শরীয়তপুরে সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিচারের দাবি

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৪:৫৩ অপরাহ্ণ   |   ৮৩ বার পঠিত
শরীয়তপুরে সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিচারের দাবি

শরীয়তপুর প্রতিনিধি:-

 

শরীয়তপুরে গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর হাতুড়ি ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলার ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে জেলার কর্মরত সাংবাদিকরা।
 

মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে শরীয়তপুর প্রেসক্লাব, ইলেকট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, অনলাইন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, মফস্বল সাংবাদিক ফোরামসহ বিভিন্ন সংগঠনের সাংবাদিকরা অংশ নেন। তারা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার না করা হলে বৃহত্তর কর্মসূচির ঘোষণা দেন। মানববন্ধন শেষে গণমাধ্যমকর্মীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
 

হামলার ঘটনায় মামলা হামলার শিকার সমকালের সাংবাদিক সোহাগ খান সুজন সোমবার রাতে পালং মডেল থানায় ৭ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ৮ থেকে ১০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্তরা হলেন—নুরুজ্জামান শেখ (৪৫), শামিম শেখ (৪০), ইব্রাহিম মোল্লা (৪০), জিহাদ মোল্লা (২১), মাকসুদা বেগম (৩৫), মনির ঢালী (৩০) ও সালাউদ্দিন ঢালী (৩৮)।
 

হামলার পেছনের কারণ গত মঙ্গলবার শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসক কাজী মোহাম্মদ ইলিয়াস এক রোগীর ব্যবস্থাপত্র ছুড়ে ফেলেন। এ ঘটনার সংবাদ প্রকাশ করেন সাংবাদিকরা। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে স্থানীয় ক্লিনিক ব্যবসায়ী নুরুজ্জামান শেখ ওই চিকিৎসকের পক্ষ নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ান। এরই জেরে সোমবার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে নুরুজ্জামান শেখ ও তার ভাই শামীম শেখসহ ৮ থেকে ১০ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সমকালের জেলা প্রতিনিধি সোহাগ খান সুজনের ওপর হামলা চালান। তাকে বাঁচাতে এলে নিউজ টুয়েন্টি ফোর টেলিভিশন ও জাগো নিউজের প্রতিনিধি বিধান মজুমদার অনি, দেশ টিভির সাইফুল ইসলাম আকাশ এবং বাংলা টিভির নয়ন দাসকেও আক্রমণ করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় সোহাগ খান সুজনকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
 

সাংবাদিকদের প্রতিক্রিয়া শরীয়তপুর প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি ও দৈনিক মানবজমিনের প্রতিনিধি খলিল শেখ বলেন, "সাংবাদিকরা পেশাগত দায়িত্ব পালনের কারণে এই ন্যক্কারজনক হামলার শিকার হয়েছেন, যা মুক্ত গণমাধ্যমের জন্য হুমকিস্বরূপ। আমরা দ্রুত অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।"
 

ইলেকট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সচিব ও চ্যানেল টুয়েন্টি ফোরের সাংবাদিক নুরুল আমিন রবিন বলেন, "এটি পরিকল্পিত হত্যার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে। আমরা প্রশাসনকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে চাই, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করা না হলে আমরা আরও বৃহত্তর কর্মসূচির ডাক দেবো।"
 

প্রথম আলোর প্রতিনিধি সত্যজিৎ ঘোষ বলেন, "সাংবাদিকদের ওপর এমন হামলা দুঃখজনক ও নিন্দনীয়। আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও রাষ্ট্রের কাছে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানাই। পাশাপাশি হামলার ভিডিও ফুটেজ দেখে অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের আহ্বান জানাই।"
 

প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন বলেন, "ভুক্তভোগী সাংবাদিক সোহাগ খান সুজনের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।"