ঢাকা প্রেস নিউজ
বিয়ের জন্য চাপ দেওয়ায় অন্তঃসত্ত্বা প্রেমিকা শাহিদা ইসলামকে পরিকল্পিতভাবে গুলি করে হত্যা করেন কথিত প্রেমিক তৌহিদ শেখ তন্ময়। হত্যার কাজে ব্যবহৃত পিস্তলটি তিনি গত ৫ আগস্ট রাজধানীর ওয়ারি থানা থেকে লুট করেন এবং পরে ইউটিউব দেখে সেটি চালানো শিখেন।
গত ২৯ নভেম্বর রাতে তৌহিদ প্রেমিকা শাহিদাকে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের করেন। লোকাল বাসে করে তারা মুন্সীগঞ্জের মাওয়া ঘাটে যান এবং রাতভর ঘোরাঘুরি করেন। পরদিন ভোরে খানবাড়ি সিএনজি স্ট্যান্ড এলাকায় শাহিদা বিয়ের জন্য চাপ দিলে উভয়ের মধ্যে তর্কবিতর্ক শুরু হয়। একপর্যায়ে তৌহিদ ক্ষিপ্ত হয়ে ওয়ারি থানা থেকে লুট করা পিস্তল দিয়ে শাহিদাকে গুলি করেন। প্রথম গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হলেও পরবর্তী পাঁচটি গুলি শাহিদার শরীরে বিদ্ধ হয়। ঘটনাস্থলেই শাহিদার মৃত্যু হয়।
পরে তৌহিদ কেরানীগঞ্জের বেইলি ব্রিজের নিচে পিস্তলটি ফেলে দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। আত্মগোপনের উদ্দেশ্যে নিজের বোনের বাড়িতে গিয়ে লঞ্চে করে ভোলার মনপুরা দ্বীপে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন।
ডিবি পুলিশ প্রযুক্তির সাহায্যে তৌহিদের অবস্থান শনাক্ত করে। মুন্সীগঞ্জ ডিবি পুলিশের একটি দল ভোলার ইলিশা লঞ্চঘাটে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তৌহিদ স্বীকার করেন, হত্যার আগে তিনি মোবাইল ফোনটি বন্ধ করে দেন যাতে পুলিশ তার অবস্থান শনাক্ত করতে না পারে।
তৌহিদের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা হয়েছে—শাহিদা হত্যার মামলা, ওয়ারি থানা থেকে অস্ত্র লুটের মামলা এবং হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার সংক্রান্ত মামলা।
মুন্সীগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জুলফিকার হোসাইন রনির আদালতে তৌহিদ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
শাহিদার মা জরিনা খাতুন তৌহিদ শেখ তন্ময়কে প্রধান অভিযুক্ত করে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। ময়নাতদন্ত শেষে শাহিদার দাফন ময়মনসিংহে সম্পন্ন হয়।
এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।