আবুল কালাম আজাদ ভূঁইয়া,কুমিল্লা প্রতিনিধিঃ
কচু একটি অত্যন্ত পুষ্টিগুণসম্পন্ন সবজি। একসময় এটি বসতবাড়ির অনাবাদি জমিতে অযত্নে চাষ হতো, এখন তা খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ফসল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বৈচিত্র্যময় ফসলের আবাদ বৃদ্ধির কারণে কচুর চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সরকারের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা কর্মসূচিতেও এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
চলতি মৌসুমে কুমিল্লার মুরাদনগরে ব্যাপকভাবে কচু চাষ হয়েছে। বিশেষ করে মুরাদনগরের ২নং আকুবপুর ইউনিয়নের গাজীরহাট জাঙ্গাল বাদশা মিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞান সহকারী শিক্ষক মোঃ শফিকুল ইসলাম কচু চাষ করে স্থানীয় কৃষি মহলে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছেন।
শফিকুল ইসলাম জানান, “আমার গ্রামের বাড়ী পাবনার সুজানগর উপজেলার রানীনগর ইউনিয়নের ভাটিকয়া গ্রামে। মুরাদনগরে শিক্ষকতা করার পাশাপাশি ১২০ শতাংশ জমি বার্ষিক লিজে নিয়েছি। এর মধ্যে ৯০ শতাংশ জমিতে বারি লতিকচু-১ (লতিরাজ) এবং ৩০ শতাংশ জমিতে শাকসবজি চাষ করি। আশা করছি, এই মৌসুমে কচুর লতি বিক্রি করে প্রায় দুই লাখ ৩০ হাজার টাকা আয় হবে।”
আকুবপুর ইউনিয়ন উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মোফাজ্জল হোসেন জানান, শফিকুল ইসলাম যশোর জেলার বাঘারপাড়া উপজেলা থেকে ১০ হাজার লতিকচু চারা সংগ্রহ করেছেন। চারা মুরাদনগরে আনার জন্য খরচ হয়েছে প্রায় আড়াই টাকা। ৯০ শতাংশ জমিতে কচু চাষ করতে এপর্যন্ত খরচ হয়েছে প্রায় ৯০ হাজার টাকা। কচুর লতি উৎপাদনের সময়কাল ৫৪ দিন।
মুরাদনগর উপজেলা কৃষি অফিসার পাভেল খাঁন পাপ্পু বলেন, “শফিকুল ইসলাম একজন পরিশ্রমী কৃষক। নিজের উদ্যোগে তিনি কচু চাষ করে সাফল্য অর্জন করেছেন এবং এলাকার অন্যান্য কৃষকদের জন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। আমরা আশা করি, নতুন চাষিরা কচু চাষে আগ্রহী হবেন, এবং তাদের সহযোগিতা করব।”
উপজেলায় এ মৌসুমে মোট ৪০ হেক্টর জমিতে কচু চাষ হয়েছে। লাভজনক হওয়ায় কৃষি উদ্যোক্তাদের মধ্যে কচু চাষে আগ্রহ বাড়ছে। দেশে কচুর বিভিন্ন নাম রয়েছে, যেমন লতিরাজ, নারিকেল কচু, জাত কচু, বাঁশ কচু ইত্যাদি।