়ী, এ ধাপে কুমিল্লা আদর্শ সদর ও চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায় চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে একজন করে মনোনয়ন দাখিল করেছেন। অর্থাৎ একক প্রার্থী থাকায় এ দুই উপজেলায় নির্বাচনের প্রয়োজন পড়ছে না। এ ছাড়া চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, মৌলভীবাজার সদরে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও রাঙামাটির রাজস্থলীতে ভাইস চেয়ারম্যান পদে একজন করে প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। অর্থাৎ তিন পদে মোট ১১ জন একক প্রার্থী রয়েছেন। বাছাইয়ে মনোনয়ন বৈধ হলে তারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হবেন।

প্রথম ধাপে ১২ জন একক প্রার্থী ছিলেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গতকাল জানিয়েছেন, মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের নিকটাত্মীয়দের সরে যেতেই হবে। যারা প্রার্থী হতে চান (পরবর্তী পর্বে), তাদের নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে। প্রথম পর্বে যারা প্রার্থী হয়েছেন, তাদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। নির্দেশনা দেওয়া হলেও অনেকে এখনও নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াননি– সে বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রত্যাহারের তারিখ শেষ হোক; তার আগে এ বিষয়ে কীভাবে বলা যাবে! সংসদ সদস্য পরিবারের সদস্য হলেই উপজেলা নির্বাচন করা যাবে না, বিষয়টি কতটুকু যুক্তিযুক্ত– এ প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এটি ঠিক নয়, আপনি সব যুক্তি উত্থাপন করতে পারেন; তবে আপনার যুক্তি জনগণ কী চোখে দেখছে? দেশের ভোটাররা কী চোখে দেখছে? আওয়ামী লীগের এ সিদ্ধান্তে তৃণমূল পর্যন্ত মানুষ কিন্তু খুশি হয়েছে।

দলের তৃণমূলের কর্মীরা তাদের মত-প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তার কারণ হচ্ছে, একটা দলে আমি এমপি, আমি মন্ত্রী, আবার আমার ভাই, ছেলে– এরাও পদ নিয়ে যাবে সব, তাহলে তৃণমূলের কর্মীরা কী করবেন? তাদের পদে যাওয়ার কোনো অধিকার নেই? সে সুযোগ করে দেওয়ার জন্যই এই সিদ্ধান্ত।’ কালীগঞ্জে এমপির ছেলে ও ভাই প্রার্থী রংপুর অফিস জানায়, রংপুর বিভাগের আট জেলার মধ্যে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ছাড়াও জামায়াতের একজন ও বিএনপির পাঁচজন প্রার্থী হয়েছেন। লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে মনোনয়ন দাখিল করেছেন সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নূরুজ্জামান আহমেদ এমপির ছেলে ও আপন ভাই। দিনাজপুরের বীরগঞ্জে জেলা বিএনপির উপদেষ্টা রেজওয়ানুল ইসলাম রিজু ও শতগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জামায়াত নেতা ডা. কুতুবউদ্দিন প্রার্থী হয়েছেন।

কাহারোল উপজেলায় সুন্দরপুর ইউনিয়ন বিএনপির নেতা পারভেজ আহমেদ প্রার্থী হয়েছেন। পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে আটজনের মধ্যে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল মান্নান ও ময়দানদীঘি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হাবীব আল আমীন ফেরদৌস প্রার্থী হয়েছেন। দেবীগঞ্জে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক রহিমুল ইসলাম বুলবুল প্রার্থী হয়েছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর শ্যালক ও এমপি লোটাস কামালের ছোট ভাইও প্রার্থী চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে উপজেলা বিএনপির সাবেক প্রচার সম্পাদক জাহেদুল্লাহ কোরাইশী প্রার্থী হয়েছেন। আর কুমিল্লার বরুড়ায় মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আপন শ্যালক মো. হামিদ লতিফ ভূঁইয়া কামাল। আওয়ামী লীগে তাঁর কোনো পদ নেই। পেশায় ব্যবসায়ী কামালের গ্রামের বাড়ি বরুড়ার আদ্রা ইউনিয়নের মনোহরপুরে। মন্ত্রীর আত্মীয় হওয়ার পরও প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে কামাল বলেন, আমি কখনও মন্ত্রীর পরিচয়ে দাপট দেখাই না। তিনি (মন্ত্রী) আত্মীয় হিসেবে শ্রদ্ধার স্থানে আছেন, থাকবেন। আমি নিজের পরিচয়ে নির্বাচন করছি।

