কক্সবাজারে কাজের উদ্দেশ্যে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছেন সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার এক গ্রামের ছয় রাজমিস্ত্রী। সাত দিন ধরে তাদের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। সর্বশেষ মোবাইল ট্র্যাকিংয়ে তাদের অবস্থান শনাক্ত হয়েছে টেকনাফের রাজারছড়া এলাকায়, যা কুখ্যাত অপহরণ ও মানবপাচারকারীদের আস্তানা হিসেবে পরিচিত।
নিখোঁজ শ্রমিকরা হলেন—জকিগঞ্জ উপজেলার খলাছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম লোহারমহল গ্রামের মারুফ আহমদ (১৮), শাহিন আহমদ (২১), রশিদ আহমদ (২০), খালেদ হাসান (১৯), আব্দুল জলিল (৫৫) ও এমাদ উদ্দিন (২২)। তারা সবাই রাজমিস্ত্রীর কাজ করতেন এবং ১৫ এপ্রিল কক্সবাজারের উদ্দেশে বাড়ি থেকে রওনা দেন।
পরদিন ১৬ এপ্রিল পরিবারে যোগাযোগ করলেও তারপর থেকেই তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। এ ঘটনায় পরিবারগুলো চরম দুশ্চিন্তায় ভুগছে। পুলিশের মোবাইল ট্র্যাকিংয়ে দেখা গেছে, নিখোঁজদের মধ্যে অন্তত দুজনের অবস্থান ছিল টেকনাফের রাজারছড়া এলাকায়।
জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল ইসলাম মুন্না বলেন, "নিখোঁজ ছয় যুবক আমাদের এলাকার। তারা পূর্বেও চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এলাকায় কাজ করেছেন। এবার তাদের শেষ অবস্থান রাজারছড়ায় পাওয়া গেছে, তাই টেকনাফ থানা পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।"
টেকনাফ মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন জানান, "আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি। রাজারছড়া এলাকা অপহরণ ও মানবপাচারের জন্য পরিচিত, তাই আমাদের আশঙ্কা—তারা কোনো চক্রের ফাঁদে পড়তে পারেন।"
রশিদ আহমদের ভাই আব্দুল বাছিত বলেন, "রশিদ আগে এক ঠিকাদারের অধীনে কাজ করতো। এবারও কক্সবাজার যাওয়ার পর মোবাইল বন্ধ রয়েছে। লোকেশন টেকনাফে পাওয়া গেছে শুনে আমরা আতঙ্কিত।"
এদিকে, স্থানীয় চৌকিদার ফয়সাল আহমেদ জানান, নিখোঁজ শ্রমিকরা বাবুল নামের এক ঠিকাদারের অধীনে প্রায়ই কক্সবাজারে কাজ করতেন। তবে এবার বাবুলের কাজ না থাকায় তারা টেকনাফের এক পরিচিত যুবকের মাধ্যমে কাজে গিয়েছিলেন।
টেকনাফ সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেন, "আমি সামাজিক মাধ্যমে ঘটনাটি জেনেছি এবং স্থানীয়ভাবে খোঁজখবর নিচ্ছি। রাজারছড়া একটি ভয়ঙ্কর এলাকা—এখানে অতীতে তিনজনকে হত্যা করা হয়েছিল।"
নিখোঁজদের সন্ধানে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে বলে জানানো হয়েছে।