আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-
বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে সারা দেশের মতো কুড়িগ্রামের ৭৪টি ইউনিয়নেও বাস্তবায়িত হচ্ছে ‘মানবসম্পদ উন্নয়নে গ্রামীণ পানি সরবরাহ, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি’ শীর্ষক প্রকল্প। তবে সাংবাদিকদের কাছে এই প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ শুনেই রেগে গেলেন জেলার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হারুনুর রশিদ। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের উল্টো জেরার মুখে ফেলে হেয়প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করেন।
বুধবার (১৬ জুলাই) কুড়িগ্রাম জেলার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে কালের কণ্ঠের উত্তরাঞ্চল প্রতিনিধি তামজিদ হাসান তুরাগ ও এটিএন নিউজের জেলা প্রতিনিধি মনোয়ার হোসেন লিটনের সঙ্গে এমন আচরণ করেন তিনি। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব না দিয়ে উল্টো সাংবাদিকরা ইঞ্জিনিয়ার কি না জানতে চান।
স্থানীয় সাংবাদিক মনোয়ার হোসেন লিটন জানান, আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই প্রকল্পের আওতায় কুড়িগ্রামের ৭৪টি ইউনিয়নে যে ল্যাট্রিনগুলো বানানো হচ্ছে তা নিয়ে অনুসন্ধানী কাজ করছি। সেখানে স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে নির্মাণ ও বিতরণের পর্যায়ে ব্যাপক অনিয়ম হওয়ার খবর পেয়েছি। সে বিষয়ে আমরা নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে জানতে চেয়েছিলাম, তিনি এসব বিষয়ে অবগত আছেন কি না। কিন্তু তিনি আমাদের প্রশ্ন শুনেই রেগে যান তিনি। ক্যামেরার সামনে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
সাংবাদিক তামজিদ হাসান তুরাগ বলেন, ‘আজ যে ঘটনাটি ঘটেছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমাদের কাজ অভিযোগের বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে জানানো এবং সংবাদযোগ্য হলে তা প্রকাশ করা। কিন্তু তিনি আমাদের কোনো প্রশ্নের জবাব দেননি। ক্যামেরার সামনে কোনো কথা তো বলেননি উলটো আমাদের হেয়প্রতিপন্ন করেছেন। তিনি খোঁড়াযুক্তি দেখিয়ে বলেছেন ‘কর্তৃপক্ষের অনুমোদন লাগবে।’’
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে কর্তৃপক্ষের অনুমোদন প্রয়োজন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে রংপুর সার্কেলের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘উন্নয়ন কাজের তথ্য-উপাত্ত সাংবাদিকরা জানতে চাইতেই পারে। এখানে কর্তৃপক্ষের তেমন অনুমোদন প্রয়োজন নেই। যদি না সেটা খুব জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়। আর অনিয়মের প্রশ্ন উঠলে প্রয়োজন সেটা তদারকি করা। সাংবাদিকদের মাধ্যমেই আমরা উন্নয়ন কাজগুলো প্রচার করি।’
‘মানবসম্পদ উন্নয়নে গ্রামীণ পানি সরবরাহ, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি’ শীর্ষক এ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) প্রকৌশলী মো. তবিবুর রহমান তালুকদার বলেন, ‘প্রকল্পগুলো তদারকি করার জন্য আমাদের জেলা ও উপজেলা সমন্বয়কারীরা রয়েছেন। তারা প্রকল্পগুলো দেখভাল করছেন। তার বাইরে জেলার জনস্বাস্থ্যের নির্বাহী প্রকৌশলীরা আছেন। আপনাদের সঙ্গে যে ঘটনাটি ঘটেছে সে বিষয়ে আমি অবগত নই। বিষয়টি নিয়ে আমি কুড়িগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলব।’