ফরিদপুরের ভাঙ্গায় সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাস ও পুলিশের দায়ের করা মামলার প্রতিবাদে আন্দোলনকারীরা ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয় এবং উপজেলা অফিসার্স ক্লাবে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ চালিয়েছে।
একই সময় তারা ভাঙ্গা থানা, ট্রাফিক পুলিশ কার্যালয় ঘেরাও করে এবং পুলিশের একাধিক গাড়ি ও সেনাবাহিনীর এপিসি লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। আন্দোলনকারীদের হামলায় সংবাদ সংগ্রহে থাকা বেশ কয়েকজন সাংবাদিক আহত হয়েছেন এবং তাদের মুঠোফোন কেড়ে নেওয়া হয়েছে।
সোমবার দুপুর ১টার পর ভাঙ্গা উপজেলা সদরের বিভিন্ন স্থানে এই সহিংসতা ঘটে। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন।
আন্দোলনকারীরা উপজেলা পরিষদে দায়িত্ব পালনকালে মাইটিভির সাংবাদিক সারোয়ার হোসেনকে কুপিয়ে জখম করে। যমুনা টিভির ভাঙ্গা প্রতিনিধি আব্দুল মান্নানসহ আরও কয়েকজন সাংবাদিকও আহত হন এবং বর্তমানে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এর আগে রোববার ভাঙ্গার ইউএনও মিজানুর রহমানের সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা উপস্থিত থাকায় আন্দোলনকারীরা তাদের দালাল আখ্যা দেন। এরপর সোমবার সাংবাদিকরা সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়।
অবরোধ কর্মসূচি ভোরে বন্ধ থাকলেও সকাল সাড়ে ১০টার পর আন্দোলনকারীরা পুনরায় সড়ক অবরোধ শুরু করে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের বাধা দিলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। অল্পসংখ্যক পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় ভাঙ্গা মডেল মসজিদে আশ্রয় নেন। কিছু সময় পরে তারা থানায় চলে যান।
দুপুর ১টার পর ভাঙ্গা উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার কয়েক হাজার মানুষ একযোগে বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালায়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মিজানুর রহমান বলেন, “আমরা কার্যালয় থেকে নিরাপদ স্থানে আছি। কারও ওপর সরাসরি হামলার ঘটনা ঘটেনি। তবে ইউএনও কার্যালয় এবং নির্বাচন কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ হয়েছে।” তিনি আপাতত সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।
অন্যদিকে, ভাঙ্গা থানা ও ট্রাফিক পুলিশ কার্যালয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং কর্মকর্তারা নিরাপদ আশ্রয়ে আছেন বলে জানা গেছে। তবে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।