পিডিবির সেই ক্ষমতাধররা এখন সাবেক প্রতিমন্ত্রী ফরহাদের আশীর্বাদে ৪ বছরে শত কোটিপতি: উপপরিচালক শামছুল হুদা

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ২৭ জানুয়ারি ২০২৫ ০১:০৪ অপরাহ্ণ   |   ১২১ বার পঠিত
পিডিবির সেই ক্ষমতাধররা এখন সাবেক প্রতিমন্ত্রী ফরহাদের আশীর্বাদে ৪ বছরে শত কোটিপতি: উপপরিচালক শামছুল হুদা

ঢাকা প্রেস
মোস্তাফিজুর রহমান,বিশেষ প্রতিনিধি:-



*কাগজে প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিতে নিজেই করতেন অন্য কর্মকর্তার সই

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) ক্রয় পরিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ শামছুল হুদা মাত্র চার বছরে বাজিমাত করেছেন আওয়ামী লীগের জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী মো. ফরহাদ হোসেনের আশীর্বাদে। নুন আনতে পান্তা ফুরানো পরিবারের এই কর্মকর্তা এখন কয়েকশ' কোটি টাকার মালিক। বাড়ি, গাড়ি, ফ্ল্যাটের ছড়াছড়ি।

 



ঢাকা প্রেস এর অনুসন্ধান বলছে বর্ণাঢ্য জীবন তার। তিন সন্তান পড়াশোনা করেন। মেয়েকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাক্তারি পড়াচ্ছেন অর্ধ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে। সন্তানদের পড়াশোনা, হাতখরচ, সোসাইটি ও আভিজাত্য রক্ষায় মাসিক ব্যয় পাঁচ লাখ টাকার বেশি।


অথচ, ২০০০ সালে পিডিবিতে উপপরিচালক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত শামছুল হুদার বেতন-ভাতা সেই সময় থেকে এ পর্যন্ত ৫০ লাখ টাকার বেশি নয়। আওয়ামী লীগের আস্থাভাজন ও দুর্নীতিবাজ হিসেবে পরিচিত এই কর্মকর্তার অর্থবিত্তের উৎস নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে।


তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থাভাজন ফরহাদ হোসেনের কথাই ছিল জনপ্রশাসনে শেষ কথা। এ ক্ষমতা ব্যবহার করে বিভিন্ন কাগুজে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিয়ে হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছে এই চক্রটি।


ঢাকা প্রেস ডটকম-এর অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, তার ঢাকা, সাভার, জন্মস্থান মেহেরপুরসহ দেশ-বিদেশে নামে-বেনামে অঢেল সম্পত্তি থাকার তথ্য।
পিডিবিতে জুলাই বিপ্লবে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরে কয়েকজন আওয়ামীলীগঘনিষ্ঠ কর্মকর্তা বদলি, তদন্ত বা শাস্তির মুখোমুখি হলেও শামছুল হুদা রয়েছেন বহাল।


প্রাপ্ত সূত্রের দাবি, প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের রাজনীতি, জুলাই আন্দোলন নস্যাৎ করা, বিভিন্ন পারিবারিক অনুষ্ঠান ও আমোদ-ফূর্তিসহ সব খরচের ব্যবস্থা করতেন শামছুল হুদা। সাবেক এই প্রতিমন্ত্রীর ভয়ে পিডিবি তার কাছে জিম্মি ছিল।


আর কাগুজে প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিতে শামছুল হুদা অধীনস্থ কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর নিজেই করে নিতেন। ওই কর্মকর্তারা অসহায়ের মতো তাকিয়ে দেখতেন। কিছু হলেই প্রতিমন্ত্রীকে তাৎক্ষণিক ফোন করতেন।


শামছুল হুদাদের একরোখা দাপটে দীর্ঘদিন কোণঠাসা থাকা একাধিক কর্মকর্তা ঢাকা প্রেস কে বলেন, ২০০০ সাল থেকে শামছুল হুদা কয়েকটি কাগুজে প্রতিষ্ঠানকে একাধারে কাজ দেন। সংশ্লিষ্ট অন্য কর্মকর্তারা রাজি না থাকলেও শামছুল হুদা নিজেই তাদের সই দিয়ে নিতেন।


ঠিকাদাররা ইচ্ছে মতো কাজ করে সাজানো কাগজপত্র জমা দিয়ে বিল তুলে নিতেন। কমিশন বুঝে দিতেন শামছুল হুদাকে।

 

আওয়ামী লীগের আস্থাভাজন শামছুল হুদা বহাল রয়েছেন কিভাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দীর্ঘদিনের বঞ্চিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এসব অভিযোগের বিষয়ে উপ পরিচালক শামছুল হুদার কাছে জানতে চাইলে তিনি ফোন কেটে দেন। অভিযোগ উল্লেখ করে বার্তা পাঠিয়ে বক্তব্য চাইলে আর সাড়া দেননি। এছাড়া পিডিবি অফিসের সরকারি চেয়ার বাসায় নিতে গিয়ে ধরা পড়ার ঘটনায় পিডিবিতে আলোচনা বাড়ছে। তবে তার কিছু হয়নি। ওই চেয়ারের ছবিও রয়েছে ঢাকা প্রেস ডটকম এর কাছে।