রাষ্ট্রমালিকানাধীন পাঁচ ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সরকারি কর্মচারী হিসেবে মানছে না এনবিআর

প্রকাশকালঃ ২২ আগu ২০২৩ ০১:২৮ অপরাহ্ণ ৩৭৮ বার পঠিত
রাষ্ট্রমালিকানাধীন পাঁচ ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সরকারি কর্মচারী হিসেবে মানছে না এনবিআর

রকারি কর্মচারীদের মূল বেতন, উৎসব ভাতা ও বোনাস ছাড়া বাকি সব ভাতা ও সুবিধা আয়করমুক্ত। কিন্তু রাষ্ট্রমালিকানাধীন পাঁচ ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সরকারি কর্মচারী হিসেবে মানছে না জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ কারণে এসব ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব আয়ের ওপর করারোপ করা হচ্ছে। অতিরিক্ত আয়কর আদায়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নোটিশও দিচ্ছে এনবিআরের সংশ্লিষ্ট সার্কেল। বাড়তি কর আদায়ে কাউকে কাউকে জরিমানাও করা হয়েছে।

যেসব ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই সমস্যায় পড়েছেন, সেগুলো রাষ্ট্রমালিকানাধীন সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক। এসব ব্যাংকে প্রায় ৪০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। তবে কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা–কর্মচারিরা এ সমস্যায় পড়েননি। কৃষি ব্যাংকের কর্মচারিদের সরকারি কর্মচারী হিসেবে বিবেচনা করা হলেও অন্য পাঁচটি ব্যাংকের ক্ষেত্রে তা মানা হচ্ছে না।


এই সমস্যা সমাধানে এসব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকেরা এনবিআরের সঙ্গে আলোচনা করলেও বিষয়টির সুরাহা হয়নি। ফলে বিভিন্ন মাধ্যমে ব্যক্তিগত যোগাযোগে অতিরিক্ত আয়কর দেওয়া থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করে যাচ্ছেন এসব ব্যাংকাররা। এসব ব্যাংকে আলোচনার প্রধান বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে এনবিআরের অতিরিক্ত আয়কর আদায়ের বিষয়টি।

জনতা ব্যাংকের উপমহাব্যবস্থাপক পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা তাঁকে দেওয়া নোটিশ ও জরিমানা আরোপের বিষয়টি দেখিয়ে বলেন, ‘এটা কোনোভাবেই হতে পারে না। জনতা ব্যাংক শতভাগ সরকার মালিকানাধীন ব্যাংক। আমরাও সরকারি কর্মচারী। এনবিআর চাহিদামতো কর আদায় করতে না পেরে এখন আমাদের লক্ষ্য করে মাঠে নেমেছে। বাড়তি কর আদায়ে কর্মকর্তাদের হয়রানি করা হচ্ছে।’

জানা যায়, কর অঞ্চলগুলো অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারি করা পে–স্কেল ২০১৫–এর প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী অতিরিক্ত আয়করের নোটিশ দিচ্ছে। এই প্রজ্ঞাপনে সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের নাম নেই। ওই সময়ে বেসামরিক প্রশাসন, স্বশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক বিমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এবং বিচার বিভাগের জন্য পে–স্কেলের পৃথক পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে ব্যাংক বিমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এসব ব্যাংককে অন্তর্ভুক্ত না করে স্বশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।


ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, পুরো আয়ের ওপর আয়কর দিতে হলে কর্মকর্তা থেকে জ্যেষ্ঠ মুখ্য কর্মকর্তাদের বছরে ৩০-৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত আয়কর দিতে হবে। সহকারী মহাব্যবস্থাপক থেকে উপব্যবস্থাপনা পরিচালক পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দেড় লাখ থেকে আড়াই লাখ টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত আয়কর দিতে হবে। বর্তমান বাস্তবতায় কেউ এত টাকা বাড়তি কর দেওয়ার জন্য প্রস্তুত নয়।

এ বিষয়ে এনবিআরের একাধিক কর অঞ্চলের বৈতনিক সার্কেলের অনেক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এনবিআরের প্রধান কার্যালয়ের সিদ্ধান্তে এসব ব্যাংক কর্মকর্তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত আয়কর দাবি করে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এটা মাঠ পর্যায়ের কোনো সিদ্ধান্ত ছিল না।