বৃদ্ধদের মর্যাদা আল্লাহর কাছে বেশি কেন

প্রকাশকালঃ ০৭ আগu ২০২৩ ১১:৫৮ পূর্বাহ্ণ ২২৪ বার পঠিত
বৃদ্ধদের মর্যাদা আল্লাহর কাছে বেশি কেন

মানুষ জন্মের পর শৈশব, কৈশোর ও যৌবন পার করে একসময় বার্ধক্যে উপনীত হয়। বার্ধক্য শতভাগ সুখকর হয় না। কারো জন্য সুখকর হলেও বেশির ভাগের সময় হয়ে উঠে অসহ্য। নিঃসঙ্গ, একাকিত্ব এই জীবদের নিত্যসঙ্গী।

তবে হ্যাঁ, সমাজে অনেক বৃদ্ধ অবহেলিত হলেও সাধারণত বৃদ্ধদের শ্রদ্ধার চোখে দেখা হয়। ইসলামে বৃদ্ধদের বিশেষ মর্যাদার কথা বলা আছে। কিন্তু মহান আল্লাহর দৃষ্টিতে সব বৃদ্ধের মর্যাদা সমান নয়। আল্লাহর কাছে সেসব বৃদ্ধ সর্বাধিক মর্যাদাবান, যারা ইবাদত ও আমলের পথ ধরে বার্ধক্যে উপনীত হয়েছেন।

রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আমি কি তোমাদের মধ্যে উত্তম ব্যক্তির সংবাদ দেব না? তারা বলল, হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! তিনি বলেন, তোমাদের মধ্যে ওই ব্যক্তি উত্তম যে দীর্ঘ আয়ু লাভ করে এবং সুন্দর আমল করে।’ (মুসনাদ আহমাদ, হাদিস : ৭২১২, সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৩০৪৩)


সুতরাং প্রবীণ মুসলমানদের করণীয় হলো, যথাসাধ্য ইবাদত, আমল, জিকির-আজকার, তাসবিহ-তাহলিলের মাধ্যমে সময়কে প্রাণবন্ত করে তোলা। বয়স বেশি লাভ করলে আমলও বেশি করা যায়, আল্লাহর জিকিরও বেশি করা যায়। তাই তাঁদের মর্যাদা সবচেয়ে বেশি।

হাদিস শরিফে এসেছে, ‘যে মুমিন মুসলমানি জীবনে বেশি বয়স পেয়েছে, তাসবিহ, তাকবির, তাহলিলের পরিমাণ বেশি হওয়ার কারণে তার চেয়ে বেশি মর্যাদাবান আল্লাহর কাছে কেউ নেই।’ (সিলসিলা সহিহাহ, হাদিস : ৬৫৪)

এর বিপরীতে ইবাদত ও আমলহীন বৃদ্ধ আল্লাহর খুব অপছন্দ। হাদিসে এসেছে, এক ব্যক্তি প্রশ্ন করেছে, ‘হে আল্লাহর রাসুল (সা.), উত্তম ব্যক্তি কে? তিনি বলেন, যে দীর্ঘ জীবন পেয়েছে এবং তার আমল সুন্দর হয়েছে। সে আবার প্রশ্ন করল, মানুষের মধ্যে নিকৃষ্ট কে? তিনি বলেন, যে দীর্ঘ জীবন পেয়েছে এবং তার আমল খারাপ হয়েছে।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৩৩০)

এ জন্য বয়োবৃদ্ধ মুরব্বিদের করণীয় হলো, বেশি পরিমাণ ইবাদতে লিপ্ত থাকা।


এ সময় প্রবীণদের কারো কারো মেজাজ খিটখিটে থাকে। তাই সর্বদা ইবাদতে মশগুল থাকলে মনের অবস্থা পরিবর্তন হতে পারে। জীবনের এই পড়ন্ত দিনগুলোতে বেশি বেশি তাসবিহ-তাহলিল, দোয়া-দরুদ, ইসতিগফার পাঠ করতে হবে। 

মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে ঈমানদাররা, তোমরা আল্লাহর কাছে তাওবা করো—খাঁটি তাওবা। আশা করা যায়, তোমাদের রব তোমাদের পাপ মোচন করবেন এবং তোমাদের এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত...।’ (সুরা তাহরিম, আয়াত : ৮)

এ ছাড়া প্রবীণ মুসলমানদের কর্তব্য হলো, আত্মীয়-স্বজনদের যথাসম্ভব খোঁজ-খবর নেওয়া ও দোয়া করা। যেমন—ইবরাহিম (আ.) বৃদ্ধ অবস্থায় তাঁর ছেলে ইসমাইল (আ.)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান। একসঙ্গে কাবাঘর নির্মাণ করেন এবং তাদের জন্য ও পরবর্তী বংশধরের জন্য দোয়া করেন। (বুখারি, হাদিস : ৩৩৬৪)

মহান আল্লাহ বয়োবৃদ্ধ মুরব্বিদের ছায়া আমাদের ওপর দীর্ঘায়িত করুন।