মুজিববর্ষ উদযাপনে ১০ হাজারের বেশি ম্যুরাল ও ভাস্কর্য নির্মাণে ৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়

প্রকাশকালঃ ১১ নভেম্বর ২০২৪ ০১:২১ অপরাহ্ণ ৬৫৫ বার পঠিত
মুজিববর্ষ উদযাপনে ১০ হাজারের বেশি ম্যুরাল ও ভাস্কর্য নির্মাণে ৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়

ঢাকা প্রেস নিউজ

 

পতিত আওয়ামী লীগ সরকার মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে সারাদেশে ১০ হাজারেরও বেশি ম্যুরাল ও ভাস্কর্য নির্মাণ করে, যার জন্য প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়। মুজিববর্ষ উদযাপনের জন্য দুই বছরের ধরে নানা রকমের জমকালো আয়োজন করা হয়। তবে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এই বিপুল ব্যয়কে অপ্রয়োজনীয় ও অপচয় বলে মনে করছে। মুজিববর্ষ উদযাপনে কোন মন্ত্রণালয় কত টাকা ব্যয় করেছে তার হিসাবও প্রস্তুত করা হচ্ছে।
 

বিশিষ্টজনেরা মনে করছেন, জনগণের করের অর্থ জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যবহার করা উচিত। তারা মনে করেন মুজিববর্ষ উদযাপন এবং ম্যুরাল ও ভাস্কর্য নির্মাণে যে অপচয় এবং দুর্নীতি হয়েছে, তা আইনের আওতায় আনা উচিত।
 

ময়মনসিংহ জেলা পরিষদে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নির্মাণে খরচ হয়েছে ১ কোটি ৭ লাখ টাকার বেশি এবং রাঙ্গামাটির উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে নির্মিত ম্যুরালটির ব্যয় হয়েছে ৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। প্রতিটি জেলা পরিষদে এমন ম্যুরাল নির্মাণে খরচ হয়েছে ৮ লাখ থেকে ৩ কোটি টাকা পর্যন্ত।
 

২০২১ সালে পুলিশের এক প্রতিবেদনে উঠে আসে, সারাদেশে প্রায় ১ হাজার ২২০টি ম্যুরাল ও ভাস্কর্য নির্মিত হয়েছে। এছাড়া, বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান, জেলা-উপজেলা এবং ইউনিয়ন পরিষদ মিলিয়ে ম্যুরাল ও ভাস্কর্যের সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ১০ হাজারে। এসব নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা।
 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবু ইউসুফ বলেন, যে কোনো ব্যয়ে ট্যাক্স পেয়ারদের অর্থের সদ্ব্যবহার হওয়া উচিত, যাতে তা জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যবহৃত হয়। সরকারি যেকোনো ব্যয় জনস্বার্থে হওয়া জরুরি।
 

এই ভাস্কর্য ও ম্যুরাল নির্মাণের জন্য আলাদা কোনো প্রকল্প নেওয়া হয়নি; বরং স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে সরকারি অর্থ ব্যবহার করে এই কাজগুলো করা হয়েছে।
 

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপব্যবহারের স্পষ্ট উদাহরণ হিসেবে এ খাতটি দেখা যাচ্ছে। এসব ব্যয়ে কোনো প্রকল্প গ্রহণ বা জবাবদিহিতার সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি, প্রতিযোগিতামূলক প্রক্রিয়াও ছিল না। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এসব অপব্যবহারের সাথে যারা যুক্ত তাদের সবাইকে জবাবদিহির আওতায় আনা হবে।
 

এদিকে বর্তমান সরকার মুজিববর্ষ উদযাপনে কত টাকা অপচয় হয়েছে, সে বিষয়ে অনুসন্ধান করতে আগ্রহী। এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, মুজিববর্ষের কর্মকাণ্ড ও ব্যয় সংক্রান্ত তথ্য ডকুমেন্ট করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং কোন মন্ত্রণালয় কত টাকা খরচ করেছে তার তালিকা প্রস্তুত করা হবে।