“বৈষম্যহীন ৯ম পে-স্কেল” ও সর্বনিম্ন ৩৫ হাজার বেতনের দাবিতে রেল কর্মচারীদের আল্টিমেটাম, কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ২৭ নভেম্বর ২০২৫ ০৩:৫৫ অপরাহ্ণ   |   ৩২ বার পঠিত
“বৈষম্যহীন ৯ম পে-স্কেল” ও সর্বনিম্ন ৩৫ হাজার বেতনের দাবিতে রেল কর্মচারীদের আল্টিমেটাম, কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি

মোঃ হানিফ মিয়া, লালমনিরহাট প্রতিনিধি:-

 

বাংলাদেশ রেলওয়ের ১১ থেকে ২০তম গ্রেডের কর্মচারীরা বেতন ও পদ-পদবীর বৈষম্য দূর করে বৈষম্যহীন ৯ম পে-স্কেল ঘোষণা এবং সর্বনিম্ন বেতন ৩৫ হাজার টাকা নির্ধারণের দাবি জানিয়ে সরকারের কাছে আল্টিমেটাম দিয়েছে। এই দাবি জানানো হয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে শ্রমিক ও কর্মচারী ঐক্য জোটের পক্ষ থেকে।
 

বুধবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে লালমনিরহাটে এক বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধনের পর ঐক্য জোটের নেতারা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার কাছে একটি স্মারকলিপি জমা দেন। স্মারকলিপিতে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে পে-কমিশনের রিপোর্ট এবং ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে ৯ম পে-স্কেলের গেজেট প্রকাশের দাবি জানানো হয়েছে।
 

স্মারকলিপিতে রেল কর্মচারীদের বর্তমান বেতন কাঠামোর বৈষম্য নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালে ঘোষিত ৮ম পে-স্কেল প্রায় ১০ বছর পূর্ণ হতে চলেছে। বর্তমান বাজারমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে ৮ হাজার ২৫০ টাকার সর্বনিম্ন বেতন নিয়ে একজন কর্মচারী ৬ সদস্যের পরিবার সহকারে মানবিক ও সামাজিক মর্যাদা বজায় রেখে জীবনযাপন করতে পারছেন না।
 

ওই জোটের নেতারা জানান, ১১-২০ গ্রেডের ১০টি গ্রেডের মধ্যে বেতনের পার্থক্য মাত্র ৪ হাজার টাকা (৮,২৫০ থেকে ১২,৫০০ টাকা), অথচ প্রথম থেকে দশম গ্রেডের কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে পার্থক্য ৬২ হাজার টাকা (১৬,০০০ থেকে ৭৮,০০০ টাকা)। বর্তমানে প্রথম ও ২০তম গ্রেডের বেতনের অনুপাত ১:১০, যা চরম বৈষম্যমূলক। তারা এই অনুপাত ১:৪ এ নামিয়ে মোট ১২ গ্রেডের ভিত্তিতে ৯ম পে-স্কেল ঘোষণা দাবি করেছেন।
 

নেতারা আরও বলেন, কুক-দারোয়ানসহ বিভিন্ন সুবিধা ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের ৩২ হাজার টাকার আর্থিক সুবিধা থাকলেও ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীরা এসব সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এছাড়া, পরিবারের ভরণপোষণ খরচ বেড়ে যাওয়ায় চলতি ভাতাসমূহের বৃদ্ধি ও কর্মকর্তাদের জন্য গাড়ী, আবাসিক সুবিধা এবং সুদমুক্ত গাড়ীর ঋণ প্রদানের দাবি তোলা হয়েছে।
 

পদ-পদবীর বৈষম্য ও কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়ে ঐক্য জোটের নেতারা বলেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরও সচিবালয় বাহিরের দপ্তর ও অধিদপ্তরের কর্মচারীদের জন্য কমন ক্যাটাগরির পদনাম বা গ্রেড পরিবর্তন হয়নি, অথচ সচিবালয়, হাইকোর্ট ও জেলা প্রশাসনের অফিসের কর্মচারীদের পদনাম ও গ্রেড পরিবর্তন করা হয়েছে। তাই তারা সমস্ত দপ্তরের কর্মচারীদের জন্য পদ-পদবী পরিবর্তনসহ এক ও অভিন্ন নিয়োগবিধি প্রণয়নের দাবিও জানিয়েছেন।
 

ঐক্য জোটের আহ্বায়ক মোঃ আনিছুর রহমান বলেন, “আমাদের ন্যায্য ও সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করতে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। যদি ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে ৯ম পে-স্কেলের গেজেট প্রকাশ না হয়, আমরা রেলসহ সকল সরকারি দপ্তরে কঠোর ও লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হব।”
 

সমাবেশ শেষে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি হস্তান্তর করেন আহ্বায়ক আনিছুর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ লুৎফর রহমান, মোঃ সাইদুর রহমান, মোঃ শামসউদ্দিন খন্দকার প্রমুখ। এর আগে রেল ভবন থেকে মিছিল বের হয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় পর্যন্ত বিভিন্ন শ্লোগান দিয়ে সরানো হয়।