আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-
কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী উপজেলায় কুমড়া গাছের ডগা দু-মুখো সাপের আকৃতি দেখা দেওয়ায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। সেই গাছ এক নজর দেখতে শতশত উৎসুক জনতার ঢল নামে।
বুধবার (০৫ মার্চ ) দুপুরে ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের সীমান্তঘেষা গোরকমন্ডল এলাকায় বারোমাসিয়া নদীর তীরে কুটিবাড়ীতে আব্দুল সাত্তারের কুমড়া খেতে এ দৃশ্য দেখা গেছে।
সেখানে দেখা গেছে, কুমড়া গাছের ডগা দু-মুখো সাপের আকৃতি। এক নজর দেখতে শতশত নারী-পুরুষ ও শিশু-কিশোরসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষের ঢল নামে। মুহূর্তে ওই এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে পাশের গ্রামগুলো থেকেও শতশত উৎসুক জনতার ভিড় জমায়।
এদিন সকালে দু’জন ব্যক্তি কুড়া থেকে গরুর ঘাস সংগ্রহ করতে গেলে তাদের নজরে আসে কুমড়া গাছে ডগা সাপের আকৃতির মতো দেখতে। এরপর মুহূর্তে সে গাছ দেখতে স্থানীয়সহ আশপাশের এলাকা থেকে শতশত মানুষ দল বেধে কুটিবাড়ীর আব্দুল সাত্তারের কুমড়া খেতে জড়ো হন। কুমড়া গাছের ডগা সাপের আকৃতি দেখায় অনেকের মধ্যে নানা ধরনের আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
ওই এলাকার কৃষক আলী মুদ্দিন (৬৫) জানান, প্রথমে মানুষের মুখে শুনে বিশ্বাস করতে পারিনি। এরপর দেখলাম সত্যি সত্যি কুমড়া গাছে ডগা দু-মুখো সাপের আকৃতি। তখনেই মনে হলো এই কুটিবাড়ীতে থাকা বিশাল আকৃতির দু-মুখো সাপের কথা। তিনি দাবি করেন, এই কুটিবাড়ীতে বিশাল আকৃতির দু-মুখো সাপ মাঝে মধ্যে দেখা মেলে। আমিসহ অনেকেই সাপটি দেখছেন। তবে কিছু একটা রহস্য থাকতে পারে। আল্লাহর লীলা খেলা। আল্লাহ ভালো জানেন এর রহস্য কি।
মিঠুন মিয়া ও মনিন্দ্র চন্দ্র মন্ডল নামের দুইজন স্থানীয় জানান, আমরা বিশ্বাস করতে করতে পারছি না। কিভাবে একটি কুমড়া গাছের ডগা সত্যি সত্যি দু-মুখো সাপের আকৃতি। তারা আরও জানান, সাপের লেজ যেমন চিকন হয়ে মুখে মোটা হয়; ঠিক তেমনি কুমড়া গাছে গোড়া থেকে ডলায় এসে দু-মুখো সাপের আকৃতি হয়েছে। কি বলবো এটা কিভাবে সম্ভব। সকাল থেকে মানুষের হিসাব নেই। সমানে আসছে এক নজর দেখার জন্য।
পশ্চিম ফুলমতি এলাকার দেখতে আসা শিক্ষার্থী তুহিন ও মমিন জানান, দেখতে সাপের মতোই লাগছে। এটা কিভাবে সম্ভব জানি না। তবে এটা একমাত্র আল্লাহ বলতে পারে।
ওই এলাকার সাইদুল ইসলাম একাই ভিন্ন মত জানিয়েছেন। তিনি জানান, কিছুটা সাপের আকৃতির মতো লাগছে। তবে তিনি যে কুমড়ার গাছে ডগা সাপের আকৃতি দেখা যাচ্ছে সেটি ভাইরাস জনিত কারণ জানিয়েছেন।
কুমড়া ক্ষেতের মালিক আব্দুল সাত্তার জানান, সকালে খবর পাইলাম আমার কুমড়া ক্ষেতে শতশত নারী-পুরুষের ঢল নামে। আমার একটি কুমড়া গাছের ডগা নাকি অবিকল দু-মুখো সাপের আকৃতির মতো দেখতে। পরে শোনার সঙ্গে সঙ্গে কুমড়া ক্ষেতে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি চতুর দিকে মানুষ দলে দলে দেখার জন্য আসছে। আমার কুমড়া ক্ষেত মানুষের পদদলিত হয় অনেকটা ক্ষতি হয়ে গেছে। শেষে দেখলাম যে আসলেই অনেকটা দু-মুখো সাপের আকৃতি দেখা যাচ্ছে। গাছটির পুরো ডলা হাতে ধরে ধরে দেখলাম। অনেকে অনেক কথা বলছেন। মানুষ জনকে বলেছি দেখেন আমার ক্ষেত নষ্ট করেন না। সাপের আকৃতির গাছটি ক্ষেতে থাকবে কি না এমন প্রশ্ন করলে তিনি জানান, ইতোমধ্যে অনেকেই বলছেন গাছটি ক্ষেত থেকে কেঁটে ফেলতে। তবে আমি গাছটি কোনোভাবেই কেঁটে ফেলবো না। তাছাড়া ওই গাছে কমপক্ষে ছোট বড় চার থেকে পাঁচটি কুমড়া ধরেছে। কুমড়ার চারা রোপণ করেছি কিন্তু ফল দেওয়ার মালিক আল্লাহ।
ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শ্যামল চন্দ্র মন্ডল জানান, ঘটনাটি ঠিক আমার বাড়ির সামনে কুটিবাড়ীর দোলায়। কুমড়া গাছে ডগা দেখতে দু-মুখো সাপের আকৃতি দেখা দিয়েছে। এই খবরে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। আশপাশের এলাকা থেকেও শতশত উৎসুক জনতা এক নজর দেখতে আসছেন এবং যাচ্ছেন। আসলে নিজ চোখে না দেখলে হয়তো বা বিশ্বাস করতে পারতাম না। আসলেই কুমড়া গাছের ডগা সত্যি সত্যি দু-মুখো সাপের আকৃতির। তবেই ইউপি সদস্য শ্যামল চন্দ্র মন্ডল বিষয়টিকে অমঙ্গল কর সৃষ্টিতে দেখছেন এবং সৃষ্টিকর্তা হয়তো একটি অশনিসংকেত দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা. নিলুফা ইয়াছিন এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, বিষয়টি আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। বিষয়টি শুনে একটু অবাকও লাগলো। তবে ঘটনাস্থলে না গিয়ে মন্তব্য করা ঠিক হবে না। বৃহস্পতিবার সকাল সকাল উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে পাঠানো হবে। এরপর কুমড়া গাছের ডগা সাপের আকৃতির বিষয়টি জানানো যাবে।