দুশ্চিন্তায় ১২০ পরীক্ষার্থী বিসিএস প্রিলির ফল নিয়ে

প্রকাশকালঃ ২১ মে ২০২৩ ১২:৫৭ অপরাহ্ণ ১১৮ বার পঠিত
দুশ্চিন্তায় ১২০ পরীক্ষার্থী বিসিএস প্রিলির ফল নিয়ে

তকাল শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয়েছে ৪৫তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা। এতে অংশ নিলেও ফল প্রকাশ হওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন রংপুরের ১২০ পরীক্ষার্থী। সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) থেকে পাঠানো হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর না নেওয়ায় এ দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা। আসন বিন্যাসের জটিলতার কারণে এসব শিক্ষার্থীর স্বাক্ষর নেওয়া যায়নি বলে জানা গেছে।

যদিও সাদা কাগজে তাদের স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে কর্তৃপক্ষ।

জানা গেছে, রংপুরের তিনটি পরীক্ষাকেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটেছে। পিএসসি থেকে পাঠানো হাজিরা শিটে তাদের স্বাক্ষর গ্রহণ করতে পারেননি কেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা শিক্ষকরা।


পিএসসি সূত্রে জানা গেছে, প্রথমবারের মতো ৪৫তম বিসিএস প্রিলিমিনারিতে দৈবচয়ন ভিত্তিতে আসন বিন্যাস করেছে পিএসসি।

হাজিরা তালিকায় প্রার্থীর নিবন্ধন নম্বর জোড়-বিজোড় সংখ্যায় ভাগ করে বসানো হয় আসন। পিএসসি নতুন পদ্ধতিতে দেশের প্রতিটি কেন্দ্রের আসন বিন্যাস করে। কিন্তু রংপুরের তিনটি কেন্দ্রের আসন বিন্যাস ও নির্দেশনা বোর্ডে গরমিল ছিল। ফলে পরীক্ষার্থীরা কেন্দ্রগুলোতে এসে সমস্যায় পড়েন।


পরীক্ষার্থীদের কষ্ট বিবেচনা করে আলাদা শ্রেণিকক্ষে বিশেষ ব্যবস্থায় নেওয়া হয় পরীক্ষা। কিন্তু পিএসসির হাজিরা শিটে স্বাক্ষর নেওয়া হয়নি। এসব কেন্দ্রে কোনো ‘হেল্প ডেস্ক’ ছিল না বলেও জানিয়েছেন কয়েকজন পরীক্ষার্থী।

রংপুরের তিন কেন্দ্র হলো রংপুর কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজ, রংপুর পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও রংপুর সরকারি বেগম রোকেয়া কলেজ।

এ ঘটনায় পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের ওপর ক্ষুব্ধ হন।


তারা পিএসসির সরবরাহকৃত হাজিরা শিটে স্বাক্ষরের দাবি জানান।

পিএসসির একজন কর্মকর্তা জানান, রংপুরের ঘটনাটি জানার পর তারা বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসককে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শনের নির্দেশ দেন। এরপর বিভাগীয় কমিশনার হাবিবুর রহমান ও জেলা প্রশাসক ড. চিত্রলেখা নাজনীন কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরীক্ষাকেন্দ্রে যান। তারা ঢাকায় যোগাযোগ করে পরীক্ষার্থীদের সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেওয়ার জন্য পরীক্ষাকেন্দ্রের সদস্যসচিবকে বলেন‌ এবং তা পিএসসির সরবরাহকৃত হাজিরা শিটের সঙ্গে সংযুক্ত করে পিএসসিতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পিএসসির পক্ষ থেকে এসব শিক্ষার্থীকে কোনো সমস্যা হবে না বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।


ভুক্তভোগী এক পরীক্ষার্থী জানান, তিনি এসে কেন্দ্রের নির্দেশনা বোর্ডের সঙ্গে তার কাছে থাকা পিএসসির আসন বিন্যাসের মিল খুঁজে পাননি। তার সঙ্গে এমন অনেক পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা আলাদা শ্রেণিকক্ষে বিশেষ ব্যবস্থায় নেওয়া হয়। কিন্তু পিএসসির হাজিরা শিটে স্বাক্ষর নেওয়া হয়নি। তিনি ছাড়াও একাধিক পরীক্ষার্থী একই অভিজ্ঞতার কথা জানান।

পরীক্ষার্থীদের এ বিষয়ে দুশ্চিন্তা না করার জন্য বলেছেন পিএসসি চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন। তিনি বলেন, ‘এসব পরীক্ষার্থীর কোনো অসুবিধা যাতে না হয় তা নিশ্চিত করা হবে। সংশ্লিষ্টরা প্রাথমিকভাবে আমাদের জানিয়েছেন, আসন বিন্যাসে কোনো ভুল ছিল না। আসন বিন্যাস ঠিকই ছিল। কিছু পরীক্ষার্থী তাদের নিকট পাঠানো আসন বিন্যাস গুরুত্বসহ না দেখায় এবং বিলম্বে হলে যাওয়ায় এ সমস্যায় পড়েছে। বিষয়টি কেন হয়েছে আমরা তা খতিয়ে দেখব, যাতে ভবিষ্যতে আর এমন না হয়।’

রংপুর বিভাগীয় কমিশনার হাবিবুর রহমান জানান, তিনি বিষয়টি নিয়ে পিএসসিতে কথা বলার পর সাদা কাগজে পরীক্ষার্থীদের হাজিরা নেওয়ার ব‌্যবস্থা করা হয়েছে। এসব শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না বলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এটা নিশ্চিত করেছে।