প্রকাশকালঃ
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৬:১৮ অপরাহ্ণ ২২৯ বার পঠিত
নানান কারণে পুরুষের মাথা থেকে চুল পড়ে টাক হয়ে যায়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই জিনগত কারণে ছেলেদের চুল পড়ে। পরিবারে কারও চুলপড়ার ইতিহাস থাকলে পুরুষেরা বয়সের সঙ্গে সঙ্গে চুল পড়ার ঝুঁকিতে থাকেন। জিনগত কারণে চুল হারালে তাকে বলে অ্যান্ড্রোজেনিক অ্যালোপেসিয়া। আরও কোন কোন কারণে ছেলেদের মাথায় টাক পড়ে, জানাচ্ছেন শোভন মেকওভারের কসমেটোলজিস্ট শোভন সাহা ও সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যাপক এস এম বখতিয়ার কালাম।
অনেক সময় অসুস্থতা কিংবা ওষুধ গ্রহণের কারণে চুল পড়তে পারে। থাইরয়েডের সমস্যা, স্ক্যাল্প বা ত্বকের রোগ কিংবা চুল টেনে তোলার বদভ্যাস বা ট্রাইকোটিলোম্যানিয়া হলেও চুল পড়ে যায়। ক্যানসার, দুশ্চিন্তা, হৃদ্রোগ কিংবা আর্থ্রাইটিস, চর্মরোগ, খুশকি, ঘাম, অ্যান্ড্রোজেনিক হরমোনের কারণে অনেকের মাথায় টাক পড়ে। আবার দুশ্চিন্তা, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক প্রসাধনী ব্যবহার করার কারণেও কিন্তু চুল পড়ে নিয়মিত।
অনেক জায়গাতেই এখন টাক মাথায় নতুন চুল ওঠার সেবা দেওয়া হয়ে থাকে। চুলের টিস্যু ও চুল নানান রোগের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকলে চুলের ট্রিটমেন্ট নেওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্ক থাকতে হবে। এ ধরনের রোগাক্রান্ত স্থানে চুল গজানোর হার কম হয়। শরীরের পুষ্টিহীনতার কারণে নানান রোগ দেখা দিতে পারে। এতে চুল ওঠা বন্ধ হয়ে যাওয়ার প্রাকৃতিক উপায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়। এ ক্ষেত্রে কোর্টিওকসটেরয়েড বা টপিক্যাল ইমিউনোথেরাপির মাধ্যমে চুলের ট্রিটমেন্ট নেওয়া যেতে পারে। তবে মাথার তালুতে নতুন চুল ওঠানোর যেকোনো চিকিৎসা নেওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে চুলের ট্রিটমেন্টের খোঁজ নিতে হবে। জেনে রাখুন, রোগাক্রান্ত ত্বক চুলের ট্রিটমেন্টের জন্য বড় সমস্যা তৈরি করে। মাথার ত্বকের সমস্যা থাকলে সেখানে ট্রিটমেন্ট করানোর কঠিন হতে পারে। অটো ইমিউন ডিজিজ, ছত্রাকের সংক্রমণ কিংবা মাথার ত্বক-সংক্রান্ত যেকোনো রোগ বেশি থাকলে ট্রিটমেন্ট করানো কঠিন হয়।
এ ছাড়া অ্যান্ড্রোজেনিক হরমোন-সংক্রান্ত সমস্যায় ট্রিটমেন্ট কাজে না-ও আসতে পারে। এই সমস্যা যাঁদের আছে, সেসব পুরুষের টাক দেখা যায়। কারণ, এই হরমোন পুরুষের শরীরে বেশি থাকে। এই হরমোনের প্রভাব বেশি হলে ছেলেদের চুলে টাক পড়ে বেশি।
আমাদের শারীরিক স্বাস্থ্য কিন্তু চুলের ওপর প্রভাব ফেলে। এ জন্য আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ছয়টি বিষয়কে গুরুত্ব দিতেই হবে। প্রোটিন, শর্করা, চর্বি, খনিজ ও ভিটামিন পরিমিত পরিমাণে রাখতে হবে। স্বাস্থ্যকর খাবার না খেলে দীর্ঘ মেয়াদে চুল পড়ার মতো সংকট দেখা দেয়। এখন তরুণেরা প্রচুর চিনি ও চর্বিযুক্ত খাবার খান। প্রাকৃতিক খাবার একেবারেই যেন খেতে চান না। এসব কারণে চুল পড়ার হার তরুণদের মধ্যে বেশি দেখা যায়।
অনেক সময় আগুনে পুড়ে গেলে বা দুর্ঘটনার কারণে মাথার ত্বক আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে গভীর ক্ষত মাথায় থেকে যায়। তখন স্বাভাবিকভাবে চুল ওঠে না। মাথায় একজিমা বা সোরিয়াসিস ধরনের রোগ থাকে। চিকিৎসার মাধ্যমে এ ধরনের রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়। এ ধরনের ত্বকের সমস্যা থাকলে ট্রিটমেন্ট নেওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। অনেক ছেলেদেরই মাথার ত্বকে অ্যালার্জি থাকে। বিভিন্ন চুলের প্রসাধনী পণ্য ব্যবহারের কারণে অ্যালার্জির মাত্রা বাড়তে পারে। ডার্মাটোলজিস্টের সঙ্গে পরামর্শ করে মাথার ত্বকের উপযোগী প্রসাধনী ব্যবহারে মনোযোগ দিতে হবে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের মাথার চুল হালকা হয়ে যায়। চুলের ঘনত্বও কমতে থাকে। মনে রাখতে হবে, এ ক্ষেত্রে জোর করে ট্রিটমেন্ট করলেও উপকার পাওয়া যায় না।