গ্রিসের দক্ষিণাঞ্চলীয় উপকূলে নৌকাডুবির ঘটনায় নিহত ৭৯
প্রকাশকালঃ
১৫ জুন ২০২৩ ০২:৩০ অপরাহ্ণ ১৭৩ বার পঠিত
গ্রিসের দক্ষিণাঞ্চলীয় উপকূলে অভিবাসন প্রত্যাশীদের বহনকারী একটি মাছ ধরা নৌকা ডুবে অন্তত ৭৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। শতাধিক জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে নৌকাটিতে থাকা আরও কয়েকশ মানুষ নিখোঁজ রয়েছে। গ্রিসের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানায় বিবিসি।
বেঁচে যাওয়া লোকজন নৌকাটিতে ৫০০ থেকে ৭০০ আরোহী ছিল বলে জানিয়েছেন। দেশটির সরকার এই ঘটনাকে গ্রিসের অন্যতম বৃহত্তম ‘শরণার্থী ট্র্যাজেডি’ বলে উল্লেখ করেছে। এজন্য তিন দিনের শোক ঘোষণা করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, নৌকাটি ডুবেছে গ্রিসের পাইলোস শহর থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে।
গ্রিসের কোস্টগার্ড বলেছে,মঙ্গলবার দিনশেষে আন্তর্জাতিক জলসীমায় নৌকাটি দেখা যায় ইইউ সীমান্ত সংস্থা ফ্রন্টেক্সের একটি বিমান থেকে। নৌকাটিতে থাকা যাত্রীদের কেউই লাইফ জ্যাকেট পরা ছিল না এবং সাহায্য নিতেও অস্বীকৃতি জানিয়েছিল।
গ্রিসের জাহাজ চলাচল মন্ত্রণালয়ের সরবরাহ করা টাইমলাইন উদ্ধৃত করে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম ইআরটি জানিয়েছে, কর্তৃপক্ষ স্যাটেলাইট ফোনের মাধ্যমে বেশ কয়েকবার ওই নৌকাটির সঙ্গে যোগাযোগ করে সাহায্যের প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু সেখান থেকে বারবার বলা হয়েছে: `আমরা ইতালিতে যাওয়া ছাড়া আর কিছুই চাই না।'
এর কয়েক ঘণ্টা পর স্থানীয় সময় রাত প্রায় ১টার দিকে নৌকা থেকে কেউ একজন গ্রিসের কোস্টগার্ডকে জানায়, তাদের জলযানের ইঞ্জিন বিকল হয়ে গেছে। এর কিছুক্ষণ পরই নৌকাটি উল্টে যায় এবং ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে ডুবে যায়।
এরপরই তল্লাশি ও উদ্ধার অভিযান শুরু করা হয়, কিন্তু জোরালো বাতাস পরিস্থিতি জটিল করে দেয়। সাগরে সমস্যায় পড়া অভিবাসন প্রত্যাশীদের জন্য জরুরি হেল্পলাইন ‘অ্যালার্ম ফোন’ বলেছে, `কোনো সাহায্য পাঠানোর কয়েক ঘণ্টা আগে থেকেই গ্রিসের কোস্টগার্ড জানতো জলযানটি বিপদে আছে।'
ধারণা করা হচ্ছে, নৌকাটি লিবিয়া থেকে ইতালি যাচ্ছিল আর যাত্রীদের বেশিরভাগেরই বয়স ছিল ২০ এর আশেপাশে। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, তারা কয়েকদিন ধরে ভ্রমণ করছিল এবং মঙ্গলবার বিকালে মাল্টার একটি কার্গো জাহাজ থেকে তাদের খাবার ও পানি সরবরাহ করা হয়েছিল।
পাইলোসের আঞ্চলিক স্বাস্থ্য পরিচালক ইয়ানিস কারভেইলিস নজিরবিহীন শোচনীয় ঘটনা ঘটতে পারে বলে সতর্ক করে বলেছেন,`নৌকাটিতে ধারণক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি মানুষ ছিল।'
নৌকাডুবির এ ঘটনায় যাদের মৃত্যু হয়েছে তারা কোন কোন দেশের নাগরিক তা এখনো প্রকাশ করা হয়নি। উদ্ধার পাওয়া জীবিতদের কালামাতা শহরে নিয়ে রাখা হয়েছে। তাদের অনেককে হাইপোথারমিয়া ও অন্যান্য ছোটখাট জখমের জন্য হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
গ্রিসের প্রেসিডেন্ট কাতেরিনা সেকেলারোপুলু উদ্ধারপাওয়া কিছু অভিবাসন প্রত্যাশীকে দেখে গেছেন এবং যারা ডুবে গেছেন তাদের জন্য গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।