জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রমে কোনো ধরনের বাধা বরদাশত করা হবে না। তিনি বলেন, “সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে যদি কারও পর্যালোচনা বা মন্তব্য থাকে, সেটা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করুন। কিন্তু বাধা সৃষ্টি করলে কঠোর হস্তে প্রতিরোধ করা হবে।”
সোমবার সকালে চট্টগ্রাম উত্তর জেলায় সাংগঠনিক সফরের শুরুতে নগরের ষোলশহরে বিপ্লব উদ্যানের সামনে এক জমায়েতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি সকলকে সরকারের সংস্কার প্রয়াসে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।
হাসনাত আরও বলেন, “যারা সরকারের সংস্কার কর্মকাণ্ডে বাধা দিচ্ছেন বা হুমকি-ধমকি দিয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করছেন, তারা ভুল করছেন। জনগণের সামনে দাঁড়িয়ে সরকারকে হুমকি দিলে, মনে রাখবেন—এই জনগণই আপনাদের বিকল্প খুঁজে নেবে। আপনারা তো একসময় ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধেও কথা বলার সাহস দেখাননি।”
সচিবালয়ের প্রসঙ্গ টেনে তিনি প্রশ্ন করেন, “৫ আগস্টের আগে কোনো সচিব, কর্মকর্তা বা কর্মচারী কি পদত্যাগ করেছিলেন? যখন রাস্তায় সাধারণ মানুষ ও শিশুদের গুলি করে হত্যা করা হচ্ছিল, তখন কি কোনো আমলা প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন?” তিনি অভিযোগ করেন, আজ যখন সরকার সংস্কার কার্যক্রম চালাচ্ছে, তখন সেই আমলারা বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছেন।
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “আমার জীবদ্দশায়, এই দেশের হাজারো হাসনাত আবদুল্লাহর জীবদ্দশায়, কেউ যদি সরকারের সংস্কার প্রচেষ্টায় বাধা দেয়—তা সচিবালয় থেকেই হোক বা অন্য কোথা থেকে—তবে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর হস্তে তার প্রতিরোধ করা হবে। এটা ধরে নেবেন না, আপনাদের বিকল্প নেই—জনগণ ঠিকই বিকল্প খুঁজে নেবে।”
এর আগে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় এনসিপি নেতা হাসনাত বলেন, “বউত দিন হাইয়ো, আর না হাইয়ো।” তাঁর এই মন্তব্য এলাকায় আলোচনার ঝড় তোলে। কারণ, একই উক্তি ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকালে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও স্বাচিপের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডা. আ. ম. ম. মিনহাজুর রহমান দিয়েছিলেন।
চলমান সাংগঠনিক সফরের অংশ হিসেবে গত রোববার চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় পথসভা ও গণসংযোগ করেছেন হাসনাত আবদুল্লাহ ও এনসিপির শীর্ষ নেতারা। আজ সোমবার তিনি উত্তর চট্টগ্রামের ছয়টি উপজেলায় পথসভায় বক্তব্য রাখবেন। স্থানগুলো হলো—রাঙ্গুনিয়ার রোয়াজারহাট, রাউজান বাসস্ট্যান্ড, হাটহাজারী ডাকবাংলো, ফটিকছড়ির বিবিরহাট, মীরসরাইয়ের বারইয়ারহাট এবং সীতাকুণ্ড বাজার।
আজকের জমায়েতে উপস্থিত ছিলেন—এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, যুগ্ম সদস্য সচিব মীর আরশাদুল হক, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ডা. মাহমুদা আলম মিতু ও মো. আতাউল্লাহ, এবং কেন্দ্রীয় সংগঠক আরমান হোসেন প্রমুখ।
