জাতিসংঘ মানবাধিকার মিশন: সরকারের ব্যাখ্যা

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ১৯ জুলাই ২০২৫ ০৪:৫৫ অপরাহ্ণ   |   ২৮ বার পঠিত
জাতিসংঘ মানবাধিকার মিশন: সরকারের ব্যাখ্যা

ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনের (OHCHR) মিশন চালুর বিষয়ে সরকার আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা দিয়েছে। শনিবার (১৯ জুলাই) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই ব্যাখ্যা তুলে ধরা হয়।
 

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মানবাধিকার সুরক্ষা ও উন্নয়নে সহযোগিতা করতে জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশন (OHCHR) এবং বাংলাদেশ সরকার একটি তিন বছর মেয়াদি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে। এই মিশনের উদ্দেশ্য হলো সরকারি বিভিন্ন সংস্থা এবং নাগরিক সংগঠনসমূহকে প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহায়তার মাধ্যমে সক্ষমতা বৃদ্ধি, আইনি সহায়তা এবং প্রাতিষ্ঠানিক শক্তিশালীকরণে সহায়তা করা। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ যাতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার প্রতিশ্রুতি পূরণে সক্ষম হয়, সে লক্ষ্যেই কাজ করবে মিশনটি।
 

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সরকারের নেওয়া সংস্কার ও জবাবদিহিমূলক উদ্যোগের ধারাবাহিকতায় এই মিশন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এতে সরকারের মানবাধিকার রক্ষায় আন্তরিকতার প্রতিফলন ঘটে। তবে বিজ্ঞপ্তিতে সমাজের একটি অংশের উদ্বেগের কথাও স্বীকার করা হয়েছে—বিশেষত জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাগুলোর আদর্শিক অবস্থান নিয়ে। এতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশের সমাজ একটি দৃঢ় সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় ঐতিহ্যের ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে রয়েছে, এবং যেকোনো আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বের ক্ষেত্রে এই মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা আবশ্যক।
 

সরকারের ভাষ্য অনুযায়ী, OHCHR মিশন অতীতের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় জবাবদিহিতা নিশ্চিত করায় গুরুত্ব দেবে এবং ভবিষ্যতে যেকোনো গুরুতর লঙ্ঘন প্রতিরোধ ও প্রতিকারে কাজ করবে। তবে এটি বাংলাদেশের প্রচলিত আইন, সামাজিক রীতিনীতি এবং সাংস্কৃতিক কাঠামোর বাইরে গিয়ে কোনো সামাজিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা করবে না।
 

সরকার আশা করছে, মিশনটি স্বচ্ছতা বজায় রাখবে এবং স্থানীয় অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ে কাজ করবে। জাতিসংঘ বাংলাদেশে কাজ করার ক্ষেত্রে আমাদের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় বাস্তবতাকে সম্মান জানাবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
 

বিজ্ঞপ্তিতে আরও স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, যদি কোনো সময় সরকার মনে করে এই অংশীদারিত্ব জাতীয় স্বার্থের সাথে আর সঙ্গতিপূর্ণ নয়, তবে সরকার তার সার্বভৌম কর্তৃত্ব ব্যবহার করে এই চুক্তি থেকে সরে আসার অধিকার সংরক্ষণ করে।
 

উল্লেখ করা হয়, বিগত সরকারগুলোর আমলে বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় যদি এমন একটি সংস্থার কার্যক্রম চালু থাকত, তবে অনেক অপরাধ হয়তো সঠিকভাবে তদন্ত, দলিলভুক্ত এবং বিচার হতে পারত।
 

শেষে বলা হয়, বর্তমান সরকার মানবাধিকারের প্রশ্নে ন্যায়বিচারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয় এবং এই অংশীদারিত্বকে দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করার এবং জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিত করার এক গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ হিসেবে দেখে।