বিয়াম ভবনের বিস্ফোরণ: রহস্য এখনও অমীমাংসিত

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ০৬ মার্চ ২০২৫ ০১:৪৬ অপরাহ্ণ   |   ৮৯ বার পঠিত
বিয়াম ভবনের বিস্ফোরণ: রহস্য এখনও অমীমাংসিত

ঢাকা প্রেস নিউজ

 

রাজধানীর নিউ ইস্কাটনে অবস্থিত বিসিএস প্রশাসন কল্যাণ সমিতি (বিয়াম ফাউন্ডেশন) ভবনে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা এখনও রহস্যে ঢাকা। সেদিন প্রকৃতপক্ষে কী ঘটেছিল, তা উদঘাটনের চেষ্টা করছে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস।
 

দুর্ভাগ্যজনকভাবে, বুধবার বিকেলে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান দগ্ধ গাড়িচালক ফারুক মীর (৪০)। তিনি ২৭ ফেব্রুয়ারি রাতে বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ হন। একই ঘটনায় সেদিনই প্রাণ হারান বিয়ামের অফিস সহকারী আবদুল মালেক খান।
 

ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগের উপপরিচালক ছালেহ্ উদ্দিন জানান, ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে, তবে সেটি এসি বিস্ফোরণ, নাকি অন্য কোনো কারণে হয়েছে, তা তদন্তের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে। তিনি জানান, প্রাথমিক পর্যায়ে নাশকতার কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।
 

এদিকে পুলিশও এখনই নির্দিষ্ট কোনো তথ্য প্রকাশ করতে নারাজ। হাতিরঝিল থানার ওসি মোহাম্মদ রাজু জানান, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে সন্দেহভাজন একজনকে শনাক্ত করা হয়েছে এবং তাকে আইনের আওতায় আনার প্রচেষ্টা চলছে।
 

বিস্ফোরণের দিন পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছিল, এটি এসি বিস্ফোরণজনিত অগ্নিকাণ্ড, যা বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে হতে পারে বলে ধারণা করা হয়েছিল। তবে পরবর্তী তদন্তে বিষয়টি আরও খতিয়ে দেখার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।
 

বিয়াম কর্তৃপক্ষ তাদের এক বিবৃতিতে জানায়, বিস্ফোরণের আগে রাত আড়াইটার দিকে মাস্ক ও ক্যাপ পরা এক যুবক ভবনে প্রবেশ করেন, যা সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়ে। বিস্ফোরণের পর তাকে ভবন থেকে বের হয়ে যেতে দেখা যায়। বিয়ামের ধারণা, এটি একটি পরিকল্পিত নাশকতা হতে পারে।
 

জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন শাওন বিন রহমান জানান, ফারুকের শরীরের ৪৭ শতাংশ দগ্ধ ছিল, যা শুরু থেকেই আশঙ্কাজনক ছিল। বুধবার তাঁর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি ঘটে এবং বিকেল ৪টার দিকে তিনি মারা যান।
 

ফারুকের ছোট ভাই তোফায়েল মীর জানান, তাঁদের বাড়ি ভোলার দক্ষিণ আইচা থানার নজরুল নগর গ্রামে। বাবা মফিজ মীরের ছেলে ফারুক মাস্টার রোলে বিয়াম কার্যালয়ে সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা মোশারফ হোসেনের গাড়িচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি বিয়াম ভবনেই বসবাস করতেন। এর আগে তিনি প্রায় ১৫ বছর ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গাড়িচালক ছিলেন। তাঁর স্ত্রী ফারজানা আক্তার ফাহিমা, এক মেয়ে ও দুই ছেলে গ্রামের বাড়িতে থাকেন।
 

এ ঘটনার জেরে ১ মার্চ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক বিবৃতিতে দাবি করেন, বিয়াম ভবনের বিস্ফোরণ একটি বোমা হামলা। তবে পরে তিনি স্বীকার করেন যে, 'ভুল তথ্যের ভিত্তিতে' বিবৃতি দেওয়ায় তিনি দুঃখিত।
 

ঘটনার প্রকৃত কারণ এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে তদন্ত চলছে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সত্য উদঘাটনে সচেষ্ট রয়েছে।