প্রকাশকালঃ
২০ মার্চ ২০২৪ ০১:১৩ অপরাহ্ণ ৩২৩ বার পঠিত
পরোপকার, মানবসেবা ও দান-সদকা অতি উত্তম কাজ। কিন্তু তা হতে হবে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। যথাসম্ভব গোপনে দান করতে হবে। কোরআনে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘তোমরা যদি প্রকাশ্যে দান করো, তা ভালো। আর যদি গোপনে দরিদ্রদের দাও, তাহলে তা বেশি ভালো। এমনটি করলে তোমাদের বহু পাপ মুছে দেওয়া হবে। তোমরা যা-ই করো, আল্লাহ সে সম্পর্কে অবহিত।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ২৭১)
দান হতে হবে শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই দান-খয়রাত কোরো।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ২৭২)
দান হতে হবে নিঃস্বার্থে
দান-সদকায় কোনো স্বার্থ ও বৈষয়িক সুবিধা থাকলে তা দানের মহিমা ক্ষুণ্ন করে। মহান আল্লাহ সত্কর্মশীলদের পরিচয় দিয়ে বলেন : ‘তারা খাদ্যের প্রতি আসক্তি থাকা সত্ত্বেও মিসকিন, এতিম ও বন্দিকে খাদ্য দান করে। তারা বলে, আমরা তো আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে তোমাদের খাদ্য দান করি।
আমরা তোমাদের থেকে কোনো প্রতিদান চাই না এবং কোনো কৃতজ্ঞতাও চাই না। আমরা আমাদের রবের পক্ষ থেকে এক ভয়ংকর ভীতিপ্রদ দিবসের ভয় করি। সুতরাং সেই দিবসের অকল্যাণ থেকে আল্লাহ তাদের রক্ষা করলেন এবং তাদের প্রদান করলেন উজ্জ্বলতা ও উত্ফুল্লতা।’ (সুরা : দাহর, আয়াত : ৫-১১)
লোক-দেখানো দান কবুল হয় না
দান শুধু তখন ‘আল্লাহর পথে ব্যয়’ বলে কবুল হবে, যখন দানের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের স্বার্থ উদ্ধারের চিন্তা থাকবে না, আত্মপ্রচার ও প্রদর্শনেচ্ছা থাকবে না, খোঁটা দেওয়া ও কষ্ট দেওয়ার চেষ্টা থাকবে না এবং আত্মপ্রচার করা যাবে না, বরং দানের সময় মন-মগজে আল্লাহর ভালোবাসা ও সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্য ছাড়া অন্য কোনো চিন্তা না থাকলেই ওই দান কবুল হবে আশা করা যায়।
পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘(আর আল্লাহ সেসব মানুষকে পছন্দ করেন না) যারা লোক-দেখানোর জন্য নিজেদের অর্থসম্পদ ব্যয় করে এবং আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান রাখে না। আসলে শয়তান যার সাথি হলো, সে অত্যন্ত নিকৃষ্ট সাথিই গ্রহণ করল।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ৩৮)
লোক-দেখানো কোনো ইবাদত কবুল হয় না
মানুষকে দেখানোর জন্য বা প্রচারের উদ্দেশে কোনো ইবাদত করলে তা কবুল হয় না। এমন লোকদের নিন্দা করে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘ধ্বংস সেসব নামাজির জন্য, যারা তাদের নামাজের ব্যাপারে উদাসীন, যারা দেখানো জন্য তা (সালাত আদায়) করে আর যারা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস দেওয়া থেকে বিরত থাকে।’ (সুরা : মাউন, আয়াত : ৪-৭)
খ্যাতির মোহ ধ্বংস ডেকে আনে
খ্যাতির মোহ মানুষকে পার্থিব জীবনে বিপদগ্রস্ত এবং পরকালীন জীবনে লাঞ্ছনার মুখোমুখি করে। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, যে ব্যক্তি খ্যাতি লাভের জন্য পোশাক পরে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাকে সেরূপ পোশাক পরাবেন। অতঃপর তাতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হবে। (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৪০২৯)
প্রশংসা পাওয়ার জন্য দান করলে সওয়াব নেই
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত এক দীর্ঘ হাদিসে এমন তিনজন ব্যক্তির আলোচনা এসেছে, যারা পৃথিবীতে অনেক ভালো কাজ করেও পরকালে তাদের প্রাপ্তি ছিল শূন্য। এই তিন ব্যক্তির প্রথমজন খ্যাতির মোহে জিহাদ করে শহীদ হয়েছিল, দ্বিতীয়জন খ্যাতির মোহে জ্ঞানার্জন করেছিল এবং তৃতীয়জন খ্যাতির মোহে দান করেছিল। তাদের আল্লাহ বলবেন, ‘তোমাদের প্রত্যাশা ছিল মানুষের কাছে খ্যাতি আর তোমরা তা পেয়েছ। সুতরাং আজ আমার কাছে তোমাদের প্রাপ্তি শূন্য।’ (নাসায়ি, হাদিস : ৩১৩৭)