অন্যদিকে দলের নির্দেশ উপেক্ষা করে সদর দক্ষিণ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন কুমিল্লা-১০ (সদর দক্ষিণ, লালমাই ও নাঙ্গলকোট) আসনের এমপি ও সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের ছোট ভাই তিনবারের উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম সারোয়ার। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘দলের নেতাকর্মী সভা করে আমাকে নির্বাচনের জন্য চাপ দিয়ে মাঠে নামিয়েছে। এ ছাড়া ১৫ বছরে কী করলাম, এ নির্বাচনে ভোটাররা রায় দেবে। কয়েক মাস ধরে নির্বাচন উপলক্ষে মাঠে কাজ করছি। এখন ভোটের মাঠ থেকে সরে যাওয়া সম্ভব নয়।’ খুলনা বিভাগে বিএনপির ৩ প্রার্থী খুলনা ব্যুরো জানায়, খুলনা বিভাগের ১০ জেলার ২৪ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ১১৪ জন। তবে জামায়াতের কোনো প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেননি। দুটি উপজেলায় বিএনপির তিনজন চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন।

এর মধ্যে খুলনার ফুলতলায় উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সাব্বির হোসেন এবং দিঘলিয়ায় সেনহাটি ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও উপজেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক শামীম চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। এ ছাড়া ফুলতলায় জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সরদার আলাউদ্দিন মিঠুর স্ত্রী জুবায়দা খান সুরভীও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পী বলেন, বিএনপি নেতা সরদার আলাউদ্দিন মিঠুর স্ত্রীর বিএনপির কোনো পদে নেই। অন্য দু’জনের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে খুলনায় তিন উপজেলায় এমপিদের ভাই ও আত্মীয়রা প্রার্থী হয়েছেন।

এর মধ্যে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে বর্তমান এমপি রেজাউল হক চৌধুরীর ভাই বুলবুল আহমেদ টোকন চৌধুরী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তিনি দৌলতপুর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি। নড়াইলের লোহাগড়ায় নড়াইল-২ আসনের এমপি মাশরাফি বিন মুর্তজার চাচা শ্বশুর ফয়জুল হক রোম প্রার্থী হয়েছেন। তিনি লোহাগড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সাবেক নোয়াগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান। চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুনের ভাতিজা জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক নঈম হাসান জোয়ার্দ্দার চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন। ময়মনসিংহে এমপির ভাই ও বিএনপির সাবেক ৬ নেতা প্রার্থী  ময়মনসিংহ থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, ময়মনসিংহ সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে কোতোয়ালি কৃষক দলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক হোসাইন নূর মোহাম্মদ প্রার্থী হয়েছেন। কৃষক দলের সাবেক নেতা হোসাইন নূর মোহাম্মদ এলাকায় বিএনপির সক্রিয় কর্মী হিসেবে পরিচিত।

নেত্রকোনার পূর্বধলায় সাবেক তাঁতী দল নেতা আসাদুজ্জামান নয়ন চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দাখিল করেছেন। তাঁকে সমর্থন জানিয়েছেন এ আসনের এমপি আহমদ হোসেন। এ নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। জামালপুরের ইসলামপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুস সালামের সঙ্গে লড়বেন উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মসিউর রহমান। বকশীগঞ্জে প্রার্থী হয়েছেন জামালপুর-১ আসনের এমপি নূর মোহাম্মদের ভাই নজরুল ইসলাম সাত্তার। এ উপজেলায় বিএনপির বহিষ্কৃত সভাপতি আবদুল রউফ তালুকদারও প্রার্থী হয়েছেন। এমপির ভাই উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়ায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের রয়েছে অসন্তোষ। দলীয় নির্দেশনা উপেক্ষা করে নিজের ভাইকে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী করার বিষয়ে সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ধরেননি।

