মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংঘাত আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। শনিবার আরাকান আর্মির (এএ) আকস্মিক হামলায় অন্তত ৩০ জন জান্তা সেনা নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে। এখনও এলাকায় গোলাগুলি চলছে, নিরাপত্তাহীনতায় জীবন বাঁচাতে এলাকা ছাড়ছে সাধারণ মানুষ। ক্রমশ বাড়ছে খাদ্য ও চিকিৎসা সংকট।
ইরাবতীর প্রতিবেদনে জানানো হয়, সেনাবাহিনী থাইন চাউং টাং সামরিক ঘাঁটি দখলের পর সেখানে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এলাকাটিতে চীনের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন প্রকল্প রয়েছে। এএর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, আরাকান আর্মি আগে থেকেই মিনপিন গ্রামের চারপাশে মাইন পেতে সাময়িকভাবে সরে যায়। সেনারা এলাকা নিরাপদ ভেবে ভেতরে প্রবেশ করতেই এএ গুলি চালায়।
সূত্রটি জানায়, “সেনারা মনে করেছিল গ্রামটি খালি। তারা স্বাভাবিকভাবে ভেতরে ঢুকে এমনকি দলবদ্ধভাবে ছবি তুলছিল। ঠিক তখনই এএ হালকা ও ভারী অস্ত্রে হামলা চালায়। অনেক সেনা মাইনে পা দেওয়ায় বিস্ফোরণে নিহত হয়। ঘটনাটিতে প্রায় ৩০ সেনা মারা গেছে, আহতের সংখ্যা আরও বেশি।” তবে ইরাবতী স্বাধীনভাবে হতাহতের সংখ্যা নিশ্চিত করতে পারেনি।
এদিকে মিনপিনের আশপাশে সংঘর্ষ আরও জোরালো হচ্ছে। জান্তা বাহিনী পাল্টা বিমান হামলা ও ড্রোন ব্যবহার শুরু করেছে। আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে জান্তা সরকার ও বিদ্রোহীদের মধ্যে লড়াই তীব্রতর হচ্ছে।
সম্প্রতি কিয়াকফিউ শহরেও আরাকান আর্মি জান্তা বাহিনীর ওপর আচমকা হামলা চালায়। ফলে বহু গ্রাম থেকে মানুষ নিরাপত্তার খোঁজে পালিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীরা জানিয়েছেন, খাদ্য ও চিকিৎসার তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। অসহায় পরিবারগুলো জরুরি সহায়তার অপেক্ষায় রয়েছে। জান্তা বাহিনী বেশ কিছু এলাকা বিচ্ছিন্ন করে তেল ও ওষুধ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে।
বর্তমানে রাখাইন রাজ্যের ১৭টি টাউনশিপের মধ্যে ১৪টিই আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে। জান্তা বাহিনী এখনো সিত্তে, কিয়াকফিউ এবং মানাউং টাউনশিপ ধরে রেখেছে। তবে এবার কিয়াকফিউতেও বড় ধরনের হামলার মুখে পড়েছে তারা।