পুরোপুরি গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো কুড়িগ্রাম জেলা আঃ লীগের কার্যালয়

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৪:১৭ অপরাহ্ণ   |   ৮৬ বার পঠিত
পুরোপুরি গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো কুড়িগ্রাম জেলা আঃ লীগের কার্যালয়

আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-

 

প্রকাশ্য দিবালোকে ভেকু দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো আওয়ামী লীগের কুড়িগ্রাম জেলা কার্যালয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, কুড়িগ্রাম জেলার নেতৃবৃন্দের উদ্যোগে শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে কার্যালয়টি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
 

এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভেকু দিয়ে কার্যালয়টির একাংশ ভেঙে দেওয়া হয়। রাতে বিরতি দিয়ে শুক্রবার সকালে আবারও শুরু হয় ভাঙার কাজ। এ সময় উৎসুক জনতা ও পথচারী পাশে দাঁড়িয়ে ভবনটি গুঁড়িয়ে দেওয়া দেখতে থাকেন। পাশে ট্রাফিক পুলিশ বক্সে থাকা পুলিশ সদস্যরাও চেয়ে চেয়ে দেখেন ভাঙার কার্যক্রম।
 

কুড়িগ্রাম জেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংলগ্ন শহরের প্রাণকেন্দ্র শাপলা চত্বরে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়টি অবস্থিত। দুই দশকের বেশি সময় ধরে এই কার্যালয়ে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল দলটি। আওয়ামী লীগ সরকারের টানা তিনবারের শাসনামলের প্রথমদিকে কার্যালয়টি দ্বিতল পাকা ভবন করা হয়। শহরের প্রাণক্ন্দ্রে হওয়ায় কার্যালয় কেন্দ্রিক রাজনৈতিক কর্মসূচিতে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে জনভোগান্তির সৃষ্টি হতো।

 
জেলা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, জেলা কার্যালয়ের জায়গাটি মূলত রেলের ভূ-সম্পত্তি। তবে জায়গাটি শহরের পাওয়ার হাউজ পাড়া এলাকার বাসিন্দা নছিয়ত উল্লাহ নামে এক ব্যক্তির নামে রয়েছে। তার কাছ থেকে আওয়ামী লীগ মাসিক ভাড়ায় জায়গাটি ব্যবহার করে আসছে। সরকার পতনের পর গত ছয় মাস ধরে ভাড়ার টাকাও পাচ্ছে না নছিয়ত উল্লাহর পরিবার।

 

ভবনটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার সময় পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন জায়গার মালিক দাবি করা প্রয়াত নছিয়ত উল্লাহর নাতি রোকনুজ্জামান রাসেল। তিনি বলেন, ‘জায়গাটি আমার দাদার নামে। আওয়ামী লীগ এক রকম জোর করে জায়গাটি ভাড়ায় দখলে রেখেছে। ভবনটিও আমাদের নির্মাণ করা। আমাদের ইচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায় কয়েক দশক ধরে আওয়ামী লীগ এটি ব্যবহার করছে। আমরা উদ্ধার করতে পারছিলাম না। এখন গুঁড়িয়ে দেওয়ায় একদিকে লোকসান হলেও জায়গাটি তাদের হাত থেকে উদ্ধার হওয়ায় উপকার হলো।’
 

তবে জেলা আওয়ামী লীগের একটি দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, ভবনটি আওয়ামী লীগ দলীয় খরচে নির্মাণ করেছে। তবে তারা মাসিক ভাড়া দিয়ে আসছিল।
 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুড়িগ্রাম জেলা কমিটির আহ্বায়ক আব্দুল আজিজ নাহিদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ গণহত্যাকারী দল। ছাত্র-জনতার রক্তের ওপর আওয়ামী লীগের কোনও স্থাপনা থাকতে পারে না। এসব কার্যালয়ে তারা আবারও ছাত্র-জনতা বিরোধী কার্যকলাপের পরিকল্পনা করছে। তাদের কোনও অপকৌশল বাস্তবায়ন হতে দেওয়া হবে না। তাই কার্যালয়টি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানের গণহত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগকে কোনও রাজনৈতিক কার্যক্রম করতে দেওয়া হবে না।