প্রকাশকালঃ
০৮ জানুয়ারি ২০২৪ ০১:৪১ অপরাহ্ণ ৩০২ বার পঠিত
ইসলামের চারজন খলিফা উম্মতে মুহাম্মাদীর শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাঁরা নির্বাচিত হয়েছিলেন উম্মতের শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিদের পরামর্শক্রমে। তাঁদের মধ্যে পার্থিব স্বার্থ ছিল না, ছিল না নেতৃত্বের মোহ। তাঁদের লক্ষ্য ছিল অপার্থিব। ইসলামের প্রথম চার খলিফার নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করা হলো:
প্রথম খলিফা আবু বকর (রা.):
রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর অনুপস্থিতিতে আবু বকর (রা.)-কে বিভিন্ন কাজে দায়িত্ব দিয়ে স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়ে গিয়েছিলেন যে আবু বকর (রা.) হবেন নবীজি (সা.)-এর খলিফা। (বুখারি : ৭১৩)
পরবর্তী সময়ে মদিনার সাকিফা বনু সাদায় মিলিত হয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে আবু বকর (রা.)-এর হাতে ওমর (রা.)-এর বাইয়াত গ্রহণের মাধ্যমে তা কার্যকর হয়। অতঃপর সবাই তাঁকে খলিফা হিসেবে মেনে নেন। (বুখারি, হাদিস : ৬৮৩০; আল-আহকাম, পৃষ্ঠা ৭)
দ্বিতীয় খলিফা ওমর (রা.):
আবু বকর (রা.)-এর মৃত্যুকালে বিশিষ্ট সাহাবিদের সঙ্গে পরামর্শক্রমে পরবর্তী খলিফা হিসেবে ওমর (রা.)-কে নির্বাচন করেন। অতঃপর বিষয়টি উপস্থিত সাহাবায়ে কেরামের কাছে তিনি পেশ করলে সবাই তাতে সম্মতি জ্ঞাপন করেন। (তারিখে তাবারি : ২/৩৫২, ৩৫৩; ইবনু সাদ, তাবাক্বাতুল কুবরা : ৩/১৯৯-২০০)
তৃতীয় খলিফা উসমান (রা.):
ওমর (রা.) শাহাদাত বরণকালে ছয়জনকে নিয়ে একটি ‘শুরা’ গঠন করে দেন, যাঁদের প্রত্যেকেই দুনিয়াতে জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত ছিলেন। তাঁরা নিজেদের মধ্যে পরামর্শ করে উসমান (রা.)-কে পরবর্তী খলিফা হিসেবে নির্বাচন করেন। (বুখারি, হাদিস : ৩৭০০; আল-বিদায়াহ ৭/১৫২)
চতুর্থ খলিফা আলী (রা.):
উসমান (রা.)-এর শাহাদাতবরণের পর আলী (রা.)-কে খিলাফত গ্রহণের অনুরোধ করা হলে তিনি প্রত্যাখ্যান করে বলেন, ‘এটা তোমাদের এখতিয়ার নয়, বরং এটি বদরি সাহাবা ও শুরা সদস্যদের দায়িত্ব। তাঁরা একত্রে বসে যাঁকে মনোনীত করবেন, তিনিই খলিফা হবেন।’ (আশ-শুরা, পৃষ্ঠা-১০৩)
পরবর্তী সময়ে মুহাজির ও আনসারি সাহাবিদের অনুরোধে মসজিদ-ই-নববীতে তিনি বাইয়াত গ্রহণ করেন। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চাচা আব্বাস (রা.) সর্বপ্রথম তাঁর বাইয়াত গ্রহণ করলে বাকি সবাই তাঁর প্রতি আনুগত্যের বাইয়াত নেন।
(আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ ৭/২২৫-২৬; তারিখে ত্বাবারি ৪/৪২৭-২৮)
উপরের আলোচনা থেকে আমরা নিম্নলিখিত সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারি:
ইসলামের প্রথম চার খলিফার নির্বাচন ছিল একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে।
এই নির্বাচনে সকল মুসলমানের মতামত গ্রহণ করা হয়েছিল।
এই নির্বাচনে যোগ্যতা ও ধার্মিকতার উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল।
বর্তমান যুগের নেতৃত্ব চেয়ে নেওয়ার এ রাজনীতির সঙ্গে ইসলামী খিলাফতের কোনো সম্পর্ক নেই। ইসলামী খিলাফত ছিল একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্বাচিত একজন যোগ্য ও ধার্মিক ব্যক্তির নেতৃত্বে পরিচালিত একটি রাষ্ট্রব্যবস্থা।