নিজস্ব প্রতিবেদক:-
ময়মনসিংহের তারাকান্দায় একটি পরিত্যক্ত বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার হওয়া অজ্ঞাতনামা নারীর গলিত মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। নিহতের নাম সুফিয়া খাতুন (৩৪)। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে রোহান মিয়া (২৫) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই, যার কাছ থেকে নিহতের মোবাইল ফোনও উদ্ধার করা হয়েছে।
নিহত সুফিয়া খাতুনের বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলপুর থানার পাতিলগাঁও গ্রামে। তিনি কেরামত আলীর মেয়ে। গত ২৯ জুন সন্ধ্যায় নিখোঁজ হওয়ার পর তার ছোট ভাই ইলিয়াস তারাকান্দা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
এরপর ৩ জুলাই সকাল ১০টার দিকে দাদরা গ্রামের একটি পরিত্যক্ত বাড়ির সেপটিক ট্যাংকে এক নারীর গলিত মরদেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। খবর পেয়ে থানা পুলিশ, র্যাব, সিআইডি ও পিবিআই ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত শুরু করে।
পিবিআই ময়মনসিংহ জেলার পুলিশ সুপার মো. রকিবুল আক্তার জানান, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় মাত্র এক দিনের মধ্যেই মরদেহের পরিচয় ও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয় পিবিআই।
৫ জুলাই রাত সাড়ে ৩টার দিকে ফুলপুর থানার বেপারী পাড়া এলাকা থেকে রোহান মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় নিহত সুফিয়ার মোবাইল ফোন।
পিবিআই জানায়, রোহান তার এক বন্ধুর কাছ থেকে সুফিয়ার মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। ২৯ জুন সুফিয়া তারাকান্দা বাজারে ছাগল বিক্রি করতে এলে রোহান তার সঙ্গে দেখা করে এবং সারা দিন বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাফেরা করে। রাত আনুমানিক ৯টার দিকে রোহান তাকে গেসু মিয়ার একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে শারীরিক সম্পর্কের একপর্যায়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। সুফিয়া রোহানকে চড় মারলে সে ক্ষিপ্ত হয়ে ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে তাকে হত্যা করে।
পরে হত্যাকাণ্ড গোপন করতে মরদেহটি পাশের সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেয় এবং সঙ্গে থাকা ৪ হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যায়।
পিবিআই সুপার রকিবুল আক্তার বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে—রোহান এর আগেও একাধিক অপরাধে জড়িত ছিল, এমনকি পূর্বে একটি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গেও তার সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি এই ঘটনায় আরও কেউ জড়িত ছিল কিনা, সে বিষয়েও তদন্ত চলছে।