অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে মনকে শান্ত করার অন্যতম উপায়

প্রকাশকালঃ ২৫ জুলাই ২০২৪ ০১:৩৪ অপরাহ্ণ ৫৮ বার পঠিত
অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে মনকে শান্ত করার অন্যতম উপায়

অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে অশান্ত মনকে শান্ত করে জীবন ও কাজের স্বাভাবিক গতিতে ফেরা সহজ নয়। নিজেকের মনকে শান্ত করা নিয়ে সংবাদমাধ্যমে কথা বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এডুকেশনাল অ্যান্ড কাউন্সেলিং সাইকোলজি বিভাগের কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্ট ও সহকারী অধ্যাপক রাউফুন নাহার। তিনি জানান, নিজেকে শান্ত করার অন্যতম উপায় হলো আত্মমমতার চর্চা (সেলফ কম্প্যাশন)। অর্থাৎ কঠিন সময়ে বন্ধু হয়ে নিজের পাশে থাকা, নিজেকে মমতায় ভরিয়ে তোলা। তিনটি ধাপে খুব সহজে এই চর্চা করা যায়।

 

১.নিজেকে বুঝতে হবে: কোনো ঘটনা থেকে সাময়িক উত্তেজনায় হলে সঙ্গে সঙ্গে প্রতিক্রিয়া করা থেকে বিরত থাকতে হবে। নিজের অনুভূতি খেয়াল করব। শরীরের কোথায় কেমন লাগছে সেদিকে নজর দিন। যেমন বুক ধড়ফড় করছে কি না; হাত–পা কাঁপছে কি না; মাথা, ঘাড় বা শরীরের আর কোথাও কোনো অস্বস্তি হচ্ছে কি না, গভীর মনোযোগ দিয়ে খেয়াল করব। সাময়িক এই বিরতির মূল উদ্দেশ্য হলো মস্তিষ্কের যৌক্তিক ও সমস্যা সমাধানকারী অংশকে সক্রিয় হয়ার জন্য সময় দেয়া।   
 

২. অক্সিজেন ও পানি: আমরা যখন অস্থির বা নিস্তেজ বোধ করি, তখন আমাদের শরীরে অক্সিজেন ও পানির স্বল্পতা সৃষ্টি হয়। এসব মুহূর্তে তাই অনেকেরই ঠোঁট ও গলা শুকিয়ে যায়, দমবন্ধ বোধ হয়। এ সময় পানি পান করে এবং গভীরভাবে অন্তত তিন-পাঁচ জোড়া শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ে শরীরে অক্সিজেন ও পানির ঘাটতি পূরণ করা যায়। নাক দিয়ে ধীরে ধীরে নিশ্বাস নিতে হবে এবং ছাড়ার সময় মুখ দিয়ে ধীরে ধীরে ছাড়তে হবে। গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে অসুবিধা হলে শুধু শ্বাস–প্রশ্বাসে মনোযোগ দেওয়া যেতে পারে। এটিকে বলা হয় মাইন্ডফুল ব্রিদিং। অর্থাৎ স্বাভাবিকভাবে শ্বাস-প্রশ্বাসের সময় নাকের ডগায় কেমন অনুভূতি হচ্ছে সূক্ষ্মভাবে তা খেয়াল করা। তিন-পাঁচ জোড়া বা প্রয়োজনে আরও বেশি সময় ধরে শুধুই শ্বাস-প্রশ্বাস খেয়াল করতে হবে। এভাবে শরীরে পানি ও অক্সিজেন সরবরাহ করলে কিছুক্ষণের মধ্যেই শরীর ও মন দুটোই শান্ত হয়ে যাবে।

 

৩. নিজের সঙ্গে কথা বলা: যেকোনো পরিস্থিতিতে আমরা কেমন বোধ করব, তা অনেকাংশে নির্ভর করে আমরা মনে মনে নিজেকে কী বলছি, কীভাবে বলছি তার ওপর। কঠিন পরিস্থিতিতে নিজেকে সামলে নিয়ে সমস্যা সমাধানের জন্য প্রস্তুত করতে হবে। এই জন্য নিজের সঙ্গে কথা বলুন। যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও মনোবিজ্ঞানী ক্রিস্টিন নেফ তার একাধিক গবেষণায় দেখেছেন, কঠিন পরিস্থিতিতে নিজের যত্ন নিয়ে, নিজের প্রতি সদয় থেকে, নিজেকে মমতাপূর্ণ কিছু কথা বললে সহজেই নিজের সঙ্গে সংযোগ তৈরি করা যায়। আর সেই সঙ্গে সমস্যা সমাধানের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করা সহজ যায়।

 

এছাড়াও কঠিন সময়ে নিজেকে শান্ত করতে আমরা পছন্দের কাজ করতে পারেন। নিজেকে নিজের পছন্দের কাজের মাধ্যমে ব্যস্ত রাখতে পারেন। প্রিয় মানুষের সঙ্গে কথা বলতে পারেন তাহলে একটু হলেও হালকা বোধ করবেন।