বাগেরহাট প্রতিনিধি:-
বাগেরহাটের সাবেক পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত খানকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। রোববার বিকেলে বাগেরহাটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মতিউর রহমান এই আদেশ দেন। এর আগে, তাকে ব্যাপক নিরাপত্তার মধ্যে আদালতে আনা হয়।
গত শুক্রবার রাতে রংপুর থেকে বাগেরহাটের সাবেক পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত খানকে আটক করে ঢাকা গোয়েন্দা পুলিশ। একই সময়ে আরো তিন উর্দ্ধতন পুলিশ কর্মকর্তাকেও আটক করা হয়।
এরপর, শনিবার ফকিরহাট থানায় দায়ের করা একটি মামলায় আবুল হাসনাত খানকে এজাহারনামীয় আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখানো হয় এবং আদালতে সোপর্দ করা হয়।
মামলার বাদী, রফিকুল ইসলাম মিঠু, সাবেক পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত খানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন উস্কানিমূলক বক্তব্য এবং সরকারের বিরোধিতা করে আন্দোলন দমন করার অভিযোগ করেন।
বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের ২৭ ব্যাচের কর্মকর্তা আবুল হাসনাত খান ২০২৩ সালের ২০ সেপ্টেম্বর বাগেরহাটের পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে তার ‘একটি ব্যালট, একটি বুলেট’ এবং মৎস্য অধিদপ্তরের অনুষ্ঠানে ‘যেখানে উন্নয়ন, সেখানেই ধ্বংস’ মন্তব্যের কারণে তিনি ব্যাপক সমালোচনার শিকার হন। তার এসব বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ভাইরাল হয়ে পড়ে। তিনি ২৪ আগস্ট পর্যন্ত বাগেরহাটের পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন।
বাগেরহাট জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌশলী (পিপি) মাহবুব মোরশেদ লালন বলেন, সাবেক পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত খানসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় পুলিশ সুপারকে আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
তিনি আরও বলেন, পুলিশ সুপার হিসেবে আবুল হাসনাত খান ফ্যাসিস্ট সরকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য বিভিন্ন অন্যায় কাজ করেছেন, যা তার বক্তব্যে স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।
এই মামলায় বাগেরহাট-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, বাগেরহাট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ তন্ময়, বাগেরহাটের সাবেক পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত খানসহ ৩৫ জন নেতাকর্মী আসামি হয়েছেন। মামলায় বাগেরহাট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মীর শওকত আলী বাদশা, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ কামরুজ্জামান টুকু, সাধারণ সম্পাদক ভুইয়া হেমায়েত উদ্দিন, বাগেরহাট পৌরসভার মেয়র খান হাবিবুর রহমান, জেলা উপজেলা চেয়ারম্যান সরদার নাসির উদ্দিন এবং শেখ হেলাল উদ্দিনের একান্ত সচিব ফিরোজুল ইসলাম জোমাদ্দারসহ আরো বেশ কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।
এসব আসামির বিরুদ্ধে ৪ আগস্ট ফকিরহাট উপজেলার কাটাখালি গোলচত্বর এলাকায় ছাত্র আন্দোলন নস্যাৎ করার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ধ্বংস, ছাত্রদের ওপর গুলি চালানো, আতঙ্ক সৃষ্টি করতে বোমা বিস্ফোরণ এবং হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে।