আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-
ঢাকা প্রেসঃ
কুড়িগ্রামে হাসপাতাল, সিভিল সার্জন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, পাসপোর্ট, বিআরটিএ, সাব-রেজিস্ট্রি, ভূমি, শিক্ষা অফিস, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগসহ ৪১টি সরকারি দফতরের ৭৮টি অভিযোগে গণশুনানিতে মুখোমুখি হয়েছিলেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
কুড়িগ্রামে শেখ রাসেল পৌর অডিটোরিয়ামে ‘রুখব দুর্নীতি গড়ব দেশ, হবে সোনার বাংলাদেশ’ স্লোগানে আয়োজিত গণশুনানিতে বক্তব্য দেন দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন।
রোববার (২ জুন) কুড়িগ্রামে শেখ রাসেল পৌর অডিটোরিয়ামে ‘রুখব দুর্নীতি গড়ব দেশ, হবে সোনার বাংলাদেশ’ স্লোগানে আয়োজিত গণশুনানিতে অভিযোগগুলো উত্থাপিত হয়।
গণশুনানিতে হাসি মুখে সেবা প্রদানের জন্য সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন বলেন, 'শুদ্ধ চর্চার মাধ্যমে দুর্নীতি প্রতিরোধ করা সম্ভব। পরিষেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো প্রকার অনৈতিক সুযোগ-সুবিধা নেয়া যাবে না। কোনো অভিযোগ নিয়ে আসার জন্য দুদকের দ্বার সবার জন্য উন্মুক্ত।'
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য যে কোনও দুর্নীতি রুখতে হবে। তাই দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। জনসচেতনতাই রুখবে দুর্নীতি বলেও জানান তিনি।
এদিন কুড়িগ্রামে হাসপাতাল, সিভিল সার্জন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, পাসপোর্ট অফিস, সাব রেজিস্ট্রি, ভূমি অফিস ও বিআরটিএ, পুলিশ বিভাগসহ ৪১টি সরকারি দফতরের ৭৮টি অভিযোগে গণশুনানির মুখোমখি হন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
গণশুনানিতে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফের সঞ্চালনায় জেলার ৪১টি সরকারি দফতরের সেবা প্রাপ্তিতে হয়রানির শিকার, ঘুষ দিতে বাধ্য,বঞ্চনার শিকার ইত্যাদি নানা বিষয়ে ৭৮ জন সেবাগ্রহিতারা তাদের অভিযোগের বিষয়গুলো তুলে ধরেন। তাৎক্ষণিকভাবে সেগুলোর সমাধান দেয়া হয়। এসব অভিযোগের পর্যালোচনা করে দেখা যায়, জেলার হাসপাতাল, বিআরটিএ, গণপূর্ত, খাদ্য অধিদফতর, পাসপোর্ট অফিস, জেলহাজত, পোস্ট অফিস ইত্যাদি সরকারি দফতরগুলোতে মানুষ বেশি হয়রানির শিকার হচ্ছে।
গণশুনানিতে সেবা প্রত্যাশী জনসাধারণ দৃঢতার সঙ্গে দুদকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে অভিযোগগুলো উত্থাপন করেন।
গণশুনানিতে উঠে আসে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতাল, সিভিল সার্জন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, সড়ক ও জনপথ বিভাগ, বিএডিসি অফিস, আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, বিআরটিএ, সাব-রেজিস্ট্রি অফিস, সহকারী কমিশনার (ভূমি), সমাজসেবা, রেলওয়ে, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর, জেলা কারাগার, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি, নির্বাচন অফিস, শিক্ষা অফিস, জেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ, ইউনিয়ন পরিষদ, প্রাণী সম্পদ অফিসসহ ৪১টি সরকারি দফতরের বিরুদ্ধে ৭৮টি অভিযোগ পাওয়া যায়। এর মধ্যে ৭২টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ শুনানির জন্য সেবাপ্রার্থী জনসাধারণ সরাসরি উপস্থাপন করেন। পরে পাঁচটি অভিযোগের বিষয়ে প্রাথমিক অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পাঁচটি অভিযোগের বিষয়ে তাৎক্ষণিক সমাধান দেয়া হয়। বিভিন্ন সরকারি দফতরের বিরুদ্ধে আনা চারটি অভিযোগের বিষয়ে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
দুই জন কর্মচারীকে বদলির জন্য তাদের দফতরকে নির্দেশ দেয়া হয়। এছাড়া, বাকি অভিযোগগুলোর বিষয়ে নির্দিষ্ট কার্যদিবসের মধ্যে গৃহীত পদক্ষেপের ওপর প্রতিবেদন দাখিলের জন্য স্ব-স্ব দফতরগুলোকে নির্দেশ দেয়া হয়।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফের সভাপতিত্বে ও সঞ্চালনায় এ গণশুনানিতে আরও বক্তব্য রাখেন দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন, রংপুর বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক মো.তালেবুর রহমান, পুলিশ সুপার আল আসাদ মো.মাহফুজুল ইসলাম ও কুড়িগ্রাম দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মোহাম্মদ সিরাজুল হক।
3 Attachments • Scanned by Gmail