প্রকাশকালঃ
০৬ জুন ২০২৩ ১১:১৮ পূর্বাহ্ণ ১০৬ বার পঠিত
ঝালকাঠিতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১০ ঘণ্টাই লোডশেডিং হচ্ছে। দিনে ও রাতে বিদ্যুতের অসহনীয় লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ গ্রাহকরা। একদিকে প্রচণ্ড গরম, অন্যদিকে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে মানুষ। প্রতিদিন সকাল থেকে প্রতি ঘণ্টায় লোডশেডিং হচ্ছে।
ঝালকাঠি শহরের চাঁদকাঠি এলাকার আবুল হোসেন বলেন, 'প্রচণ্ড গরমে মানুষ অতিষ্ঠ, এর মধ্যে চলছে অসহনীয় লোডশেডিং। আমরা দিশেহারা হয়ে পড়েছি। বাসায় গরমে থাকা যায় না। সন্তানরা বিদ্যুতের অভাবে পড়ালেখাও করতে পারছে না।'
শহরের স্টেশন রোডের মিলি রহমান বলেন, 'দিনে অর্ধেক সময় এবং রাতেও সমানতালে বিদ্যুৎ লোডশেডিং হচ্ছে। আমরা দিশে হারা হয়ে পড়েছি।'
ঝালকাঠি শহরের এ আর এস সল্ট মিলের মালিকের প্রতিনিধি জয়ন্ত সাহা বলেন, 'দিনে ১২ ঘণ্টার মধ্যে মিল চলছে তিন-চার ঘণ্টা। এতে যা উৎপাদন হয়, তাতে শ্রমিকদের বেতন দেওয়াই কষ্টকর। এতো লোডশেডিং আমার মনে হয় আগে কখনো হয়নি। সহনীয় পর্যায়ে লোডশেডিং হলেও কিছুটা স্বস্তিতে থাকা যেত।'
ঝালকাঠির শরীফ ফ্লাওয়ার মিলের পরিচালক জামাল শরীফ বলেন, 'ময়দার উৎপাদন আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে। বিদ্যুতের ঘনঘন লোডশেডিংয়ের কারণে আমরা ব্যবসায়ীরা দিশেহারা। প্রতিঘণ্টায় লোডশেডিং হচ্ছে। মিলের যন্ত্রাংশও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এখন লাভ-তো দূরের কথা, শ্রমিকদের বেতন দেওয়াই দায় হয়েছে।'
বিদ্যুৎ বিভাগ জানায়, ওজোপাডিকোর আওতাধীন ঝালকাঠিতে পাঁচটি ফিডারে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। ২৪ ঘণ্টায় ঝালকাঠিতে ১৭.৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন। এর মধ্যে ঝালকাঠি সদরে ১০ মেগাওয়াট, নলছিটিতে ৪.২ মেগাওয়াট ও কাঁঠালিয়ায় ৩.৫ মেগাওয়াট। রাজাপুর উপজেলা রয়েছে পল্লী বিদ্যুতের আওতায়। কিন্তু চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ কম মেগাওয়াট পাওয়ায় লোডশেডিং হচ্ছে ঘনঘন।
বর্তমানে ঝালকাঠিতে বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে ৬ মেগাওয়াট। ঘাটটি হচ্ছে ৪ মেগাওয়াট। এই ৪ মেগাওয়াটই লোডশেডিং দিতে হচ্ছে ঝালকাঠির পাঁচটি ফিডারে। এই পরিসংখ্যান শুধু ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কম্পনির (ওজোপাডিকো)। এছাড়াও পল্লী বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের মাত্রাও ভয়াবহ। দিনে ও রাতে সমানতালে পল্লী বিদ্যুতে চলছে লোডশেডিং। জেলায় পল্লী বিদ্যুতের চাহিদা ২৫ মেগাওয়াট, কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে ১৮ মেগাওয়াট। এতে দিশেহারা গ্রামের মানুষও।
শুধু ঝালকাঠি শহরেই নয়, বিদ্যুতের লোডশেডিং শুরু হয়েছে নলছিটি, রাজাপুর ও কাঁঠালিয়া উপজেলাতেও। তীব্র গরমের মধ্যে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে গ্রাহকরা।
ঝালকাঠি ওজোপাডিকোর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রহীম বলেন, 'প্রচণ্ড গরমে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে। আমরা চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ পাচ্ছি না। ১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পেলে কোনো লোডশেডিং হবে না। এর নিচে নামলেই লোডশেডিং দিতে হচ্ছে।'