পাগলা মসজিদের ব্যাংক হিসাবে জমা ৮০ কোটি টাকা!

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ১২ এপ্রিল ২০২৫ ০৪:৫৭ অপরাহ্ণ   |   ২৪০ বার পঠিত
পাগলা মসজিদের ব্যাংক হিসাবে জমা ৮০ কোটি টাকা!

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি:-

 

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানসিন্দুকে প্রতি তিন মাস অন্তর কোটি কোটি টাকা জমা পড়ে—এ খবর অনেকেরই জানা। তবে এতদিন পর্যন্ত এই দানের মোট পরিমাণ ছিল সবার অজানা। প্রশাসনের কাছে তথ্যটি ছিল গোপনীয়। সাংবাদিকরাও বহুবার চেষ্টা করেও মসজিদ পরিচালনা কমিটির কাছ থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ জানতে পারেননি।
 

অবশেষে সেই রহস্য উন্মোচিত হলো। শনিবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে মসজিদ প্রাঙ্গণে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান এই তথ্য প্রকাশ করেন।
 

তিনি জানান, মসজিদের দান বাক্স থেকে প্রাপ্ত অর্থ থেকে মসজিদ ও এতিমখানা পরিচালনা, বিভিন্ন সামাজিক-ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে অনুদান প্রদান করা হয়েছে। এসব খরচ বাদ দিয়ে বর্তমানে কিশোরগঞ্জের রূপালী ব্যাংকে মসজিদের নামে জমা আছে ৮০ কোটি ৭৫ লাখ ৭৩ হাজার টাকা
 

জেলা প্রশাসক আরও জানান, এই অর্থ ব্যবহার করে মসজিদের জন্য প্রায় শত কোটি টাকা ব্যয়ে একটি বহুতল ভবন এবং ইসলামী কমপ্লেক্স নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়াও জমি অধিগ্রহণসহ অন্যান্য উন্নয়নমূলক কাজেও এই অর্থ ব্যয় করা হবে।
 

প্রতিবারের মতো এবারও তিন মাস পর শনিবার সকালে খোলা হয় মসজিদের দানসিন্দুক। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তায় মসজিদের নিচতলার বিভিন্ন স্থান থেকে একে একে খোলা হয় ১১টি লোহার সিন্দুক। এতে পাওয়া যায় মোট ২৮ বস্তা টাকা
 

এসব টাকা গণনার কাজে অংশ নেন রূপালী ব্যাংকের ৭০ কর্মকর্তা-কর্মচারী, পাগলা মসজিদ নূরানী হাফিজিয়া মাদ্রাসার ১০০ জন শিক্ষার্থী এবং জামিয়াতুল ইমদাদিয়া মাদ্রাসার ২০০ শিক্ষার্থীসহ মোট ৩৭০ জন। সকাল সাড়ে ৭টা থেকে শুরু হয়ে দিনব্যাপী চলে এই গণনার কাজ।
 

জনশ্রুতি অনুসারে, কিশোরগঞ্জ শহরের হারুয়া ও রাখুয়াইল এলাকার মাঝ দিয়ে প্রবাহিত নরসুন্দা নদীর এক জেগে ওঠা চরে এক আধ্যাত্মিক পাগল সাধক বাস করতেন। তাঁর মৃত্যুর পর সেই স্থানে নির্মিত হয় পাগলা মসজিদ। বিশ্বাস করা হয়, এখানে মানত করলে মনের আশা পূর্ণ হয়। সেই বিশ্বাস থেকেই ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে লাখো মানুষ এখানে নিয়মিত দান করে থাকেন।
 

গত কয়েক বছর ধরে এই মসজিদের দান বাড়ছে হু হু করে। প্রশাসনের ভাষ্যমতে, এই প্রবণতা একটি ব্যতিক্রমী উদাহরণ হয়ে উঠেছে সারাদেশের জন্য।