কুমিল্লায় আওয়ামীপন্থী চার আইনজীবীর জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার (২১ এপ্রিল) কুমিল্লার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ মাহাবুবুর রহমান এ আদেশ দেন।
কারাগারে নেওয়ার সময় আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা আইনজীবীদের লক্ষ্য করে ডিম নিক্ষেপ করে এবং ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দেয়। একইসঙ্গে পলাতক থাকা আরও দুই আইনজীবীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন বিচারক।
আসামিদের মধ্যে রয়েছেন—কুমিল্লা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও সাবেক পিপি মুস্তাফিজুর রহমান লিটন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া, আইনজীবী সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া এবং জাকির হোসেন। এছাড়া আদালতে হাজির না হওয়ায় জিয়াউল হাসান চৌধুরী সোহাগ ও সাবেক এপিপি এ এন এম মহিনের বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, গত বছরের ৩ আগস্ট কুমিল্লা পুলিশ লাইনস এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় ২০২৪ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন কুমিল্লা মহানগর শাখার আন্দোলনের সংগঠক মো. ইনজামুল হক রানা। মামলায় কুমিল্লার সাবেক সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারসহ ২৬১ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২০০ জনকে আসামি করা হয়। আসামিদের মধ্যে ২৬ জন কুমিল্লা আদালতের আইনজীবী।
মামলার শুনানিকালে আদালত চত্বরে উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। তারা আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে স্লোগান দেন। শুনানি শেষে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে চার আইনজীবীকে প্রিজনভ্যানে করে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়ার সময় উত্তেজিত জনতা ডিম ছুড়ে প্রতিবাদ জানায়।
এ বিষয়ে কুমিল্লা আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) কাইমুল হক রিংকু বলেন, “উচ্চ আদালতের জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় ২৬ জন আসামি আইনজীবীর মধ্যে ২৪ জন আদালতে হাজির হন। বিচারক চারজনের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন এবং দুই পলাতক আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।” তিনি আরও বলেন, “এই মামলায় ছাত্র-জনতার ওপর বর্বরোচিত হামলার ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে আমরা আদালতের কাছে আবেদন জানিয়েছি।”
