প্রধানমন্ত্রী পদে একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ ১০ বছর দায়িত্ব পালন করতে পারবেন—এমন বিধান সংবিধানে যুক্ত করার বিষয়ে নীতিগতভাবে একমত হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। তবে সংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহে নিয়োগ দেওয়ার জন্য ‘জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল’ (এনসিসি) গঠনের প্রস্তাবকে দলটি সমর্থন করছে না। বিএনপির শীর্ষ নেতাদের মতে, এটি সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
বিষয়টি নিয়ে গত মঙ্গলবার রাতে গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনা হয়। বৈঠকে ভার্চুয়ালি সভাপতিত্ব করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
সূত্র জানায়, বৈঠকে স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন সংলাপ ও আলোচনার সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন। বিশেষ করে গত রোববার কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী পদের মেয়াদ নির্ধারণ সংক্রান্ত বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণভাবে আলোচিত হয়।
আলোচনায় অংশগ্রহণকারী দলগুলোর মধ্যে একজন কত ‘বার’ কিংবা কত ‘মেয়াদ’ প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন—এ নিয়ে মতানৈক্য দেখা দেয়। কেউ সংসদের দুই ‘পূর্ণ মেয়াদ’-এর কথা বলেন, আবার কেউ মত দেন যে মেয়াদ যতদিনই হোক না কেন, একজন ব্যক্তি যেন সর্বোচ্চ দু’বার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে পারেন।
এই বিতর্কের প্রেক্ষিতে সালাহউদ্দিন আহমেদ প্রস্তাব করেন, “বার” কিংবা “মেয়াদ”-এর বিভ্রান্তির বদলে একজন ব্যক্তি তার জীবদ্দশায় সর্বোচ্চ কত বছর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন, তা নির্ধারণ করাই হবে যৌক্তিক।
এরই ধারাবাহিকতায় স্থায়ী কমিটি সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নেয়—একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ ১০ বছর (দুই পূর্ণ মেয়াদ) প্রধানমন্ত্রী পদে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।
এছাড়া বৈঠকে আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিএনপির অবস্থান স্পষ্ট করা হয়। নারীদের জন্য সংসদে ১০০টি সংরক্ষিত আসন রাখার এবং একটি ১০০ সদস্যবিশিষ্ট উচ্চকক্ষ (দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ) গঠনের প্রস্তাবেও দলটি ইতোমধ্যে একমত হয়েছে।
তদুপরি, প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিচার বিভাগের জ্যেষ্ঠতম দুইজনের মধ্য থেকে যেকোনো একজনকে মনোনয়ন দেওয়ার নীতিতে দলটির সম্মতি রয়েছে।