 
                            
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশে আর পুরোনো কাঠামোয় দেশ চলতে পারে না। তিনি বলেন, একটি বিশেষ গোষ্ঠী পুরোনো ব্যবস্থা ধরে রাখার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। দেশের অগ্রযাত্রা ও জনগণের অধিকার নিশ্চিত করতে হলে প্রয়োজন নতুন বন্দোবস্ত ও নতুন সংবিধান।
 
শনিবার (২৬ জুলাই) মৌলভীবাজারের বেরীরপার পয়েন্টে ‘দেশ গড়তে জুলাই পথযাত্রা’ শেষে আয়োজিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
 
নাহিদ ইসলাম বলেন, "১৯৪৭, ৫২, ৭১ এবং সর্বোপরি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনায় একটি নতুন সংবিধানের প্রয়োজন। বর্তমান সংবিধানে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা থেকে সরে এসে সেটিকে মুজিববাদী রূপ দেওয়া হয়েছে। এই সংবিধান বাতিল করে একটি ইনসাফভিত্তিক, গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রণয়ন করতে হবে, যাতে জনগণের প্রকৃত ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়।"
 
তিনি আরও বলেন, "আসামে মুসলিমবিরোধী আন্দোলন ও হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি মুসলমানদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত করেছে। এনসিপি শুধু বাংলাদেশ নয়, দক্ষিণ এশিয়ায় সম্প্রীতির রাজনীতির পক্ষেই কাজ করবে। আমরা উন্নয়নের নামে প্রহসন চাই না, চাই মৌলিক উন্নয়ন।"
 
হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "এই ঘটনায় অভ্যুত্থানকারী ছাত্র-জনতার ওপর দোষ চাপিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। ৩ আগস্ট আমরা এক দফা দাবির মাধ্যমে স্পষ্ট করেছি—আমাদের আন্দোলন শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে। সেই আন্দোলনে দমন-পীড়ন চলেছে, যার ফলে জনগণ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে বাধ্য হয়েছে।"
 
নাহিদ ইসলাম বলেন, “জুলাই আন্দোলনের অন্যতম দাবি ছিল কর্মসংস্থান। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারও এই দাবিকে গুরুত্ব দেয়নি। আমরা চাই জনগণের প্রতি জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র ব্যবস্থা।”
 
এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, “আমাদের লক্ষ্য একটি ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র গঠন করা, যেখানে রাষ্ট্রের কোনো অঙ্গ — এমনকি সেনাবাহিনীও — জনতার জবাবদিহিতার বাইরে থাকবে না। ঘুষ দিয়ে সেবা নিতে হবে—এমন বাংলাদেশ আমরা চাই না।”
 
পথসভার আগে শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে 'জুলাই পদযাত্রা' শুরু হয়। এতে অংশ নেন এনসিপির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। পথসভায় সভাপতিত্ব করেন মৌলভীবাজার জেলার প্রধান সমন্বয়কারী ফায়াদ আলম। উপস্থিত ছিলেন এনসিপির মুখ্য সংগঠক নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী, যুগ্ম সদস্যসচিব সাদিয়া ফারজানা, সিলেট বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক প্রীতম দাশ, ডা. তাসনিম জারা, আবু বাকের মজুমদার, ডা. জাহেদ, মারুফ আল হামিদ, জাকারিয়া ইমন, এহসান জাকারিয়া, সানাউল ইসলাম সুয়েজ, সৈয়দ মুফলে উস সালেকীন প্রমুখ।
 
পথসভা শেষে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা শ্রীমঙ্গল ভিক্টোরিয়া হাইস্কুল মাঠে চা-শ্রমিক ও বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অংশ নেন। সেখানে তাদের সংবর্ধনাও দেওয়া হয়।
 
                                                
                                                 
                                        
                                        
                                     
                                        
                                        
                                     
                                        
                                        
                                     
                                        
                                         
                                        
                                        
                                    