আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-
এক সময়ের অবহেলিত ফসল চিনা এখন ব্যাপক পরিসরে চাষ হচ্ছে কুড়িগ্রামের বিভিন্ন চরাঞ্চলে। বাজারে চাহিদা থাকায় দিন দিন বাড়ছে এই ফসলের পরিধি। খরচ কম লাভ বেশি হওয়ায় চিনা চাষে ঝুঁকছে চাষিরা। অল্প খরচে চিনার আবাদ হওয়ায় কৃষকদের চিনা চাষে উদ্বুদ্ধ করার কথা জানায় কৃষি বিভাগ। এ মৌসুমে জেলার নদ-নদী বেষ্টিত চরাঞ্চলে ব্যাপক পরিসরে চাষ হচ্ছে এ ফসলটি। পলি মিশ্রিত বালু মাটিতে স্বল্প সেচের মাধ্যমে চাষ করে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা। অন্যান্য ফসলের চেয়ে চিনার উৎপাদন ব্যয় কম ও বাজারে চাহিদা থাকায় প্রতি বছর বৃদ্ধি পাচ্ছে চিনা চাষের পরিধি। এক সময় পাখি ও গো-খাদ্যে হিসেবে পরিচিত চিনা এখন বিলাসী খাবারেও পরিণত হয়েছে।
কৃষি বিভাগ জানায়, এ বছর চরাঞ্চলের ২৫৬ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে চিনা। কৃষকরা জানান, চিনা উৎপাদনে সময় লাগে প্রায় তিন মাস। এক বিঘা জমিতে চিনা উৎপাদনে সব মিলিয়ে খরচ হয় প্রায় ৯-১০ হাজার টাকা। আর প্রতিবিঘা জমিতে চিনা উৎপাদন হয় ৭-৮ মণ। বাজারে প্রতি মণ চিনা বিক্রি হচ্ছে ৪-৫ হাজার টাকা। এতে উৎপাদন খরচের চেয়ে লাভ বেশি হওয়ায় চিনা চাষে ঝুঁকছেন তারা।
কুড়িগ্রাম সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের কালির আলগা চরের কৃষক সাহেব আলী জানান, ফলন ও বাজারদর ভালো থাকায় চরে আমরা অনেকে চিনা চাষ করছি। আশা করা হচ্ছে, চিনা বিক্রি করে ভালোই লাভবান হতে পারব। আমাদের চরে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো থাকলে আরও বেশি লাভবান হতাম।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মো. আসাদুজ্জামান বলেন, কুড়িগ্রাম জেলার যেসব জমিকে সেচের সুবিধা কম, সেসব জমিতে আমরা চিনা চাষের পরামর্শ দিয়ে থাকি। বিশেষ করে চরে চিনা বেশি চাষাবাদ হয়ে থাকে। চিনা খুব লাভজনক ফসল। সময়ের ব্যবধানে চিনা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। আমরা কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান থেকে যে জাতগুলো পাচ্ছি, তা কৃষক পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছি। শতভাগ যদি এই জাতগুলো কৃষকদের মাঝে পৌঁছে দেওয়া যায়, তাহলে কৃষকরা চাষ করে আরও লাভবান হতে পারবে।