জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ না নিয়েও ‘জুলাইযোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া ১০৪ জনকে ভুয়া হিসেবে শনাক্ত করেছে সরকার। এছাড়া যাদের নামে দ্বৈত গেজেট প্রকাশিত হয়েছে, তাদেরসহ মোট ১২৭ জনের গেজেট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, সংশ্লিষ্ট জেলা কমিটির যাচাই-বাছাই ও সুপারিশের ভিত্তিতেই এই তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে।
প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়—
ময়মনসিংহ বিভাগে: ২০ জন ভুয়া ও ১ জনের নামে দ্বৈত গেজেট
সিলেট বিভাগে: ২৬ জন ভুয়া ও ১ জন দ্বৈত গেজেট
চট্টগ্রাম বিভাগে: ৩৪ জন ভুয়া ও ৪ জন দ্বৈত গেজেট
খুলনা বিভাগে: ৫ জন ভুয়া ও ৪ জন দ্বৈত গেজেট
রংপুর বিভাগে: ২ জন ভুয়া
ঢাকা বিভাগে: ৭ জন ভুয়া ও ৭ জন দ্বৈত গেজেট
রাজশাহী বিভাগে: ৯ জন ভুয়া ও ৪ জন দ্বৈত গেজেট
বরিশাল বিভাগে: ২ জনের নামে দ্বৈত গেজেট
ময়মনসিংহ বিভাগে ভুয়া হিসেবে চিহ্নিত ২০ জনের মধ্যে রয়েছেন: সৈয়দ তরিকুল ইসলাম, মোহাম্মদ নুরুল আমিন, তানভীর আহমেদ, আছিয়া খাতুন, রুহুল আমিন, আমি হাসান রুপম, আকিব তালুকদার, সুজন মিয়া, ইমন শাহারিয়া, আশরাফুল ইসলাম জাসাম, মুশফিকুর রহমান, সজিব, সোহাগ মিয়া, রুবেল মিয়া, জসিম উদ্দিন, রাব্বি হাসান শ্রীনি, আজহারুল ইসলামিক, আবু ফরিদ আহামেদ, আফরিনা জান্নাত ও মাজহারুল ইসলাম।
ঢাকা বিভাগে ৭ জন ভুয়া ও ৭ জন দ্বৈত গেজেটধারীর মধ্যে রয়েছেন: রাসেল, খন্দকার রাজ, রাফিউল নাঈম, রাশেদুল ইসলাম অনিক, আব্দুল্লাহ আল রাহাত, মঞ্জমুল আলম জিসান, সাইফুল ইসলাম শুভ, রিয়াজুল হাসান, বেলায়াত হোসেন শাহীন, মুজবর মৃধা, জিহাদ, রফিকুল সরদার, মাসুদুর রহমান, মোছা. রুমি ও রিয়াজ শরীফ।
চট্টগ্রাম বিভাগে ভুয়া জুলাইযোদ্ধাদের মধ্যে রয়েছেন: মো. শাগর, আবদুল্লাহ আল নোমান, নাইম উদ্দীন শাঈদ, শরিফুল ইসলাম, শাহাদাত ইকবাজ তাহনি, তাহমিনা ইকরার তারকি, মাহাবী তাজওয়ার, জসিম উদ্দিন, আতিকুল ইসলাম, ইয়াছিন, আরফাতুল ইসলাম, ফরহাদ আলম, মোদাসাদ সাহাদ কবির এমরান, মুনজামিরুল হক চৌধুরী মামুর, পঠন চন্দ্র নাথ, মিশকাত-আলম রিয়াদ, এমরান, মাহাম্মদ সাগর, নুরুল্লাহ, সোহাম্মদ রাফি, ফয়সাল মোহাম্মদ শিয়াস, ইছনিয়া আকতার, মাঈনুদ্দীন, সাইমন, আরিফ, রাসেল, রমজান আলী, মাহিম চৌধুরী ও রিফাত বিন আল।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সম্পৃক্ত না থেকেও অনেক ব্যক্তি নিজেকে জুলাইযোদ্ধা পরিচয়ে তালিকাভুক্ত করে সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছিলেন—এমন অভিযোগ ওঠার পর সরকার তদন্ত শুরু করে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এসব ভুয়া নাম বাতিলের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বীর প্রতীক ফারুক ই আজম বলেন, যাচাই-বাছাইয়ে ভুয়া প্রমাণিতদের গেজেট বাতিলের পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে
‘ক’ শ্রেণিতে (অতি গুরুতর আহত): ৬০২ জন
‘খ’ শ্রেণিতে (গুরুতর আহত): ১,১১৮ জন
‘গ’ শ্রেণিতে (আহত): ১২,০৮০ জন
মোট ১৪,৬৩৬ জন গেজেটভুক্ত হয়েছেন। নিহত হয়েছেন ৮৪৪ জন, যার মধ্যে ৮ জনের গেজেট ইতোমধ্যেই বাতিল করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ও জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তরের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফারুক হোসেন বলেন, “যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, যাচাই-বাছাই শেষে তা প্রমাণিত হয়েছে। তাদের গেজেট বাতিল করা হবে এবং প্রয়োজনে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গেজেট বাতিলের প্রক্রিয়া চলমান।”