শেরপুরে বিএনপি থেকে জেলা বিএনপির সদস্য মোকশেদুল হক ও উপজেলা বিএনপির সদস্য মো. রাব্বেনুর চৌধুরী প্রার্থী হয়েছেন। বরিশালে ৭ উপজেলায় বিএনপির প্রার্থী ১ বরিশাল ব্যুরো জানান, বরিশাল বিভাগে ৭ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ২৭ জন প্রার্থী হয়েছেন। এর মধ্যে ভোলা-২ (দৌলতখান-বোরহানউদ্দিন) আসনের আওয়ামী লীগের এমপি আলী আজম মুকুলের দু’জন আত্মীয় রয়েছেন। এক বিএনপি নেতা প্রার্থী হয়েছেন বোরহানউদ্দিনে। এ ছাড়া বরগুনা সদরে জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. হালিম প্রার্থী হয়েছেন।

ভোলার তিন উপজেলায় মোট প্রার্থী ১২ জন। সদর উপজেলায় ৩ জন, বোরহানউদ্দিনে ৪ জন ও দৌলতখানে ৫ জন। এর মধ্যে বোরহানউদ্দিনে উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও আওয়ামী লীগের এমপি আলী আজম মুকুলের দু’জন আত্মীয় রয়েছেন। তারা হলেন এমপির খালু বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল কালাম ও ভগ্নিপতি মো. জাফর উল্যাহ। পিরোজপুরের নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠি) উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৩ জন, কাউখালী উপজেলায় ৫ জন প্রার্থী হয়েছেন। এ দুই উপজেলা জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর সংসদীয় আসনভুক্ত। শুধু কাউখালীর দুটি ভাইস চেয়ারম্যান পদে জেপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন।

আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমুর সংসদীয় আসনভুক্ত ঝালকাঠি সদর ও নলছিটিতে ৭ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী সবাই আওয়ামী লীগের। এর মধ্যে সদরে ৪ জন ও নলছিটিতে ৩ জন। বরগুনা সদরে ৬ জন ও বেতাগী উপজেলায় ৮ জন প্রার্থী হয়েছেন। রাজশাহীতে প্রার্থী বিএনপির সাবেক এক নেতা রাজশাহী ব্যুরো জানায়, প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় রাজশাহীর ৫টি উপজেলায় নির্বাচন হচ্ছে। এর মধ্যে শুধু একটি উপজেলায় বিএনপির সাবেক এক নেতা ভোট করছেন। অন্য চার উপজেলায় বিএনপি-জামায়াতের কোনো প্রার্থী নেই। গোদাগাড়ীতে জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি ও জেলা বিএনপির যুববিষয়ক সম্পাদক সাজেদুর রহমান খান মার্কনী চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন। এ বিষয়ে সাবেক বিএনপি নেতা সাজেদুর রহমান খান মার্কনী বলেন, দীর্ঘদিন বিএনপির নেতৃত্বে ছিলাম। নেতাকর্মীরা চান নির্বাচন করতে। তাদের চাওয়ার কারণেই প্রার্থী হয়েছি। তবে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মামুনুর রশীদ বলেন, মার্কনী আমাদের দলের কেউ নন। তিনি সাবেক নেতা। অন্তত ১৫ বছর আগে দল থেকে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

সুনামগঞ্জের চারটিতেই প্রার্থী আছে বিএনপির সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, দ্বিতীয় ধাপের ভোটেও সুনামগঞ্জের চার উপজেলায় মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বিএনপির চার নেতা। বিশ্বম্ভরপুরে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি, সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ ও বিএনপি নেতা মোহন মিয়া বাচ্চু। হারুনুর রশীদ বলেন, বিএনপির ৯০ শতাংশ কর্মী, সমর্থক ও ভোটারের সমর্থন আমি পাবো। তাদের সাহসেই ভোটের মাঠে রয়েছি। জামালগঞ্জে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি নুরুল হক আফিন্দি। তাহিরপুরে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন বিএনপি নেতা সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কাসেম। ধর্মপাশায় উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম চৌধুরী কামাল মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। জেলা বিএনপির সভাপতি কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন বলেন, দলের দায়িত্বশীল যারা প্রার্থী হয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।