সোমবার (২৪ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে পর্যায়ক্রমে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়। কারা ফটকের সামনে সে সময় উপস্থিত ছিলেন তাদের স্বজনরা।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) আদালত মোট ৫৩ জনের জামিন মঞ্জুর করেন।
কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, সোমবার দুপুরে জামিনের কাগজপত্র পৌঁছানোর পর যাচাই-বাছাই শেষে সন্ধ্যায় মুক্তির আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়।
মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে
কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগার থেকে ১ জন,
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-১ থেকে ২ জন, এবং
পার্ট-২ থেকে ৩২ জন মুক্তি পান।
কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মোহাম্মদ আল মামুন বলেন,
“দুপুরে একজন সাবেক বিডিআর সদস্যের জামিনের কাগজপত্র এসে পৌঁছে। যাচাই শেষে তাকে সন্ধ্যায় মুক্তি দেওয়া হয়েছে।”
অন্যদিকে কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার আবু নূর মো. রেজা জানান,
“পার্ট-১ থেকে দুইজন সাবেক সদস্যকে এবং পার্ট-২ থেকে ৩২ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।”
পরিবারের আবেগঘন প্রতিক্রিয়ায় জামিনপ্রাপ্ত সাবেক সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুনের বড় বোন কামরুন্নাহার বলেন,
“একসময় ভাবতাম, ভাইকে আদৌ ফিরে পাব কি না। আজ তাকে সামনে দেখে মনে হচ্ছে নতুন জীবন শুরু হলো। আমার ভাইয়ের অপেক্ষায় বাবা মারা গেছেন, মা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এখন ভাইকে মায়ের বুকে দিতে পারলে কিছুটা স্বস্তি পাব। ভেতরে যারা এখনো আছেন, তারাও যেন মুক্তি পান।”
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি, ঢাকার পিলখানা অবস্থিত তৎকালীন বিডিআর সদর দপ্তরে ভয়াবহ বিদ্রোহের ঘটনা ঘটে। এতে বিডিআরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদসহ ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা নিহত হন। মোট ৭৪ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় ২৬ ও ২৮ ফেব্রুয়ারি হত্যা ও বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়। হত্যার মামলায় ৮৫০ জনকে আসামি করা হয়, যা দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ফৌজদারি মামলা হিসেবে বিবেচিত।
২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর বিচারিক আদালত রায় ঘোষণা করেন, যেখানে
১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড,
১৬০ জনকে যাবজ্জীবন,
২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়,
আর ২৭৮ জনকে খালাস দেওয়া হয়।
👉 আশা করা হচ্ছে, মুক্তি পাওয়া সাবেক সদস্যরা পরিবারে নতুন করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারবেন।