আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-
উত্তর জনপদের জেলা কুড়িগ্রাম। আর্থ-সামাজিক বৈষম্যের শিকার এ জেলার মানুষ। এর ফলে দেশের সবচেয়ে দারিদ্র্যপীড়িত জেলার তকমা পেয়েছে কুড়িগ্রাম।
জেলায় দারিদ্র্যের হার ৭০ দশমিক ৮ শতাংশ। অতিদরিদ্রদের হার ৫৩ দশমিক ২ শতাংশ। এর অন্যতম কারণ হলো- নদী ভাঙন এবং চরে বসবাসকারী মানুষের অনিশ্চিত জীবনযাপন। এ পরিপ্রেক্ষিতে এসডিজি’র (টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য) বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে চর বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দাবি উঠেছে তৃণমূল থেকে।
সম্প্রতি কুড়িগামে অনুষ্ঠিত এক নাগরিক সংলাপ থেকে জোরালো দাবি জানানো হয়েছে। এটির আয়োজন করে কুড়িগ্রাম জেলা চর উন্নয়ন কমিটি। চর উন্নয়ন কমিটি কুড়িগ্রাম জেলার আহ্বায়ক সাংবাদিক অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম বেবু বলেন, কুড়িগ্রামের জনসংখ্যা প্রায় ২৪ লাখ। এ জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমার, ফুলকুমারসহ ১৬টি নদ-নদী। এগুলোর অববাহিকায় রয়েছে সাড়ে ৪ শতাধিক চর। প্রায় সাড়ে ৮০০ বর্গকিলোমিটার চরে বসবাস করেন সাড়ে ৫ লাখ মানুষ। এসব চরে বসবাসকারী মানুষের প্রধান আয়ের উৎস কৃষি। ভৌগোলিকভাবে নদী ও চরবেষ্টিত জেলা হওয়ায় অন্যান্য জেলার চেয়ে এ জেলার সমস্যাগুলো অনেকটা ভিন্ন ধরনের।
এ ছাড়াও এ জেলার অধিকাংশ চর স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের আওতায় আসেনি। এ কারণে চরাঞ্চলের মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তনও হয়নি। যোগাযোগ, স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ সবদিক থেকেই রয়েছে পিছিয়ে। স্বাধীনতার পর থেকে জেলার চরের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে অনেক এনজিও কাজ করছে। সরকারিভাবেও অনেক বরাদ্দ এসেছে। কিন্তু উন্নতি রয়েছে সেই তিমিরেই।
কুড়িগ্রামসহ চরের বিপুল জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে আলাদা মন্ত্রণালয় গঠনের বিকল্প নেই। পাহাড়িদের জন্য যদি আলাদা মন্ত্রণালয় থাকতে পারে। তাহলে দেশের পশ্চাৎপদ এই চরের জনগোষ্ঠীর জন্য কেন হবে না।
কুড়িগ্রাম জেলা চর উন্নয়ন কমিটির অন্যতম যুগ্ম আহ্বায়ক সাংবাদিক সাইয়েদ আহমেদ বাবু বলেন, আমরা চর উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠনের দাবিতে কুড়িগ্রামসহ সারা দেশের চরের কোটি মানুষের জীবনমান উন্নয়নের জন্য কাজ করছি। দেশে চর মন্ত্রণালয় গঠিত হলে চর এলাকার মানুষের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থান, যোগাযোগ, কর্মসংস্থান ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা চর মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সমাধান সহজ হবে।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা জানান, চরের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে সরকার বদ্ধপরিকর। পৃথক চর বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠনে গুরুত্ব নিয়ে ইতিমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।