ভবিষ্যতে কী হবে, তা নিয়ে ভাবি না শুধু জার্নিটা উপভোগ করি: জয়া
প্রকাশকালঃ
০২ জুলাই ২০২৪ ১২:০৮ অপরাহ্ণ ৫৬৭ বার পঠিত
গতকাল ছিল জয়া আহসানের জন্মদিন। ভক্ত-সহকর্মী ও কাছের মানুষের শুভেচ্ছা-উপহার তো পেয়েছেনই, বিপরীতে অভিনেত্রীও দিয়েছেন উপহার—নতুন ছবি ‘ওসিডি’র টিজার। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন কামরুল ইসলাম। জন্মদিনের সকালটা বৃষ্টিতে শুরু।
উপভোগ করেছেন?
হ্যাঁ। এখনো (গতকাল দুপুর) বৃষ্টি দেখছি। বাসায় খিচুড়ি রান্না হচ্ছে, খাব। মসময়টা সত্যিই উপভোগ করছি। অনেক বছর ধরে জন্মদিনে কেক কাটেন না। নেপথ্যের ভাবনাটা বলবেন? আসলে আমি ঘটা করে জন্মদিন উদযাপন করি না। কিন্তু বাড়িতে দু-চারটা কেক তো চলেই আসে। জন্মদিন কখনোই আমার কাছে বিশেষ কিছু নয়।
এই দিনে উপহার দিতে হবে, নিতে হবে—এ রকম ভাবি না। উপহার যেকোনো সময় দেওয়া-নেওয়া যায়। তবে হ্যাঁ, কাছের মানুষ-ভক্ত-সহকর্মীরা যখন শুভেচ্ছা জানায়, ভালো লাগে। মনে হয়, এখনো বেঁচে আছি, ভালো আছি। জন্মদিন এলে হলি আর্টিজানের দিনটি (১ জুলাই, ২০১৬) চোখে ভেসে ওঠে। আমরা যেমন বলি চাঁদেরও কলঙ্ক আছে, সেদিন ও রকম একটি কলঙ্ক বাংলাদেশের পতাকায় লেগে গেছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এটি আমার জন্মদিনে ঘটেছিল।
তাহলে আজকের দিনটা কাটাবেন কিভাবে?
বিশেষ কিছুই করব না। অনেক দিন পর কলকাতা থেকে ঢাকায় ফিরেছি। মা রান্নাবান্না করছেন। সকালে পরোটা খেলাম, সুজির হালুয়া দিয়ে। এখন আমাদের গাছের তালের শাঁস খাচ্ছি। মা আমার জন্য ফ্রিজে রেখে দিয়েছিলেন। এগুলোই আমার ট্রিট। জন্মদিনে নতুন ছবির ঝলক উপহার দিলেন। ‘ওসিডি’ সম্পর্কে জানতে চাই। ছবিটি নির্মাণ করেছেন সৌকর্য্য ঘোষাল। সমাজের জঞ্জাল পরিষ্কারের গল্প।
একটা রোগ আছে, অবসেসিভ-কম্পালসিভ ডিস-অর্ডার (ওসিডি), এই গল্পে সেটাই আছে কি না, তা ছবি দেখে বুঝতে হবে। যাঁরা অর্থপূর্ণ কাজ ভালোবাসেন, বাংলা ছবিতে ভালো কনটেন্ট দেখতে চান, তাঁদের জোর দিয়ে বলতে পারি, এটা খুব ভালো গল্পের ছবি। ভক্ত-দর্শককে অনুরোধ করব, ছবিটা যেন দেখেন এবং ছড়িয়ে দেন। কারণ এর বিষয়বস্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যেটা খুব একটা খেয়াল করি না আমরা। মুক্তির তারিখ এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশেই মুক্তি পাবে।
জীবনবোধের জায়গা থেকে জন্মদিনে মনে কোনো বিশেষ ভাবনা আসে?
সবার শুভেচ্ছা-ভালোবাসা দেখে নিজেকে একটু বিশেষ মনে হয় আর কি। মনে হয়, পৃথিবীতে আমার অস্তিত্ব আছে। ভালোবাসার মানুষ দিয়ে ঘেরা থাকলে কার না ভালো লাগে! জীবনবোধ, চলে যাওয়া সময়, আগামী—এসব নিয়ে ভাবি না। কারণ জন্মদিন আমার কাছে আলাদা কিছু নয়। খাওয়াদাওয়া বা ঘুরতে যাওয়া—সবই অন্যরা পরিকল্পনা করে। দায়িত্ব নিয়ে আমি একটা কাজই করি—রাস্তায় যে চারপেয়ে বাচ্চাগুলো (কুকুর) আছে, ওদের খাওয়াই। আমার পক্ষ থেকে ওদের ট্রিট দিই। ওরাই আমার গেস্ট অব অনার। অবসরে তারকারা দেশ-বিদেশে ঘুরতে যান। আপনি বেশির ভাগ সময় পরিবারের সঙ্গে বাড়িতেই থাকেন। ছাদবাগানে সময় দেন।
আপনি কি একটু ঘরকাতুরে?
ঘরকাতুরে তো বটে। দেখুন, কাজের জন্য বিভিন্ন জায়গায় যেতে হয়। এ কারণে যতটুকু অবসর পাই, বাড়িতে থাকতে চাই। সবুজ, গাছপালা, প্রকৃতির কাছাকাছি থাকতে আমার ভালো লাগে। আমি বিশ্বাস করি, ন্যাচার ইজ দ্য বেস্ট টিচার। প্রকৃতির কাছে এলে নতুন করে প্রাণ খুঁজে পাই।
‘ওসিডি’ ছাড়া এই মুহূর্তে আর কী কী কাজ হাতে রয়েছে?
কয়েকটি ছবি আছে। আপাতত অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরীর ‘ডিয়ার মা’র কথা বলতে পারি। এটার কাজ শেষ করলাম। দুর্দান্ত একটা ছবি হয়েছে। ভীষণ আরাম লাগল ছবিটি করে। আশা করি, দর্শকের ভালো লাগবে।
আপনি কি অবসর, মানে রিটায়ারমেন্টে বিশ্বাস করেন?
না। অভিনয়ে যদি ক্লান্তি আসে, তাহলে হয়তো কৃষিকাজ করব! এতে আমার কোনো আপত্তি নেই। অভিনয় যদি আমাকে এক্সাইটেড না করে, তাহলে অন্য যে কাজ আমাকে এক্সাইটেড করবে, সেটাই করব। যেটা আমাকে নতুন করে জীবনবোধ দেবে, তাই করব। ভবিষ্যতে কী হবে, তা ভাবিই না। আমি জার্নিটা উপভোগ করি।