স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ৫ জুলাই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহাদাত হোসেন শামীম ও এক সহকারী শিক্ষকের ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাটি এলাকায় তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। পরে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয়দের দাবিতে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ শাহাদাত হোসেনকে বরখাস্ত করে। তার স্থলে রেজাউল করিমকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
বুধবার সকালে শাহাদাত হোসেন শামীম কিছু লোকজন নিয়ে বিদ্যালয়ে প্রবেশের চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে এসে তাঁর বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে শুরু করে। একপর্যায়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে তিনি পালিয়ে যেতে বাধ্য হন।
অভিযোগের বিষয়ে শাহাদাত হোসেন শামীম বলেন,
“আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হয়েছে। আমাকে অন্যায়ভাবে বরখাস্ত করা হয়েছিল। আদালতে মামলা করলে বিচারক আমার পক্ষে রায় দেন এবং বকেয়া বেতনসহ পদে যোগদানের নির্দেশ দেন। সেই রায়ের কপি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানায় জমা দিয়েছি। বিদ্যালয়ে গেলে কিছু শিক্ষক শিক্ষার্থীদের উসকানি দেন। আত্মরক্ষার জন্য স্থান ত্যাগ করি।”
অন্যদিকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম জানান,
“অভিযুক্ত শিক্ষক লোকজন নিয়ে জোরপূর্বক বিদ্যালয়ে প্রবেশের চেষ্টা করেন এবং শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালান। এতে সাতজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। বিষয়টির বিচার না হওয়া পর্যন্ত তাঁকে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।”
তিনি আরও বলেন, আদালতের রায়ের যে কপি শাহাদাত হোসেন দেখিয়েছেন, সেটি ভুয়া বলে সন্দেহ করছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। এ কারণেই বিক্ষোভ হয়েছে।
একজন ক্ষুব্ধ অভিভাবক বলেন,
“শিক্ষক সমাজের আদর্শ। তাদের কাছ থেকে এমন অনৈতিক আচরণ অগ্রহণযোগ্য। এমন ঘটনার পরও তিনি বিদ্যালয়ে আসার সাহস কীভাবে পেলেন? আমরা তাঁর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”
বদলগাছী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফিউল আলম বলেন,
“আমি বর্তমানে ছুটিতে আছি। আদালতের রায়ের কোনো চিঠি অফিসে এসেছে কিনা তা নিশ্চিত নই।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত জাহান ছনি জানান,
“ট্রেনিং শেষে ফিরে দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।”
থানার ওসি আনিছুর রহমান বলেন,
“ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। প্রধান শিক্ষক আদালতের রায়ের কপি দেখিয়েছেন। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। সবাইকে শান্ত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।”