চেয়ারম্যান অপসারণ ও বদলি আদেশ বাতিলের দাবিতে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের আন্দোলন
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের অপসারণ এবং রাজস্ব সংস্কার কমিটির বাতিলসহ কয়েকটি দাবি আদায়ে আগামী ২৮ জুন থেকে সারাদেশের কর অঞ্চল, ভ্যাট কমিশনারেট এবং কাস্টম হাউসগুলোতে লাগাতার 'কমপ্লিট শাটডাউন' কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ।
আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনবিআর ভবনের নিচে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন পরিষদের সভাপতি ও অতিরিক্ত কমিশনার হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার এবং মহাসচিব ও অতিরিক্ত কর কমিশনার সেহেলা সিদ্দিকা।
২৭ জুনের মধ্যে প্রতিহিংসামূলক ও নিপীড়নমূলক বদলি আদেশ বাতিল
এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ
রাজস্ব ব্যবস্থাকে স্থিতিশীল রাখার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এসব দাবি বাস্তবায়ন না হলে ২৮ জুন থেকে আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ব্যতীত কর, ভ্যাট ও কাস্টমসের সব দপ্তরে অনির্দিষ্টকালের জন্য শাটডাউন চলবে।
এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার সকালে ঢাকায় এনবিআরের বিভিন্ন দপ্তরের সহস্রাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারী রাজস্ব ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি ও কলম বিরতিতে অংশ নেন। সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলে এই কর্মসূচি। অনেক কর্মকর্তাকে এ সময় কাফনের কাপড় পরে প্রতিবাদ জানাতে দেখা যায়।
আন্দোলনের মধ্যেই গতকাল এনবিআরের আয়কর অনুবিভাগের পাঁচ কর্মকর্তাকে তাৎক্ষণিক বদলি করা হয়, যা পরিষদের পক্ষ থেকে ‘প্রতিহিংসা ও নিপীড়নের অংশ’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। পরিষদের দাবি অনুযায়ী, এসব আদেশ সোমবারের মধ্যেই বাতিল না হলে মঙ্গলবার (২৫ জুন) থেকে ঢাকাসহ সারাদেশে কর, কাস্টমস ও ভ্যাট দপ্তরে অবস্থান ও কলম বিরতি চলবে।
ঢাকায় এই কর্মসূচি চলবে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত। ঢাকার বাইরে কর্মকর্তারা নিজ নিজ দপ্তরে কর্মসূচি পালন করবেন এবং এনবিআর চেয়ারম্যান ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের বিরুদ্ধে ঘৃণা প্রকাশ করবেন।
২৭ জুনের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে ২৮ জুন শনিবার থেকে লাগাতার ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ শুরু হবে, যেখানে কাস্টমস, ভ্যাট এবং আয়করের সব দপ্তর কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। শুধুমাত্র আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা এই কর্মসূচির আওতার বাইরে থাকবে।
সরকার ১২ মে এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে এনবিআর ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) বিলুপ্ত করে ‘রাজস্ব নীতি বিভাগ’ ও ‘রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ নামে দুটি নতুন বিভাগ গঠন করে। এর পর থেকেই এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন। এখন আন্দোলনের মূল কেন্দ্রে রয়েছে এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবি।
পরিষদের অভিযোগ, চেয়ারম্যান বদলির নীতিমালা না মেনে প্রতিহিংসামূলকভাবে কর্মকর্তাদের বদলি করছেন এবং প্রশ্নবিদ্ধ ব্যক্তিদের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দিচ্ছেন, যা রাজস্ব ব্যবস্থাপনার স্বচ্ছতা ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি।