অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ নিশ্চিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পদক্ষেপ জানতে চেয়ে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর খোলা চিঠি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের

প্রকাশকালঃ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৪:০৪ অপরাহ্ণ ১২৪৩ বার পঠিত
অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ নিশ্চিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পদক্ষেপ জানতে চেয়ে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর খোলা চিঠি  বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের

অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ নিশ্চিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পদক্ষেপ জানতে চেয়ে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর খোলা চিঠি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। আজ শনিবার সকাল ১১ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ক্লাবে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই খোলা চিঠি দেওয়া হয়।

 

সংবাদ সম্মেলনে খোলা চিঠিটি পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. গীতি আরা নাসরিন। চিঠিতে অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ নিশ্চিতে, অন্তর্ভুক্তি বিষয়ে, হিংস্রতা থেকে ভিন্নমত বা সম্প্রদায়ের মানুষের অধিকার রক্ষায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কী কী পদক্ষেপ নেবে তা জানতে চাওয়া হয়।


চিঠিতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক (ইউটিএন) সম্মন্ধে প্রধান উপদেষ্টা ওয়াকিবহাল নাও থাকতে পারেন উল্লেখ করে বলা হয়, গত এক দশক ধরে এ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ লাগাতার নানা অন্যায়, নিপীড়ন ও কর্তৃত্ববাদিতার বিরুদ্ধে শক্তিশালী অবস্থান নিয়ে আসছেন। তবে আমরা বিশেষ কোনো মার্কার সরকারের পক্ষে-বিপক্ষে ছিলাম না, এখনো নাই, আমরা গণতন্ত্র ও ন্যায্যতার জন্য হাজির আছি।

 

চিঠিতে অভ্যুত্থান পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে অপছন্দের গোষ্ঠী ও দলের বিরুদ্ধে হামলা, সেনা কর্মকর্তার নিহত হওয়া, পার্বত্য চট্টগ্রামে ভিন্ন জাতিসত্তার মানুষকে হত্যা, রাস্তায় ও পর্যটন অঞ্চলে নারীদের ওপর হামলা, মাজার, মন্দির, শিল্প- স্থাপনা ভাংচুর থেকে শুরু করে বাউল ও আহমেদিয়াদের ওপর আক্রমণের ঘটনাগুলো উল্লেখ করে বলা হয়, 'এসব দুর্ঘটনা দীর্ঘদিন সমাজের মধ্যকার নানাবিধ অমীমাংসা ও গণতন্ত্রহীনতার সঙ্গে সম্পর্কিত বলে আমরা মনে করি। এভাবে চলতে থাকলে নাগরিকদের নিরাপত্তাবোধের অভাব তীব্রতর হবে এবং সংকট উত্তরণে সরকারকে আরো বেগ পেতে হবে।'


চিঠিতে বলা হয়, এই ক্রান্তিকালে বর্তমান সরকারের নির্মোহ ভূমিকা পালন ও আশু পদক্ষেপ গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। কাজেই, অতি উৎসাহী গোষ্ঠীগুলোর অসহিষ্ণুতা প্রশমণের জন্য যারা এসব ঘৃণামুলক বক্তব্য প্রচার করছেন এবং বিভিন্ন পরিচয় ও সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর বা নাগরিকের মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ করছেন তাদের থামাতে হবে। 

 

এতে আরো বলা হয়, 'সরকারের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট ঘোষণা আসতে হবে যে তারা আসলে অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ কীভাবে নিশ্চিত করবেন এবং অন্তর্ভুক্তি বিষয়ে তাদের অবস্থান তাদের নীতিসমূহের মাধ্যমে কী করে স্পষ্ট করবেন। সহিংস জমায়েতের সংঘবদ্ধ হিংস্রতা থেকে ভিন্ন মত বা সম্প্রদায়ের মানুষের অধিকার রক্ষায় সরকার কী কী পদক্ষেপ নেবেন তা সুস্পষ্ট করতে হবে।'


চিঠির শেষে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের পক্ষে অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিনের নাম উল্লেখ করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ছাড়াও চিঠির অনুলিপি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, আইন উপদেষ্টা, ধর্ম উপদেষ্টা, শিক্ষা উপদেষ্টা এবং প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা বরাবর পাঠানো হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়।