ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে খোলা আকাশের নিচে বসবাস ৪০ পরিবারের 

প্রকাশকালঃ ২৫ আগu ২০২৪ ০৯:৪৯ অপরাহ্ণ ৪৯৭ বার পঠিত
ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে খোলা আকাশের নিচে বসবাস ৪০ পরিবারের 

ঢাকা প্রেস
আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-

 

 

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে বাম তীরে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে হুমকিতে পড়েছে দুই ইউনিয়নের ২৫টি বাড়ি ও ২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ কয়েকটি মসজিদ। গত ১৫ দিনে নদের গর্ভে বিলীন হয়েছে ৩০ ঘরবাড়ি ও ৫০ একর ফসলি জমি। ভিটেমাটি হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছেন ২ ইউনিয়নের ৪০ পরিবার। এখন পর্যন্ত ভাঙন কবলিত পরিবারের কাছে কোনো সরকারি ও বেসরকারি ত্রাণ পৌঁছেনি। এমনকি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি নদীভাঙন প্রতিরোধে।

 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ব্রহ্মপুত্রে বাম তীরে ভাঙনের কারণে হুমকির মুখে পড়েছে উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের যাদুরচর দিগলেপাড়া, ধনারচর পশ্চিমপাড়া, কাটিয়ামরী, কোমড়ভাঙ্গি জামাইপাড়া, শিবেরডাঙ্গি, পাখিউড়া, উত্তর চাক্তাবাড়ি, কান্দাপাড়া, বাঘমারা ও চর শৌলমারী ইউনিয়নের খেদাইমারী, ঘুঘুমারী, সুখেরবাতি, গেন্দার আলগা ও চর খেদাইমারী, পশ্চিম খেদাইমারী, শেখের বাজারসহ প্রায় ২৫টি গ্রামের ৩০টি বাড়ি।

 

ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো বর্তমানে অন্যের জমিতে ছাপড়া ঘর উঠিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

 

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলছেন, দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও এ নদের ভাঙনরোধে কোনো কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়নি কুড়িগ্রাম পানি উন্নায়ন বোর্ড। তারা আরো বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন অব্যাহত থাকলে শতশত পরিবার তাদের ফসলি জমি ও ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

 

এদিকে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বলেছেন, ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনরোধে নদের বামতীরে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা চলমান আছে।

যাদুরচর দিগলাপাড়া গ্রামের ইসমাইল হোসেন আক্ষেপ করে বলেন, ভাঙন বাড়ির কাছে আসায় ঘরের চালের টিন খুলে অন্য জায়গায় নিয়ে রাখছি। জায়গা ও অর্থের অভাবে কোথাও ঘর উঠাতে পারছিনা এবং ঘরে খাবারো নাই। এখন পর্যন্ত কোনো সহায়তা পাই নাই।

 

একই গ্রামের শাহিনা বেগম বলেন, ‘আমাগরে বাড়ি ভিটা নদীতে ভেঙে গেছে। খুবই কষ্টে আছি। সরকারের কাছে দাবি, নদীটা যেন বাইন্দা দেয়।’

 

সোনাপুর গ্রামের আব্দুল মজিদ মিয়া বলেন, দ্রুত ভাঙনরোধে কাজ না করলে ভয়াবহ পরিস্থির সৃষ্টি হবে।

 

বীরমুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমান বলেন, ভাঙনরোধে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে জায়গা-জমি হারিয়ে অনেক পরিবার পথে দাঁড়াবে। আমি স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের কাছে নদী ভাঙনরোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিশেষভাবে আহ্বান করছি।

 

চরশৌলমারী ইউপি চেয়ারম্যান এ.কে.এইচ.এম সাইদুর রহমান দুলাল বলেন, ভাঙনের শিকার পরিবারগুলোর খোঁজ নিচ্ছি এবং কোনো সমস্যা থাকলে সমাধান করব।

কুড়িগ্রাম জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদে পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদের বামতীরে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা চলমান আছে।

 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদ হাসান খান বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে খাবার সংকটের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।