ঢাকা প্রেস নিউজ
আর্থিক অনিশ্চয়তা কাটলেও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার বিষয়ে গত পাঁচ মাসের অর্জনে বাংলাদেশ ব্যাংক পুরোপুরি সন্তুষ্ট নয় বলে জানিয়েছেন ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক (ইডি) ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গত পাঁচ মাসে বাণিজ্যিক ব্যাংকের বোর্ড পুনর্গঠন, ব্যাংকিং টাস্কফোর্স গঠন, ডলার বাজারের স্থিতিশীলতা, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এই পদক্ষেপগুলোর ফলে কিছু ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া গেলেও, অনেক ফলাফল আসতে আরও সময় লাগবে। তবে পুরোপুরি অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এখনো ফিরে আসেনি, তাই বাংলাদেশ ব্যাংক খুব বেশি খুশি নয়।
তিনি আরও বলেন, যদিও আর্থিক ভীতি কেটে গেছে, তবুও অর্থনীতিতে পূর্ণ স্থিতিশীলতা এখনও আসেনি।
বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ নির্দিষ্ট কোন ব্যাংকের মাধ্যমে কত টাকা কোথায় পাচার হয়েছে, সে বিষয়ে স্পষ্ট তথ্য জানা যাবে। পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া একটি সময়সাপেক্ষ বিষয় এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলি নিরাপত্তার স্বার্থে এ ধরনের তথ্য শেয়ার করে না।
মূল্যস্ফীতি যদি কমে না আসে, তাহলে আবারও নীতি সুদহার বাড়ানো হতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমরা একাধিকবার নীতি সুদহার বৃদ্ধি করেছি। আশা করছি জানুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে। তবে যদি তা না হয়, তাহলে সুদহার আরও বাড়ানো হতে পারে। তবে ব্যবসায়ীরা এই সিদ্ধান্তে খুশি নন, কারণ অতিরিক্ত সুদ তাঁদের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায় এবং বিনিয়োগে ধীরগতির সৃষ্টি হয়। তাই শুধুমাত্র বাংলাদেশ ব্যাংক নয়, অন্যান্য সংস্থাগুলোকেও সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, বিনিয়োগ কমার জন্য শুধুমাত্র সুদের হার দায়ী নয়; অবকাঠামোগত উন্নয়ন, জ্বালানি সরবরাহ, যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং অন্যান্য বিষয়ও বিনিয়োগের বৃদ্ধির সঙ্গে সম্পর্কিত। তাই বাংলাদেশ ব্যাংক একা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সফল হতে পারবে না।
এদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত তথ্যে দেখা গেছে, বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি তলানিতে পৌঁছেছে। গত নভেম্বর মাসে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ছিল ৭.৬৬ শতাংশ, যা গত সাড়ে তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা, ঋণ বিতরণে জালিয়াতি এবং দুর্বল ব্যাংকগুলোর নতুন ঋণ প্রদান বন্ধ থাকার কারণে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।